ওসমানী হাসপাতালে ঘাটে ঘাটে দুর্ভোগ-হয়রানি

19 hours ago 5

* ৫০০ শয্যার জনবলে চলছে ৯০০ শয্যার হাসপাতাল
* প্রতিদিন রোগী ভর্তি থাকেন ৩০০০
* দশ তলা ভবনে লিফট মাত্র দুইটি
* সবাই শুধু ফেসবুকে লেখে, লিখিত অভিযোগ দেয় না

ছোট্ট একটি বিষফোঁড়ার চিকিৎসা থেকে শুরু করে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণেও অসহায় ও অসচ্ছল রোগীদের একমাত্র ভরসা সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। সিলেট বিভাগের সবচেয়ে বড় এই সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানটি সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকায় অবস্থিত হলেও নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রোগীরাও আসেন এখানে চিকিৎসা নিতে। সবমিলিয়ে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মানুষের ভরসার জায়গা এই হাসপাতাল।

কিন্তু এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে রোগী ও তার স্বজনদের যে হয়রানি, দুর্ভোগ ও বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়- তা এক কথায় অবর্ণনীয়। হাসপাতালে প্রবেশের পর থেকে ঘাটে ঘাটে দুর্ভোগ ও ভোগান্তি পোহাতে হয় সেবাপ্রত্যাশীদের।

বলা যায়- এখানে রোগীরা মরতে মরতে বেঁচে যায়। একজনের অভিজ্ঞতার গল্প হার মানায় আরেকজনকে। এ যেন দুর্ভোগ-হয়রানির স্বর্গরাজ্য।

‘দিনের বেলা এই লিফটে রোগী বহন করতে পারা যেন আকাশের চাঁদ হাতে পাওয়া। তিন তলায় পুরাতন ভবনের সংযোগ স্থলে রোগী নিয়ে ওঠার কোনো সুযোগই থাকে না। কারণ নিচ তলা থেকেই লিফট পূর্ণ হয়ে আসে।’

সবচেয়ে অবাক হওয়ার মতো তথ্য হলো- এই হাসপাতালের চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে যার পদ যত নিচে, তার ‘ক্ষমতা’ ততো বেশি।

আরও পড়ুন-
বিনামূল্যে চিকিৎসা নিতে এসে হয়রানির সাগরে পড়েন রোগীরা
দালাল-চোরের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ রোগী-চিকিৎসক

অবশ্য ৫০০ শয্যার জনবল দিয়ে ৯০০ শয্যার হাসপাতাল চালাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকেও। প্রতিদিন গড়ে ৩ হাজার রোগী ভর্তি থাকেন। এর বাইরে কয়েক হাজার রোগী বহির্বিভাগে চিকিৎসা নেন। এতে করে রোগী ও রোগীর স্বজনদের চাপ সামলাতে প্রতিনিয়ত হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। তবুও চিকিৎসকদের আন্তরিকতায় ভালোমানের চিকিৎসাও হচ্ছে এখানে। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে মানুষের পেট থেকে জীবিত কুঁচিয়া বের করার সুনামও রয়েছে এই হাসপাতালের চিকিৎসকদের। যার কারণেই পদে পদে হয়রানি জেনেও এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন রোগীরা।

ওসমানী হাসপাতালে ঘাটে ঘাটে দুর্ভোগ-হয়রানি

হয়রানি ও দুর্ভোগের গল্প শুরু যেখানে

সিলেট নগরীর বাগবাড়ি এলাকার বাসিন্দা ইফতেখার হোসেন ২৫ আগস্ট রাত ৯টার দিকে তার মাকে মুমূর্ষু অবস্থায় নিয়ে যান সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে যাওয়ার পর তাকে বলা হয় আইসিইউ সাপোর্ট লাগবে। কিন্তু সেখানে আইসিইউ না থাকায় দ্রুত নিয়ে আসেন সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এখানে আসার পর শুরু হয় ভোগান্তির পালা। প্রথমেই জরুরি বিভাগের সামনে ট্রলি না পেয়ে কোলে করে মাকে নিয়ে যান কর্তব্যরত চিকিৎসকের কাছে। কিন্তু রোগীর রেজিস্ট্রেশন না থাকায় ওই চিকিৎসক আগে রেজিস্ট্রেশন করতে বলেন। বাধ্য হয়ে মুমূর্ষু মাকে রেখে অন্তত ১৫-২০ মিনিট লাইনে দাঁড়িয়ে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করেন। এরপর চিকিৎসক রোগীকে দেখে ভর্তি দেন। পরে আবার কাউন্টার থেকে ভর্তি ফি দিয়ে চিকিৎসকের কাছে এলে তিনি হাসপাতালের নতুন ভবনের ৭তলার ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তির জন্য পাঠান। এরইমধ্যে অনেক কাকুতি-মিনতি করে কোনোমতে একটা ট্রলি ম্যানেজ করে মাকে নিয়ে রওয়ানা দেন নতুন ভবনের দিকে।

