ট্রাম্পের সঙ্গে আল শারার বৈঠক কেন এত গুরুত্বপূর্ণ?

4 hours ago 5

একসময় যিনি ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের শত্রু, আজ তিনিই হয়ে উঠেছেন পরম মিত্র। অথচ কয়েক বছর আগেও এই দৃশ্য ছিল অকল্পনীয়। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে পা রেখেছেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল শারা। খুব শিগগির তিনি হোয়াইট হাউজে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে মুখোমুখি বৈঠকে বসবেন।

তার এই সফর কেবল কূটনৈতিক নয়, বরং এক নাটকীয় পরিবর্তনের প্রতীক। কারণ, আল শারা একসময় সিরিয়ার কুখ্যাত সন্ত্রাসী সংগঠন নুসরা ফ্রন্টের নেতা ছিলেন, যা আল কায়েদার সিরীয় শাখা হিসেবে পরিচিত ছিল। তখন তার মাথার দাম নির্ধারণ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র, কেবল আটক সংক্রান্ত তথ্য দিলেই এক কোটি ডলার পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছিল। তবে আজ সেই মানুষই সিরিয়ার নেতা এবং যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য মিত্র।

গত বছরের ডিসেম্বরে বাশার আল আসাদ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করে নেতৃত্বে আসেন আহমেদ আল শারা। তিনি নিজের পুরোনো নাম ‘আবু মুহাম্মদ আল জোলানি’ পরিত্যাগ করেছেন এবং এখন নিজেকে জাতীয় ঐক্যের প্রতীক হিসেবে তুলে ধরতে চান।

আরও পড়ুন>>
ঐতিহাসিক সফরে যুক্তরাষ্ট্রে গেলেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট
সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের ওপর থেকে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার
সিরিয়ায় সেনা পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, ১৪ বছরের বিধ্বংসী গৃহযুদ্ধ শেষে সিরিয়াকে ফের ভাঙন থেকে রক্ষার সবচেয়ে বড় সুযোগ তার হাতেই রয়েছে। তাই ওয়াশিংটনের কূটনৈতিক হিসাব এখন একেবারে নতুন পথে, যেখানে সাবেক শত্রুকেই সম্ভাব্য মিত্র হিসেবে দেখা হচ্ছে।

এই পরিবর্তনের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশল স্পষ্ট—আল শারাকে শক্তভাবে পাশে রাখলে সিরিয়ায় ইরান ও রাশিয়ার প্রভাব কমবে। পাশাপাশি, ইসলামিক স্টেটের (আইএস) পুনরুত্থান ঠেকাতেও তাকে সহযোগী হিসেবে দেখা হচ্ছে।

তবে আশঙ্কাও আছে। আল শারা প্রকাশ্যে সন্ত্রাসবাদের অতীত অস্বীকার করেছেন বটে, কিন্তু ক্ষমতায় আসার পরও সিরিয়ায় সাম্প্রদায়িক সংঘাত দেখা দিয়েছে। গত জুলাইয়ে সুয়েইদায় দ্রুজ ও বেদুইন গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষই সেই অস্থিরতার প্রমাণ।

এগুলো সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বাস করে, আল শারাই এখন সিরিয়ার স্থিতিশীলতার সর্বশেষ আশার প্রতীক। কারণ, সিরিয়া স্থিতিশীল হলে মধ্যপ্রাচ্যের সামগ্রিক ভারসাম্য রক্ষা সহজ হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

ওয়াশিংটনে তার এই সফর ঐতিহাসিক। ১৯৪৬ সালে স্বাধীনতা লাভের পর এই প্রথম কোনো সিরীয় রাষ্ট্রপ্রধান আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাষ্ট্র সফরে গেলেন।

ট্রাম্পের সঙ্গে আল শারার বৈঠকে সিরিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, যুদ্ধোত্তর পুনর্গঠন, আইএসবিরোধী লড়াইয়ে সহযোগিতা এবং ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার পথ নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানা গেছে।

সূত্র: স্কাই নিউজ
কেএএ/

Read Entire Article