পুরোনো ও ত্রুটিপূর্ণ মিশরীয় বিমান ভাড়ায় এনে সরকারের ৭৪১ কোটি টাকা ক্ষতিসাধনের মামলায় সাবেক বিচারপতি এ এফ এ মেসবাহ উদ্দিনসহ তিনজনের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার (১২ নভেম্বর) আসামিপক্ষের আবেদন মঞ্জুর করে ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ সাব্বির ফয়েজ এই আদেশ দেন। সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. রিয়াজ হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, গেল ৫ নভেম্বর বিচারপতি মেসবাহ ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কর্মকর্তাসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র আমলে গ্রহণ করেছেন আদালত। ওইদিন বিচারপতিসহ ৭ জন পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন বিচারক। এরপর আজ আদালতে এসে আইনজীবীর মাধ্যমে তিনজন জামিন আবেদন করেন। আদালত শুনানি শেষে জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন। জামিন পাওয়া অপর দুজন হলেন, পরিচালনা পর্ষদের সাবেক চেয়ারম্যান এয়ার মার্শাল জামাল উদ্দিন আহমেদ ও সাবেক পরিচালক ফজলে কবির। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারিকৃত অন্য আসামিরা হলেন, সাবেক পরিচালক খোরশেদ আলম চৌধুরী, সাবেক পরিচালক এয়ার ভাইস মার্শাল আবু এসরার, সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল আবুল হোসেন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইকবাল আহমেদ।
জামিনে থাকা আসামিরা হলেন—বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সাবেক পরিচালক (ফ্লাইট অপারেশন্স) ক্যাপ্টেন ইশরাত আহমেদ, সাবেক উপ-প্রধান প্রকৌশলী মো. শফিকুল আলম সিদ্দিক, সাবেক প্রিন্সিপাল ইঞ্জিনিয়ার দেবেশ চৌধুরী, সাবেক প্রিন্সিপাল ইঞ্জিনিয়ার শহীদ উদ্দিন মোহাম্মদ হানিফ, সাবেক এয়ারক্রাফট মেকানিক ও বর্তমান প্রকৌশলী কর্মকর্তা মো. সাদেকুল ইসলাম ভূঁইয়া, সাবেক উপপ্রধান প্রকৌশলী মো. শাহজাহান, ইঞ্জিনিয়ার অফিসার (অব.) মো. জাহিদ হোসেন, প্রিন্সিপাল সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার (স্ট্রাকচার) শরীফ রুহুল কুদ্দুস, প্রকৌশলী কর্মকর্তা হীরালাল চক্রবর্তী, প্রিন্সিপাল সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার অশোক কুমার সর্দার ও প্রকৌশলী কর্মকর্তা মো. লুৎফর রহমান।
২০২৩ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি দুদকের উপপরিচালক জেসমিন আক্তার বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলার অভিযোগপত্র সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালে পাঁচ বছরের চুক্তিতে ইজিপ্ট এয়ার থেকে বোয়িং ৭৭৭-২০০ ইআর উড়োজাহাজ দুটি লিজ নিয়েছিল বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে ফ্লাইট পরিচালনার পর একটির ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। উড়োজাহাজটি সচল রাখতে ইজিপ্ট এয়ার থেকেই ভাড়ায় আনা হয় আরেকটি ইঞ্জিন। দেড় বছরের মাথায় নষ্ট হয় বাকি ইঞ্জিনটিও। উড়োজাহাজটি সচল রাখতে ইজিপ্ট এয়ার থেকে ফের ভাড়ায় আনা হয় আরেকটি ইঞ্জিন। পরে ভাড়ায় আনা ইঞ্জিনও নষ্ট হয়ে যায়। সেই ইঞ্জিন মেরামত করতে যুক্তরাষ্ট্রের আরেকটি প্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয়। তবে তখন কোনো সময় নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়নি। সে কারণে ইজিপ্ট এয়ার এবং মেরামতকারী কোম্পানি উভয়কেই অর্থ দিতে হয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে। ফলে উড়োজাহাজ দুটির জন্য রাষ্ট্রের ক্ষতি হয় ৭৪১ কোটি টাকা।

2 hours ago
3








English (US) ·