যুক্তরাষ্ট্র ক্যারিবীয় সাগরে বিশ্বের বৃহত্তম রণতরী মোতায়েনের পর দেশটির বিরুদ্ধে বানোয়াট ‘যুদ্ধাবস্থা’ তৈরির অভিযোগ করেছেন ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো।
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ গত শুক্রবার ভূমধ্যসাগরে থাকা জেরাল্ড আর ফোর্ড রণতরীকে অগ্রসর হওয়ার নির্দেশ দেন। এটি ৯০টি পর্যন্ত যুদ্ধবিমান বহন করতে পারে।
‘তারা একটি নতুন চিরস্থায়ী যুদ্ধের বাহানা তৈরি করছে,’ রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন মাদুরো। তিনি বলেন, তারা আর কখনো যুদ্ধে জড়াবে না অঙ্গীকার করেছিল এবং তারা এখন বানোয়াট যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করছে।
আরও পড়ুন>>
সিআইএকে ভেনেজুয়েলায় অভিযানের অনুমোদন দিয়েছেন ট্রাম্প
ক্যারিবীয় সাগরে ফের ‘মাদকবাহী নৌকা’ লক্ষ্য করে মার্কিন হামলা
যুক্তরাষ্ট্রকে মোকাবিলায় ৫০০০ রুশ মিসাইল মোতায়েন করেছেন মাদুরো
শান্তি নয়, রাজনৈতিক কারণেই নোবেল পেলেন ‘যুদ্ধবাজ’ মাচাদো?
রণতরী বা যুদ্ধজাহাজ, পারমাণবিক সাবমেরিন ও এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান পাঠানোর মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ক্যারিবীয় অঞ্চলে নিজেদের সামরিক উপস্থিতি বাড়াচ্ছে। দেশটি বলছে, তাদের অভিযানের লক্ষ্য মাদক পাচারকারীরা।
পাচারকারীদের লক্ষ্য করে বিমান হামলার কথাও জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
হেগসেথ বলেছেন, ক্যারিবীয় সাগরে শুক্রবার হামলায় ছয়জন ‘পুরুষ মাদক-সন্ত্রাসী নিহত’ হয়েছে। তিনি বলেছেন, যে জাহাজে হামলা করা হয়েছে সেটি ত্রেন দে আরাগুয়া নামে একটি অপরাধমূলক সংগঠনের।
এ হামলার নিন্দা হচ্ছে ওই অঞ্চলে এবং বিশেষজ্ঞরা এর আইনি বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
ট্রাম্প প্রশাসন বলেছে, তারা মাদক পাচারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনা করছে। যদিও বিশেষজ্ঞ ও কংগ্রেসের কিছু সদস্য অভিযোগ করেছেন, এই অভিযান মূলত মাদুরোর সরকারকে অস্থিতিশীল করার জন্য করা হচ্ছে।
মাদুরো দীর্ঘদিন ধরে ট্রাম্পের শত্রু এবং তাকে মাদক পাচারকারী সংগঠনের নেতা হিসেবে অভিযুক্ত করেছেন ট্রাম্প। মাদুরো তা প্রত্যাখ্যান করেছেন।
‘এটি হলো সরকার পরিবর্তন। তারা সম্ভবত আগ্রাসন করবে না, আশা করা হচ্ছে যে এটি একটি সতর্ক সংকেত,’ বলেন চ্যাথাম হাউজের লাতিন আমেরিকা বিষয়ক একজন সিনিয়র ফেলো ড. ক্রিস্টোফার সাবাতিনি।
তিনি আরও বলেন, ভেনেজুয়েলার সামরিক বাহিনী ও মাদুরোর ঘনিষ্ঠদের মধ্যে হামলার ভয় দেখানোর জন্য সামরিক পদক্ষেপ নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, যাতে তারা মাদুরোর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়।
পেন্টাগন শুক্রবার বলেছে, রণতরী জেরাল্ড আর ফোর্ড যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলীয় কমান্ডের আওতায় থাকবে। এই কমান্ডের অধীনেই আছে মধ্য আমেরিকা, দক্ষিণ আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চল।
এর মুখপাত্র সিয়ান পারনেল বলেছে অতিরিক্ত ফোর্স মাদক পাচার প্রতিরোধে এখনকার সক্ষমতাকে আরও বাড়াবে। রণতরী মোতায়েন করার কারণে স্থলভাগে হামলা পরিচালনার সক্ষমতাকে জোরদার করবে।
ট্রাম্প ভেনেজুয়েলার ভূমিতে হামলার প্রস্তুতির কথা বারবার বলছেন। ‘আমরা নিশ্চিতভাবেই এখন স্থলভাগের দিকে তাকাচ্ছি। কারণ সাগর আমাদের নিয়ন্ত্রণে,’ চলতি সপ্তাহের শুরুতে বলেছেন তিনি।
সিএনএন জানিয়েছে, ট্রাম্প ভেনেজুয়েলার ভেতরে মাদক পাচার রুট ও কোকেন তৈরির জায়গাগুলোতে হামলার বিষয়টি বিবেচনা করছেন। এখন শুধু সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করাই বাকি।
সূত্র: বিবিসি বাংলা
কেএএ/

2 weeks ago
16









English (US) ·