আরও ক্ষমতাধর হচ্ছেন সেনাপ্রধান, ক্ষমতা কমছে সুপ্রিম কোর্টের

1 day ago 5

পাকিস্তানে পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষে সোমবার পাস হয়েছে বিতর্কিত ২৭তম সংবিধান সংশোধনী বিল। এই সংশোধনীর মাধ্যমে দেশটির সেনাপ্রধানের ক্ষমতা আরও বাড়ছে। অপরদিকে এই সাংবিধানিক পরিবর্তনের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা সীমিত করা হবে। বিরোধীরা বলছেন, এই পদক্ষেপ গণতন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। খবর রয়টার্সের।

ঐতিহাসিকভাবেই অভ্যুত্থানপ্রবণ পাকিস্তানে এবার নির্বাচিত সরকারের দীর্ঘ শাসন চলছে। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সেনাবাহিনী ক্ষমতার বলয় আরও শক্ত করে ধরে রেখেছে। বিরোধী দল বয়কট করার পর অস্বাভাবিক দ্রুতগতিতে সোমবার সিনেটে প্রায় তিন ঘন্টার মধ্যেই পাস হওয়া বিলটি এখন আইনে পরিণত হওয়ার আগে নিম্নকক্ষে যাবে। নিম্নকক্ষে পাস হলেই এটি আইনে পরিণত হবে।

সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রিয়ভাজন হয়ে উঠেছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির। ট্রাম্পের ‘প্রিয় ফিল্ড মার্শাল’ হিসেবে অভিহিত এই সেনাপ্রধান প্রস্তাবিত সংশোধনীর অধীনে প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধানের নতুন পদের মাধ্যমে বিমান ও নৌবাহিনীসহ সামরিক বাহিনীর সামগ্রিক কমান্ড গ্রহণ করবেন। মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও তার পদমর্যাদা বজায় থাকবে এবং আজীবন বিশেষ নিরাপত্তা পাবেন।

যদিও পাকিস্তানের সেনাবাহিনী দীর্ঘদিন ধরেই ব্যাপকহারে ক্ষমতাও অপব্যবহার করে আসছে। কিন্তু এই সংস্কারের মাধ্যমে এবার তারা সাংবিধানিকভাবেও সমর্থন পাবেন যা পাল্টানো যাবে না। এতদিন সেনাপ্রধান ছিলেন বিমান বাহিনী এবং নৌবাহিনী প্রধানদের সমতুল্য। তার উপরে ছিলেন জয়েন্ট চিফ অব স্টাফ চেয়ারম্যানের একটি পদ। সেটি এখন বাতিল করা হবে।

সাংবিধানিক মামলাগুলোর শুনানি আর সুপ্রিম কোর্টে হবে না বরং একটি নতুন ফেডারেল সাংবিধানিক আদালতে এসব মামলার শুনানি হবে যেখানে সরকার বিচারকদের নিয়োগ করবে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সুপ্রিম কোর্ট মাঝে মাঝে সরকারি নীতিমালা অবরুদ্ধ করেছে এবং প্রধানমন্ত্রীদেরও ক্ষমতাচ্যুত করেছে।

সমালোচকরা বলছেন, এখন থেকে নির্বাচিত বিচারকরা সরকারকে প্রভাবিত করে এমন রাজনৈতিকভাবে সংবেদনশীল মামলাগুলোর শুনানি করবেন, যেখানে সুপ্রিম কোর্ট দেওয়ানি ও ফৌজদারি মামলাগুলো পরিচালনা করবে।

এই সংবিধান সংস্কারের অধীনে প্রেসিডেন্ট আসিফ জারদারি আজীবনের জন্য মামলা থেকে অব্যাহতি পাবেন। গত মে মাসে ভারতের সঙ্গে সংঘর্ষের কথা উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার বলেন, শাসনব্যবস্থা এবং প্রদেশগুলোর সঙ্গে ফেডারেল সরকারের সমন্বয় এবং যুদ্ধে জয়লাভের পর প্রতিরক্ষা সক্ষমতা জোরদার করার জন্য করা এসব সংশোধনী আনা হচ্ছে।

পাকিস্তান সরকার জানিয়েছে, সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় তারা সাংবিধানিক পরিবর্তনগুলোর অনুমোদের জন্য আত্মবিশ্বাসী। সিনেট এবং জাতীয় পরিষদ নিয়ে গঠিত পার্লামেন্টের উভয়কক্ষেই এই সংশোধনী পাস হতে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রয়োজন।

এদিকে বর্তমানে কারাভোগ করা পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান প্রতিষ্ঠিত দেশটির বৃহত্তম বিরোধী দল পাকিস্তান তেহেরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) বলছে, তাদের সঙ্গে সংবিধান সংশোধনের বিষয়ে কোনো পরামর্শ করা হয়নি।

টিটিএন

Read Entire Article