‘কেউ লিখিত অভিযোগ দেয় না, শুধু ফেসবুকে দেয়। এতে হয়রানি যতটা হয়, তার চেয়ে বেশি প্রচার হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ছাড়াও ডিজি অফিসের হটলাইনে কল করে অভিযোগ দিতে পারেন। কেউ অভিযোগ দেয় না, চিন্তা করে হাসপাতাল থেকে কোনোমতে চলে যাই। সমস্যা অনেক গভীরে। ফেসবুকে লিখে সমাধান হবে না। বরং কেউ হেয় প্রতিপন্ন হবে। মানুষের কোনো লাভ হবে না।’

কিন্তু রোগী নিয়ে নতুন ভবনে যাওয়া তখন তার কাছে এভারেস্টের চূড়ার মতো মনে হয়েছে। কারণ রোগীকে নিয়ে নতুন ভবনে যেতে প্রথমে রওনা দিতে হয় পুরাতন ভবনের ভেতর দিয়ে। পরে লিফটে করে যেতে হয় তিন তলায়। পুরাতন ভবনের তিনতলায় উঠে আবার লিফট থেকে নেমে নতুন ভবনের সংযোগস্থল দিয়ে ট্রলি টেনে যেতে হয় নতুন ভবনের তৃতীয় তলায়। তার পর আবার সেখানে গিয়ে অন্তত ২০-২৫ মিনিট অপেক্ষার পর কপাট খুলে লিফটের। কিন্তু লিফটভর্তি মানুষ থাকায় প্রথম দফায় ওপরে উঠতে পারেননি। পরের দফায় মানুষের সাহায্য নিয়ে রোগী নিয়ে ওঠেন ৭ তলায়।

আরও পড়ুন-
সোহরাওয়ার্দীতে দালালের দৌরাত্ম্য, ট্রলি-শয্যা পেতে হাজার টাকা ঘুষ
হৃদরোগ হাসপাতালে দানের মেশিনে ‘মধু’

জরুরি বিভাগ থেকে সব ধাপ পেরিয়ে অন্তত ৫০-৫৫ মিনিট পর ইফতেখার তার মাকে নিয়ে যান নতুন ভবনের ৭ তলায়। সেখানে গিয়ে আবার দেখেন চিকিৎসক নেই। আরও প্রায় ২০ মিনিট পর একজন শিক্ষানবিশ চিকিৎসক এসে রোগীর হিস্ট্রি লিখতে শুরু করেন। পরে আইসিইউতে বেডের জন্য আবেদন নিয়ে যান ইফতেখার। ভ্যাগ্যক্রমে একটি শয্যা পেয়ে আবার রোগীকে নিয়ে ভোগান্তির সেই একই পথ ধরে পুরাতন ভবনের আইসিইউতে রোগীকে নিয়ে যান।

তারপর মাকে নিয়ে ইফতেখারের ১০ দিন কেটেছে হাসপাতালে। ওই সময়ে ইফতেখারের অভিজ্ঞতার ঝুলিতে জমা হয়েছে ভোগান্তির হরেক রকমের গল্প। যে তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরতে হয়েছে সেটি হয়ত কখনো ভুলবেন না ইফতেখার।

এ তো ছিল এক ইফতেখারের গল্প। এরকম শত শত ইফতেখারকে ওসমানী হাসপাতালে এসে শত শত ভোগান্তির গল্প নিয়ে ফিরতে হচ্ছে বাড়িতে। হাসপাতালে সেবা নিতে এসে মানুষজনকে যে রকম তিক্ত অভিজ্ঞতার শিকার হতে হয়, সেটি মনে রাখলে আর কারো এই হাসপাতালে পা ফেলার কথা না। কিন্তু শুধুমাত্র ভালো মানের চিকিৎসকের সেবা পেতে বারবারই ফিরে আসেন সেই দুর্ভোগ-ভোগান্তির ঘাঁটিতে।

হাসপাতাল ঘুরে যেতে হয় জরুরি বিভাগে

হাসপাতালের মূল ফটক থেকে পুরাতন ভবনের দূরত্ব ৩০-৪০ মিটার। আর নতুন ১০তলা ভবনের দূরত্বও আরও কাছে। অথচ একজন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হতে হলে অন্তত ৫০০ মিটার ভেতরে গিয়ে যেতে হয় জরুরি বিভাগে। সেখান থেকে আবার শত ভোগান্তি পেরিয়ে আসতে হয় ১০তলা ভবনে। আবার কাউকে যেতে হয় পুরাতন ৫তলা ভবনের বিভিন্ন ওয়ার্ডে।

