ডায়াবেটিস বা রক্তে উচ্চ শর্করার সমস্যা প্রাথমিক পর্যায়ে অনেক সময় কোনো উপসর্গ ছাড়াই থাকে। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শরীরে কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায়। সচেতন হলে এগুলো দেখেই রোগ ধরা সম্ভব, আর সময়মতো চিকিৎসা শুরু করলে জটিলতা এড়ানো যায়।
১. প্রচণ্ড তৃষ্ণা ও বারবার প্রস্রাব
রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে কিডনি অতিরিক্ত পানি বের করে দেয়। এতে বারবার প্রস্রাব হয় এবং শরীর তরল হারায়। ফলস্বরূপ, তৃষ্ণা বেড়ে যায়। অনেকেই বেশি বেশি পানি পান করার প্রয়োজন অনুভব করেন।
২. অনিয়মিত বা অতিরিক্ত ক্ষুধা
রক্তের গ্লুকোজ সঠিকভাবে কোষে প্রবেশ না করলে শরীরকে প্রয়োজনীয় শক্তি পাওয়ার জন্য বারবার ক্ষুধা অনুভূত হয়। ফলে খাবারের আগ্রহ বেড়ে যায়।
৩. দৃষ্টিশক্তি সমস্যা
ডায়াবেটিসের কারণে চোখের লেন্সে তরল সঞ্চয় হওয়া বা রেটিনার ক্ষতি হতে পারে। এর কারণে ঝাপসা বা অস্পষ্ট দৃষ্টি দেখা দিতে পারে। অনেক সময় হঠাৎ দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটে।
৪. জ্বর বা ক্ষত ধীরে সুস্থ হওয়া
ডায়াবেটিসে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়। ফলে সাধারণ ক্ষত বা ছোট সংক্রমণ সেরে উঠতেও স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি সময় লাগে।
৫. অস্বাভাবিক ক্লান্তি
ডায়াবেটিস রোগীর ইনসুলিন হরমোনের কার্যকারিতা কমে যায়। ইনসুলিন হলো এক ধরনের হরমোন, যা লিভার ও প্যানক্রিয়াস থেকে তৈরি হয় এবং রক্তে থাকা গ্লুকোজকে (শর্করা) কোষে প্রবেশ করাতে সাহায্য করে। কোষে গ্লুকোজ প্রবেশ করলে শরীর তা শক্তি হিসেবে ব্যবহার করতে পারে।
কিন্তু ডায়াবেটিস রোগীর রক্তের শর্করা কোষে পৌঁছায় না, ফলে শরীর যথেষ্ট শক্তি পায় না। ফলে অনেক সময় সামান্য কাজ করেও ক্লান্তি অনুভব হয়।
৬. ওজন পরিবর্তন
কিছু রোগীর ক্ষেত্রে হঠাৎ ওজন কমে যায়, আবার কারও ক্ষেত্রে বেড়েও যায়। এটি শরীরের ইনসুলিন ব্যবস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত।
৭. হাত-পা ঝিনঝিন করা বা সংবেদনশীলতা কমে যাওয়া
দীর্ঘদিন ধরে রক্তে শর্করা বেড়ে থাকলে তা স্নায়ুর ক্ষতি করতে পারে। ফলে হাত-পা ঝিনঝিন করা, কাঁপুনি বা সংবেদনশীলতা কমে যাওয়ার মতো লক্ষণ দেখা যায়।
ডায়াবেটিসের এই লক্ষণগুলো দেখা দিলে নিয়মিত রক্ত পরীক্ষা ও চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। সময়মতো চিকিৎসা না নিলে কিডনি, চোখ, হার্ট ও স্নায়ুতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
সূত্র: আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশন, মায়ো ক্লিনিক, বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সোসাইটি
এএমপি/এমএস

3 hours ago
5







English (US) ·