খুলনা ওয়াসার নতুন প্রকল্পে ধীরগতি, এখনও পিডি নিয়োগ হয়নি

2 weeks ago 16

পানি সরবরাহ প্রকল্প ফেজ-১ বাস্তবায়নের পর এবার ফেজ-২ এর প্রকল্প হাতে নিয়েছে খুলনা ওয়াসা। গত ১৭ সেপ্টেম্বর নতুন প্রকল্পের একনেকে অনুমোদন হয়। কিন্তু প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ না হওয়ায় ধীর গতিতে চলছে প্রকল্প।

এদিকে পানি সরবরাহ প্রকল্প ফেজ-২ এর প্রকল্প পরিচালক দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিয়োগ ও জবাবদিহিতার মাধ্যমে প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে খুলনা নাগরিক সমাজ।

পানি সরবরাহ প্রকল্প ফেজ-২ প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, এডিবি এবং জিওবির অর্থায়নে প্রায় ২ হাজার ৫৯৮ কোটি টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে। নতুন প্রকল্পে ২৫৮ কিলোমিটার পাইপলাইন, ২৫ হাজার ৮০০টি বাড়িতে মিটারসহ পানির সংযোগ স্থাপন, চারটি পানির রিজার্ভার এবং চারটি ওভারহেড ট্যাঙ্ক স্থাপন করা হবে। এ ছাড়া বর্তমানে রূপসার সামন্তসেনায় অবস্থিত পানি পরিশোধন কেন্দ্রের ধারণ সক্ষমতা দৈনিক ১১ কোটি লিটার থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ১৩ কোটি লিটারে উন্নীতকরণ, ওই স্থানে সাড়ে ৩৮ কোটি লিটার ধারণক্ষমতার আরেকটি রিজার্ভার স্থাপন, শহরের আফিল গেটে স্থাপিত আরেকটি পরিশোধন প্লান্টের সক্ষমতা দৈনিক ৫৫ লাখ লিটার থেকে বাড়িয়ে দুই কোটি লিটার করা হবে। নদীর পানি আনার জন্য মোল্লাহাটে নতুন পাম্প নির্মাণ করা হবে।

আরও জানা যায়, এ প্রকল্পের মাধ্যমে আগের পরিশোধন কেন্দ্রের সক্ষমতা বাড়িয়ে প্রতিদিন ১৩ কোটি লিটার পানি নগরীতে সরবরাহ করবে ওয়াসা। পাশাপাশি শুষ্ক মৌসুমের সংকট মোকাবিলায় ১১৫ কোটি লিটার পানি পরিশোধন কেন্দ্রের পাশে রিজার্ভারে (সংরক্ষণাগার) মজুত রাখা হবে। এ ছাড়া নগরীর বিভিন্ন স্থানে উচ্চ ক্ষমতার ৭৫টি পাম্প বসিয়ে দৈনিক ৫ থেকে ১০ কোটি লিটার পানি ভূগর্ভ থেকে উত্তোলন করা হবে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, নগরীতে প্রতিদিন পানির চাহিদা রয়েছে ২৪ কোটি লিটার। আগে চাহিদার ৯৯ ভাগ পানি ভূগর্ভ থেকে উত্তোলন করা হতো। পানির কষ্ট দূর করা এবং ভূগর্ভের পানির ওপর চাপ কমাতে ২০১১ সালে পানি সরবরাহ প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু করে খুলনা ওয়াসা। প্রকল্পটি ২০১৮ সালের জুনে শেষ হয়। ২০২০ সালে পানি সরবরাহ শুরু হয়। কিন্তু তাতে শুষ্ক মৌসুমে পানির কষ্ট দূর হয়নি। শুষ্ক মৌসুমে ভূগর্ভের পানির স্তর নিচে নেমে গেলে শহরজুড়ে তৈরি হয় হাহাকার। তবে ফেজ-২ বাস্তবায়ন হলে পানি সরবরাহের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ না হওয়ায় প্রকল্প নিয়ে জটিলতায় পড়তে হচ্ছে। এছাড়া নতুন এ প্রকল্পের ৯টি কাজের মধ্যে তিনটি কাজের টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ না হওয়াতে একটি টিম গঠন করে প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ চলমান রয়েছে। ফেজ-১ এর অভিজ্ঞতার আলোকে এ কাজ চলছে।

খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব অ্যাড. বাবুল হাওলাদার বলেন, পানি সরবরাহ প্রকল্প ফেজ-১ বাস্তবায়নের পরও নিরাপদ পানির প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটাতে ব্যর্থ হয়েছে ওয়াসা। তবে প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ দিয়ে নতুন প্রকল্প দ্রুততম সময়ের মধ্যে জবাবদিহিতার মধ্য দিয়ে বাস্তবায়ন করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, নদীর পানিতে লবণাক্ততা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এজন্য শহরের ভিতরে পুকুর খনন করে বৃষ্টি পানি ধারণের জায়গা তৈরি করতে হবে। তাহলে মিঠা পানির অভাব পূরণ হবে।

পানি সরবরাহ প্রকল্প ফেজ-২ এর ফোকাল পার্সন খুলনা ওয়াসার নির্বাহী প্রকৌশলী কামাল হোসেন বলেন, কাজের অগ্রগতি ভালো। সবাই আলোচনা করে কাজ করছি। ডিজাইন কনসালটেন্টসহ বাকিরা সার্বিক সহযোগিতা করে কাজ এগিয়ে নিতে সাহায্য করছেন।

আরিফুর রহমান/এনএইচআর/জেআইএম

Read Entire Article