ওসমানী হাসপাতালে ঘাটে ঘাটে দুর্ভোগ-হয়রানি

তাছাড়াও ‘নিরাপত্তার অজুহাতে’ পুরাতন ভবনের সামনের সবকটি গেট বন্ধ থাকে। এতে চরম বিপাকে পড়তে হয় রোগীদের।

জানা গেছে, ২০০৬ সালের ৮ অক্টোবর হাসপাতালের পেছনের অংশে দুইতলা ভবনে আইসিইউ ও ক্যাজুয়ালিটি ইউনিট উদ্বোধন করেন সাবেক প্রয়াত অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম সাইফুর রহমান। পরবর্তীতে ২০১৪ সালের ২৭ ডিসেম্বর ওই ইউনিটের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ নাসিম। তখনও পুরাতন ভবনের পশ্চিমপাশে জরুরি বিভাগের কার্যক্রম চলতো।

পরবর্তীতে ২০১৭ সালের ১ আগস্ট ওই ভবনের নিচতলাতেই জরুরি বিভাগ স্থানান্তর করেন হাসপাতালের তৎকালীন পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল ডা. এ কে মাহবুবুল হক। বর্তমানে এখানেই চলছে জরুরি বিভাগের কার্যক্রম।

আরও পড়ুন-
একাধিকবার মেয়াদ বাড়ানোর পরও শেষ হয়নি নির্মাণ কাজ
বিশ্বমানের হবে পাবনা মানসিক হাসপাতাল, বিদেশিদের পড়াশোনার সুযোগ

এ বিষয়ে হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. মাহবুবুল আলম বলেন, ‘হাসপাতালের জরুরি বিভাগ কি কখনও হাসপাতালের ভেতরে হয়। আজ থেকে ১৫ বছর আগে যারা এটি তৈরি করেছেন, কী বুঝে তৈরি করেছেন। তাদেরকে এই উত্তরটা দেওয়া উচিত।’

তিনি বলেন, ‘আমি চাইলেও এটা পরিবর্তন করতে পারবো না। কোথাও কোনো জায়গা নেই, আমরা কোথায় পরিবর্তন করবো। ১০তলা ভবনের নিচে আউটডোর, আর ক্যানসার ভবনের নিচে রেডিওলজি বিভাগ। ইমার্জেন্সি নেবো কোথায়।’

রোগীদের নিয়ে ভোগান্তি নিরসনে করণীয় কী এমন প্রশ্নের জবাবে উল্টো তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন-‘আপনারা আমাকে বলেন জরুরি বিভাগ কোথায় নেবো।’

লিফট তো নয় যেন সোনার হরিণ

হাসপাতালের ১০তলা ভবনে বহির্বিভাগ, ওয়ার্ড ও আইসিইউ বিভাগ রয়েছে। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসেন হাজারো সেবাপ্রত্যাশী। তার বাইরে ভর্তি রোগী আরও কয়েকশো। সব মিলিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষের ওঠানামা ১০তলা ভবনের বিভিন্ন তলায়। এতসব মানুষের চলাচলের বিপরীতে লিফট মাত্র দুইটি। এতে করে লিফট পেতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয় সেবাপ্রত্যাশীদের। বিশেষ করে দিনের বেলায় লিফটে জায়গা পাওয়া যেন সোনার হরিণ।

সরেজমিনে দেখা গেছে- লিফটের কারণে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েন ট্রলি-হুইল চেয়ারবাহী রোগীরা। তাছাড়াও ভর্তি রোগীরা বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করাতে গিয়ে দুর্ভোগে পড়েন। এমনকি এক পর্যায়ে দেখা গেলো ট্রলি সংকটে ওষুধের কার্টনভর্তি একটি ট্রলির ওপরই রোগীকে শুইয়ে বহন করা হচ্ছে।

ওসমানী হাসপাতালে ঘাটে ঘাটে দুর্ভোগ-হয়রানি

হাসপাতালে ভর্তি ও বহির্বিভাগে সেবা নিতে আসা সকল রোগীদের পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয় পুরাতন ভবনে। এতে করে নতুন ভবনের সকল রোগীকে যেতে হয় পুরাতন ভবনে।

হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ভুক্তভোগী ফয়েজ আহমদ বলেন, দিনের বেলা এই লিফটে রোগী বহন করতে পারা যেন আকাশের চাঁদ হাতে পাওয়া। তিন তলায় পুরাতন ভবনের সংযোগ স্থলে রোগী নিয়ে ওঠার কোনো সুযোগই থাকে না। কারণ নিচতলা থেকেই লিফট পূর্ণ হয়ে আসে।

পুরাতন ভবন থেকে নতুন ভবনে নেওয়া ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে যাওয়া রোগীদের জন্য অন্তত একটা লিফটকে সংরক্ষিত করার দাবি জানান তিনি।

