জোটের নির্বাচনে প্রতীক ব্যবহারে আগের বিধান বহাল চায় বিএনপি

4 days ago 9

রাজনৈতিক দলগুলোর জোটবদ্ধ নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রতীক ব্যবহার নিয়ে নির্বাচন সংক্রান্ত আইন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ বা আরপিও’র আগের বিধান বহাল চায় বিএনপি।

আরপিও অধ্যাদেশের সংশোধনীর বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে বুধবার (২৮ অক্টোবর) আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের কাছে চিঠি পৌঁছে দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।

সচিবালয়ে উপদেষ্টার কাছে চিঠি পৌঁছে দেওয়ার পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচন সংক্রান্ত যে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ বা আরপিও আছে, কয়েকদিন আগে এর ২০ ধারাতে একটি সংশোধনী উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অনুমোদন হয়েছে বলে আমরা জেনেছি। সেটি হচ্ছে, কোনো রাজনৈতিক দল যদি জোটভুক্ত হয়ে অন্যান্য দলের সঙ্গে নির্বাচন করে, সেক্ষেত্রে সেই নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল তার নিজস্ব প্রতীকে নির্বাচন করতে বাধ্য থাকবে।

‘আগে নিয়ম ছিল—যারা জোটভুক্ত হয়ে নির্বাচন করবে, তারা হয় নিজেদের প্রতীক বা জোটের অন্য প্রতীকে নির্বাচন করতে পারবে।’

আরও পড়ুন
ঐকমত্য কমিশন ঐক্যের বদলে ‘জাতীয় অনৈক্য’ করার প্রচেষ্টা নিয়েছে
নির্বাচনের আগে গণভোটের সুযোগ নেই: আমীর খসরু

বিএনপির এ নেতা বলেন, সেই আইনটির খসড়া যখন আমরা দেখেছি—নির্বাচন কমিশনও আমাদের পাঠিয়েছিল এ বিষয়ে মতামত আছে কি না জানাতে। এখানে অনেকগুলো সংশোধনী আনা হয়েছে। প্রায় প্রতিটি সংশোধনীর সঙ্গে আমরা একমত পোষণ করেছি। যেমন—‘না’ ভোট, প্রার্থীদের জামানত বৃদ্ধি, নির্বাচনে যদি কোনো অনিয়ম হয় সেক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ার বৃদ্ধি, ইচ্ছা করলে যেকোনো নির্বাচন বাতিল করতে পারবে।

তিনি বলেন, আরও বেশ কয়েকটি বিধান সেখানে যুক্ত ছিল। আমরা সবগুলোর সঙ্গে একমত পোষণ করেছি। শুধু এই বিধানটির (জোটবদ্ধ হলেও নিজেদের দলীয় প্রতীকেই নির্বাচন করতে হবে) সঙ্গে আমরা একমত পোষণ করিনি।

‘যখন আইনটি ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়, তখনও অনানুষ্ঠানিকভাবে সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে আইন উপদেষ্টার সঙ্গে আমি আলোচনা করেছিলাম। তখন তিনি বলেছিলেন, এটি সরকারের নজরে আনবেন। বিষয়টি আলোচনা করে যেন একটা বিহিত হয়, সেটা বিবেচনা করবেন বা সরকার বিবেচনা করতে পারে। এ বিষয়ে তিনি আমাকে মোটামুটি আশ্বস্ত করেছিলেন। কিন্তু যখন অধ্যাদেশটি উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পাস হলো তখন দেখলাম বিষয়টি বিবেচিত হয়নি।’

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, তারপর এ বিষয়ে তার (আইন উপদেষ্টা) সঙ্গে আবার কথা বলেছি। এ বিষয়ে আমাদের যে উদ্বেগ, আগে যে বিষয়টি ছিল, সেটি যেন বহাল থাকে সেজন্য আমরা আবেদন করেছি। আজ আনুষ্ঠানিকভাবে কাগজটি তাকে দিয়েছি। কয়েকদিন আগে নির্বাচন কমিশনকেও একই চিঠি দিয়েছি।

বিএনপির এ নেতা আরও বলেন, আমরা আশা করছি, বহুদলীয় গণতন্ত্রের স্বার্থে এ বিধানটি আগের মতো বহাল থাকবে। কারণ, আমরা মনে করি অনেক দলের আকার ছোট হলেও সেখানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় নেতৃত্ব আছেন। তারা নির্বাচিত হয়ে জাতীয় সংসদে আসতে পারলে জাতীয় সংসদ সমৃদ্ধ হবে। বহু দলের, বহু আদর্শের, বহু মতের প্রতিনিধিত্ব থাকলে জাতীয় সংসদ সমৃদ্ধ হয়, সমগ্র জাতির পক্ষে কথা বলা যায়, আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে তারা ভূমিকা রাখতে পারবেন।

‘আমরা মনে করি, যেসব নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল জোটভুক্ত হয়ে নির্বাচন করতে চায়, তারা হয় নিজেদের প্রতীকে কিংবা জোটবদ্ধ অন্য দলের প্রতীকে নির্বাচন করার যে স্বাধীনতা বা বিধান আগে ছিল, সেটা বহাল রাখা হোক।’

আরও পড়ুন
ইসি থেকেও রিটার্নিং কর্মকর্তা চায় জামায়াত

আইন উপদেষ্টা কী বলেছেন- জানতে চাইলে সালাহউদ্দিন বলেন, তিনি সরকারের কাছে বিষয়টি তুলে ধরবেন বলে জানিয়েছেন এবং সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন, প্রয়োজনে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গেও আলোচনা করবেন। তারপর কী করা যায়, সেটা বিবেচনা করে দেখবেন।

তিনি বলেন, আমি নির্বাচন সংক্রান্ত সংস্কার কমিশনের সমালোচনা করতে চাই। কারণ, তারা এ বিষয়ে আমাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা করেনি। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনেও বিষয়টি আলোচিত হয়নি। এ বিষয়ে কোনো ঐকমত্যও প্রতিষ্ঠা হয়নি। হঠাৎ করে নির্বাচন সংস্কার কমিশন একটি বিষয় আরোপ করবে, সেটা সঠিক হয়নি।

আরএমএম/এমকেআর/এএসএম

Read Entire Article