আপনার সুখের পেছনে দায়ী যে রাসায়নিক

2 hours ago 5

মন খারাপ, অস্থিরতা বা ঘুমের সমস্যা, সবকিছুর সঙ্গেই জড়িত এক গুরুত্বপূর্ণ হরমোনের নাম - সেরোটোনিন। একে অনেকেই বলেন ‘হ্যাপিনেস হরমোন’ বা সুখের রাসায়নিক।

এটি মস্তিষ্ক, অন্ত্র ও রক্তে কাজ করে আমাদের মেজাজ, ক্ষুধা, ঘুম, এমনকি স্মৃতিশক্তি পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ করে।

সেরোটোনিন কীভাবে কাজ করে

সেরোটোনিন আসলে একটি নিউরোট্রান্সমিটার—অর্থাৎ মস্তিষ্কের কোষগুলোর মধ্যে বার্তা আদানপ্রদান করার রাসায়নিক মাধ্যম। যখন সেরোটোনিনের মাত্রা সঠিক থাকে, তখন মন থাকে শান্ত, ঘুম হয় ভালো, আর জীবনের ছোটখাটো আনন্দও স্পষ্টভাবে অনুভব করা যায়। কিন্তু সেরোটোনিন কমে গেলে দেখা দেয় বিষণ্নতা, উদ্বেগ, খিটখিটে মেজাজ বা ঘুমের সমস্যা।

হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, সেরোটোনিন মূলত অ্যামিনো অ্যাসিড ট্রিপটোফ্যান থেকে তৈরি হয়, যা কলা, ডিম, দুধ, বাদাম ও মাছের মতো খাবারে পাওয়া যায়। তাই পুষ্টিকর খাবার সেরোটোনিন উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করে।

সেরোটোনিনের ঘাটতি হলে কী হয়

সেরোটোনিনের ঘাটতিতে মানুষ সহজেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। বিষণ্নতা, উদ্বেগ, ঘুম না আসা, ক্ষুধামন্দা, এমনকি হজমের সমস্যাও দেখা দিতে পারে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মেন্টাল হেলথ (যুক্তরাষ্ট্র) জানায়, অনেক অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট ওষুধ সেরোটোনিনের মাত্রা বাড়াতে কাজ করে ।

আপনার সুখের পেছনে দায়ী যে রাসায়নিক

সেরোটোনিন ও ঘুমের সম্পর্ক

এই হরমোন ঘুম নিয়ন্ত্রণেও বড় ভূমিকা রাখে। রাতে সেরোটোনিন থেকে তৈরি হয় মেলাটোনিন, যা শরীরকে ঘুমের সংকেত দেয়। তাই দিনে পর্যাপ্ত আলো পাওয়া, নিয়মিত ঘুমের সময় মেনে চলা এবং রাতে অন্ধকার ঘরে ঘুমানো—সবই সেরোটোনিনের ছন্দ ঠিক রাখতে সাহায্য করে।

সেরোটোনিন বাড়ানোর প্রাকৃতিক উপায়

১. রোদে ১৫–২০ মিনিট হাঁটুন, সূর্যালোক সেরোটোনিন বাড়ায়।
২. ব্যায়াম করুন, বিশেষ করে দৌড়ানো বা যোগব্যায়াম।
৩. পুষ্টিকর খাবার খান—ডিম, কলা, দুধ, বাদাম ও মাছ।
৪. ঘুমের রুটিন ঠিক রাখুন।
৫. সামাজিক যোগাযোগ ও ইতিবাচক কথা বলাও সেরোটোনিন বাড়ায়।

সেরোটোনিন বেশি হলে কী হয়

অতিরিক্ত সেরোটোনিনও ক্ষতিকর। খুব বেশি মাত্রায় এটি সেরোটোনিন সিন্ড্রোম তৈরি করতে পারে, যাতে ঘাম, মাথা ঘোরা বা বমি বমি ভাব দেখা দেয়। তাই ওষুধের মাত্রা বা সাপ্লিমেন্ট নেওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ প্রয়োজন।

সূত্র: হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুল, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মেন্টাল হেলথ (যুক্তরাষ্ট্র), আমেরিকান সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (এপিএ)

এএমপি/এমএস

Read Entire Article