হাসপাতালের নতুন ভবনের ৮ তলায় চিকিৎসাধীন এক রোগীর স্বজন আব্দুল হাসিব বলেন, লিফটে রোগীরাই জায়গা পায় না। দর্শনার্থীরা হেঁটে ওঠা ছাড়া বিকল্প নেই।

হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. মাহবুবুল আলম বলেন, ১০তলা ভবনের জন্য দুইটা লিফট যথেষ্ট কি না তা ভবন নির্মাণের আগেই সমীক্ষা করা উচিত ছিল। লিফটের সমস্যার সঠিক উত্তরটা তারাই দিতে পারবেন, যারা এটা নির্মাণের সময় দায়িত্বে ছিলেন। আমরা শুধু সার্ভিস দেবো এবং প্রয়োজনে বলবো এটা ঠিক করে দেন।

তিনি বলেন, আমরা তিন বছর আগেই লিফটের জন্য গণপূর্ত বিভাগকে রিকুইজিশন দিয়েছি। তারা বলেছে আমাদের দুইটা ক্যাপসুল লিফট দিবে। এরপর আর কোনো অগ্রগতি নেই। তারা না দিলে আমরা পাবো কীভাবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা জানপ্রাণ দিয়ে চেষ্টা করছি। কিন্তু কোনো লাভ হচ্ছে না। কারণ কেউ শুনছে না আমাদের কথা।

গণপূর্ত বিভাগের সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু জাফর বলেন, হাসপাতালকে লিফট দেওয়ার দায়িত্ব গণপূর্ত বিভাগের নয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের কাছে দুইটি ক্যাপসুল লিফটের জন্য রিকুজিশন দিয়েছে। আমরা সেটি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে পাঠিয়েছি। এখন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বরাদ্দ না দিলে আমাদের কিছু করার নেই। আমরা বরাদ্দ পেলে কাজটা করে দেবো।

রোগী বনাম জনবল, হিমশিম কর্তৃপক্ষ

হাসপাতালটি ৯০০ শয্যার হাসপাতাল। কিন্তু জনবল আছে ৫০০ শয্যার। অথচ এখানে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে তিন-চারগুণ বেশি রোগী থাকে। প্রতিদিন প্রায় ৩ হাজার রোগী ভর্তি থাকেন। এর বাইরে প্রতিদিন হাজারো রোগী বহির্বিভাগে চিকিৎসা নেন।

হাসপাতাল প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালে চিকিৎসকের অনুমোদিত পদ রয়েছে ৩৫৮টি, নার্স ৮৭৪ এবং তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের পদ রয়েছে ৬০৮টি। এর বিপরীতে চিকিৎসক কর্মরত রয়েছেন ২৯৮ জন, নার্স ৭৭৭ জন ও কর্মচারী ৩০৬ জন। সে হিসেবে চিকিৎসকের পদ শূন্য রয়েছে ৬০টি, নার্স ৯৭টি, ও কর্মচারীর ৩০২টি।

ওসমানী হাসপাতালে ঘাটে ঘাটে দুর্ভোগ-হয়রানি

অনুমোদিত পদের বাইরে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে ২৬২ জন কর্মচারী হাসপাতালে নিয়োজিত রয়েছে। তবুও চাহিদার তুলনায় জনবল প্রায় অর্ধেক।

হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. মাহবুব বলেন, চাহিদার তুলনায় অপর্যাপ্ত জনবল দিয়ে আমরা সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। একটা লেভেল পর্যন্ত হাসপাতালের সেবাটা ভালো হচ্ছে। কিন্তু দু’একজন হয়রানি করছে সেটা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। কিন্তু আমরা ধরতে পারছি না।

তিনি বলেন, আমরা একেবারে হার্ডলাইনে। যদি কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়, তাহলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা। কিন্তু আজ পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ দেননি।

ডা. মাহবুব বলেন, কেউ লিখিত অভিযোগ দেয় না, শুধু ফেসবুকে দেয়। এতে হয়রানি যতটা হয়, তার চেয়ে বেশি প্রচার হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ছাড়াও ডিজি অফিসের হটলাইনে কল করে অভিযোগ দিতে পারেন। কেউ অভিযোগ দেয় না, চিন্তা করে হাসপাতাল থেকে কোনোমতে চলে যাই। সমস্যা অনেক গভীরে। ফেসবুকে লিখে সমাধান হবে না। বরং কেউ হেয় প্রতিপন্ন হবে। মানুষের কোনো লাভ হবে না।

উপপরিচালক মাহবুব বলেন, আমিতো মনে করি যে অবস্থা, তাতে কলাপস (ধ্বংস) হয়ে যাওয়ার কথা। তাই এই প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কার দেওয়া দরকার।

এফএ/জেআইএম

Read Entire Article