কিশোর ক্রিকেটারের মৃত্যুতে শোকভারাক্রান্ত ভারত–অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ

7 hours ago 8
ক্রিকেটের জগতে কখনও কখনও এক একটি ঘটনা মনে করিয়ে দেয়—এই খেলাটা শুধু প্রতিযোগিতা নয়, এটি গভীর মানবিক অনুভূতিরও নাম। মেলবোর্নের এক অনুশীলন নেটে ঘটে যাওয়া এক দুর্ঘটনা কাঁপিয়ে দিয়েছে গোটা ক্রিকেট বিশ্বকে। অকালেই চলে গেছেন অস্ট্রেলিয়ার কিশোর ক্রিকেটার বেন অস্টিন, আর সেই তরুণ প্রতিভার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বৃহস্পতিবার আইসিসি নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটাররা নেমেছিলেন কালো বাহুবন্ধন পরে। নাভি মুম্বাইয়ের ডঃ ডি. ওয়াই. পাটিল স্পোর্টস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে দুই দলের খেলোয়াড়দের বাহুতে কালো ফিতা ছিল শোকের প্রতীক। ম্যাচ শুরুর আগে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়, মাঠজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে নীরব শ্রদ্ধার আবহ। বেন অস্টিনের পরিবার এক আবেগঘন বিবৃতিতে জানিয়েছে, “আমরা আমাদের সোনার ছেলে বেনকে হারিয়ে ভেঙে পড়েছি। সে শুধু একজন পুত্র নয়, ছিল এক আদরের ভাই, এক উজ্জ্বল আলো, যাকে সবাই ভালোবাসত।” অস্টিন পরিবারের আরেকটি অংশে ছিল মর্মস্পর্শী বেদনা আর মানবিকতার বার্তা— “বেন ক্রিকেটকে প্রাণ দিয়ে ভালোবাসত। আমরা সামান্য সান্ত্বনা পাই এই ভেবে যে, সে শেষ মুহূর্তেও নিজের ভালোবাসার খেলা নিয়েই ব্যস্ত ছিল—বন্ধুদের সঙ্গে নেটে অনুশীলনে যাচ্ছিল। আমরা সেই তরুণ বলার প্রতিও সমবেদনা জানাই, যে দুর্ঘটনার সময় বল করছিল। এই ট্র্যাজেডি দু’জন তরুণের জীবনকেই বদলে দিয়েছে।” ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাহী টড গ্রিনবার্গ এই ঘটনাকে বর্ণনা করেছেন “ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে হৃদয়বিদারক মুহূর্তগুলোর একটি” হিসেবে। তিনি বলেন, “এক তরুণ ক্রিকেটারের মৃত্যু, যে খেলা অনুশীলন করতে গিয়ে জীবন হারাল—এটা এক অকল্পনীয় ক্ষতি। ক্রিকেট পরিবারের পক্ষ থেকে আমরা বেনের পরিবার, বন্ধু এবং সতীর্থদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই।” গ্রিনবার্গ আরও জানান, আগামীকাল মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিতব্য টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে বেন অস্টিনের প্রতি আনুষ্ঠানিক শ্রদ্ধা জানানো হবে। এদিকে, ক্রিকেট ভিক্টোরিয়া এবং পুরো অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট সম্প্রদায় ইতোমধ্যেই অস্টিন পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে, মানসিক সহায়তা দিচ্ছে বেনের সতীর্থ ও স্কুলসঙ্গীদের। এক তরুণের চলে যাওয়া থামিয়ে দিতে পারেনি ক্রিকেটকে, কিন্তু মনে করিয়ে দিয়েছে—প্রতি বলের আড়ালেও লুকিয়ে থাকে জীবনের নরমতম অনুভূতি। আজকের এই শ্রদ্ধা হয়তো বেন অস্টিনকে ফিরিয়ে আনতে পারবে না, কিন্তু ক্রিকেটের প্রতি তার ভালোবাসা ছড়িয়ে যাবে আরও দূরে, আরও গভীরে।
Read Entire Article