গর্ভাবস্থায় রক্তে হিমোগ্লোবিনের ঘাটতি মা ও গর্ভের শিশুর জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করতে পারে বলে সতর্ক করেছেন গাইনি ও প্রসূতি রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সাবরিনা সুলতানা মিষ্টি।
শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি জানান, একজন গর্ভবতী নারীর রক্তে যদি হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ ১১-এর কম থাকে, তাহলে তাকে গর্ভকালীন রক্তশূন্যতা বলে ধরা হয়। এটি অবহেলা করলে জটিলতা বাড়তে পারে।
ডা. সাবরিনা বলেন, ‘আমাদের দেশের অনেক নারী শৈশব থেকেই রক্তস্বল্পতায় ভোগেন এবং গর্ভাবস্থায় তা আরও প্রকট হয়ে ওঠে। বিশ্বজুড়ে প্রায় ৫০ শতাংশ গর্ভবতী নারী রক্তশূন্যতায় ভোগেন এবং তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে এর কারণে প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজনের মৃত্যু ঘটে।’
এই বিশেষজ্ঞ জানান, গর্ভাবস্থায় রক্তস্বল্পতার সবচেয়ে সাধারণ কারণ আয়রনের ঘাটতি। এছাড়া ফোলেট (ভিটামিন বি৯) ও ভিটামিন বি১২-এর অভাব, ঘন ঘন গর্ভধারণ, কৃমির সংক্রমণ বা অতিরিক্ত রজঃস্রাবও এ সমস্যার কারণ হতে পারে।
গাইনি ও প্রসূতি রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সাবরিনা সুলতানা মিষ্টি/ছবি: সংগৃহীত
আরও পড়ুন
অসংক্রামক ব্যাধিতে নিঃস্ব হচ্ছে মানুষ
টাইফয়েড টিকা দেওয়া হয়েছে ৯৭ লাখ
ডা. সাবরিনা সতর্ক করে দিয়ে বলেন, অতিরিক্ত রক্তস্বল্পতা (হিমোগ্লোবিন ৭-এর নিচে) থাকলে মা প্রি-একলাম্পসিয়া (রক্তচাপ বৃদ্ধি, প্রস্রাবের সঙ্গে প্রচুর প্রোটিন যাওয়া ও বিভিন্ন অঙ্গের কার্যক্ষমতা নষ্ট হওয়া), হৃদযন্ত্রের সমস্যা বা প্রসব-পরবর্তী অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ঝুঁকিতে পড়তে পারেন। অন্যদিকে গর্ভের শিশুর বৃদ্ধি ব্যাহত হতে পারে এবং নির্ধারিত সময়ের আগে জন্ম নেওয়া বা কম ওজন নিয়ে জন্মানোর ঝুঁকিও থাকে।
রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে পরামর্শ দিতে গিয়ে এই বিশেষজ্ঞ জানান, ২১ বছরের আগে গর্ভধারণ করা স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। গর্ভধারণের আগে ও সময়কালে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা, আয়রন ও ভিটামিনসমৃদ্ধ খাবার যেমন কলিজা, ডিম, মাংস, শাকসবজি, পেয়ারাসহ ফলমূল খাওয়া এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী আয়রন ট্যাবলেট গ্রহণ করা জরুরি।
তিনি আরও বলেন, গর্ভকালীন পুরো সময়ে অন্তত তিন মাস পরপর হিমোগ্লোবিন পরীক্ষা করা উচিত এবং কোনো সংক্রমণ থাকলে দ্রুত চিকিৎসা নিতে হবে।
এসইউজে/একিউএফ/এএসএম

2 weeks ago
23









English (US) ·