বাইরে বের হওয়ার আগে অনেকের জন্য সুগন্ধি ব্যবহার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মনকে সতেজ রাখার কাজটি সুগন্ধিই করে। সুগন্ধি ব্যবহার করলে ইতিবাচক অনুভূতি এবং আত্মবিশ্বাসও বাড়ে। এটা ছাড়া সাজ বা সজীবতা কখনও পরিপূর্ণ হয় না।
তবে ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সুগন্ধিও পরিবর্তন করা উচিত। শরীরের তাপমাত্রা ও ত্বকের রাসায়নিক বিক্রিয়ার ওপর ভিত্তি করে সুগন্ধি ভিন্নভাবে কাজ করে। তাই জানতে হবে হেমন্তে কোন ধরনের সুগন্ধি ব্যবহার করলে ঘ্রাণ বেশি ছড়াবে এবং দীর্ঘ সময় ধরে থাকবে।
হেমন্তের সুগন্ধি
হেমন্তকালে সাধারণত মিষ্টি ও উষ্ণ গন্ধযুক্ত সুগন্ধি ব্যবহার করা হয়। এছাড়া শীতের আমেজ শুরু হওয়ার সঙ্গে হালকা মিষ্টি সুগন্ধি ব্যবহার করা যেতে পারে, যা আরামদায়ক এবং উষ্ণ অনুভূতি প্রদান করবে।
উপযুক্ত সুগন্ধি নির্বাচন
প্রতিটি সুগন্ধিতে মূলত তিনটি স্তর থাকে-টপ নোট, মিডল নোট এবং বেইস নোট। এর মধ্যে বেইস নোট সবচেয়ে ভারী ও দৃঢ় হয়। অর্থাৎ পুরো সুগন্ধির সবচেয়ে শক্তিশালী ঘ্রাণ আসে বেইস নোট থেকে।
হেমন্তে এমন সুগন্ধি বেছে নিন যার বেইস নোট শক্তিশালী, ভারী ও স্থায়ী। এই সময়ে এমন সুগন্ধি নির্বাচন করা ভালো যা শরীরের তাপমাত্রায় স্থির থাকে এবং দীর্ঘসময় ধরে ঘ্রাণ ছড়ায়। ভ্যানিলা, চন্দন, পাচৌলি ইত্যাদি বেইস নোট হিসেবে ভালো বিকল্প হতে পারে।
হেমন্তে কী কী উপাদানের সুগন্ধি ব্যবহার করবেন -
১. উষ্ণ মসলাদার গন্ধ
হেমন্তে দারুচিনি, এলাচ, লবঙ্গ, জায়ফলের মতো মসলাদার গন্ধ হেমন্তের আবহাওয়ার সঙ্গে খুব ভালোভাবে মানিয়ে যায়। এই সুগন্ধি শুধু ঘ্রাণে আরাম দেয় না বরং উষ্ণ অনুভূতিও দেয়।

২. কাঠের গন্ধের সুগন্ধি
হেমন্তে চন্দন, সিডারউড বা ওক কাঠের গন্ধ খুব জনপ্রিয়। যারা প্রকৃতি ও গাছ ভালোবাসেন তাদের জন্য এই ধরনের সুগন্ধি মানানসই। এগুলো ত্বকের সঙ্গে মিশে দীর্ঘসময় ধরে থাকে, যা হেমন্তের আবহাওয়ার জন্য আদর্শ।
৩. মাটির গন্ধ বা ওক নোটস
মাটির ঘ্রাণের নরম ছোঁয়া, ওক নোটসের সমৃদ্ধি এবং হেমন্তের ঝরা পাতার কোমল সুবাস, প্রকৃতির গভীর অনুভূতি জাগায়। এই গন্ধে লুকিয়ে আছে রহস্য এবং মনোমুগ্ধকরতার ছোঁয়া। তাই চাইলে এমন সুগন্ধি ব্যবহার করতে পারেন।

৪. ভ্যানিলা, ফুল ও ফলের হালকা গন্ধ
ভ্যানিলা এবং ফুলের সুবাস সারাদিন হালকা ও সতেজ অনুভূতি দেয়। যারা ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করেন তারা সাইট্রাস ফলের তাজা নির্যাস ব্যবহার করতে পারেন।
কীভাবে ব্যবহার করবেন
বাইরে বের হওয়ার ২০ মিনিট আগে সুগন্ধি ব্যবহার করা ভালো। মেকআপ করার পর কানের পেছনে, হাতের কবজি বা ঘাড়ের মতো উষ্ণ জায়গায় সুগন্ধি ব্যবহার করুন। এই জায়গাগুলোতে রক্ত প্রবাহ বেশি থাকার কারণে সুগন্ধি দীর্ঘ সময় ছড়ায়। ফলে সারাদিনই সুরভিত থাকা যায়।
অতিরিক্ত টিপস
১. গোসলের সময় রোমকূপ খুলে থাকে। এই সময় সুগন্ধি ব্যবহার করলে তা রোমকূপ অনেকটা টেনে নেয়। ফলে সুগন্ধি অনেকক্ষণ ধরে থাকে।

২. সুগন্ধি দেওয়ার আগে হাতে ও পায়ে সুগন্ধি দেওয়ার আগে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। এতে ত্বক খসখসে থাকার বদলে মসৃণ ও নরম থাকে। এছাড়া ময়েশ্চারাইজার সুগন্ধি অনেক সময় ধরে ত্বকে ধরে রাখে।
সুগন্ধি হলো প্রাচীনতম প্রসাধন সামগ্রী। এটি আভিজাত্য ও রুচির একটি সুন্দর মেলবন্ধন তৈরি করে। তাই বুঝেশুনে সঠিক সুগন্ধি ব্যবহার করা উচিত। সঠিক সময়ে ও আবহাওয়ার সঙ্গে মানানসই সুগন্ধি ব্যবহার করলে আপনার ব্যক্তিত্ব ও আভিজাত্যকে নিয়ে যেতে পারে অনন্য উচ্চতায়।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া, হিন্দুস্তান টাইমস
আরও পড়ুন
উটের দুধের সাবান কি ত্বকের জন্য উপকারী
রূপচর্চায় শাপলার ব্যবহার
এসএকেওয়াই/জেআইএম

14 hours ago
4









English (US) ·