ঘরে মুরগির মাংস দেখে সেজদায় লুটিয়ে পড়ল শিশু
ইসরায়েলি হামলা ও সহিংসতার শিকার হয়ে ধ্বংসস্তূপ গোটা জনপদ। গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি অবরোধের জেরে ভয়ানক ঝুঁকিতে পড়ে ফিলিস্তিনিদের জীবন-জীবিকা। ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন বোমা আর গুলি এড়িয়ে কোনোমতে বেঁচে থাকাই যেখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, সেখানে মাছ, মাংস, ফলমূল চোখে দেখা যেন স্বপ্নতুল্য। ইসরায়েল যুদ্ধের সময়টায় গাজায় ঢুকতে দেয়নি কোনো মানবিক সহায়তা। এমনকি সাগরে ফিলিস্তিনি জেলেদের মাছ ধরাও নিষিদ্ধ করে তারা।
শেষ পর্যন্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় গত ১০ অক্টোবর যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয় ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী। এরপরই ধ্বংসস্তূপের বুকে কিছুটা স্বস্তি ফেরে। গাজায় বসতে শুরু করে হাটবাজার। আবারও পছন্দের খাবার খাওয়ার সুযোগ পেয়েছে দীর্ঘদিন ধরে পুষ্টিকর খাবার থেকে বঞ্চিত শিশুরা।
সন্তানদের জন্য দীর্ঘ এক বছর পর মুরগির মাংস কিনে আনেন ফিলিস্তিনের এক বাবা। তা দেখে আনন্দে সিজদায় লুটিয়ে পড়ে এক শিশু। ইসরায়েলি হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া একটি ভবনের মধ্যে বসা ছিল তিন শিশু। এ সময় বাবা তাদের জন্য মুরগির মাংস নিয়ে ঘরে প্রবেশ করতেই শিশুরা আনন্দ-উল্লাসে মেতে ওঠে। এ ঘটনার দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। আলজাজিরা সেই ভিডিও পোস্ট করে ঘটনার বর্ণনা দেয়।
এতে দেখা যায়, শিশুরা মুরগির মাংস দেখতে পেয়ে আল্লাহু আকবর বলে চিৎকার করে এবং বলতে থাকে, আল্লাহ মহান, এটা কী সত্যিই মুরগি। আমরা আবারও মুরগির মাংস খেতে যাচ্ছি। আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, একটি শিশুর হাতে আপেল দিয়ে তার নাম জানতে চাওয়া হলে, সে বলে তরমুজ। অর্থাৎ যুদ্ধের ভয়াবহতার মাঝে শিশুরা ফলের নামও ভুলে গেছে। ভিডিওটি দেখে অনেকে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন।
গাজায় দীর্ঘ দুই বছরের যুদ্ধে ভয়াবহ খাদ্যসংকটে ভুগেছে লাখ লাখ ফিলিস্তিনি। খাবার না পেয়ে অপুষ্টিতে ভুগে শত শত শিশু মারাও গেছে। পরিস্থিতি এমনও ছিল যে, অনেকে ঘাস, লতা-পাতা খেয়ে জীবন ধারণ করেছে। এ অবস্থায় গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতার মাঝে ফিলিস্তিনিদের কাছে পুষ্টিকর খাবার ছিল এক ধরনের বিলাসিত। কারণ ইসরায়েল বাহিনীর বৃষ্টির মতো বোমা বর্ষণের কারণে গাজা পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তূপে। স্কুল থেকে শুরু করে মসজিদ, মাদ্রাসা, হাসাপাতাল, শরণার্থী শিবির এবং হাটবাজারও গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

14 hours ago
7









English (US) ·