ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হল সংসদের ভিপি-জিএসের জন্য ছয় শিক্ষার্থীর একটি রুম খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
রোববার (৯ নভেম্বর) দুপুরে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক কাজী মাহফুজুল হক সুপন হলের ৩১৮ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থীদের ডেকে নিয়ে ওই রুম ছাড়ার নির্দেশনা দেন বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
৩১৮ নম্বর রুমের আবাসিক শিক্ষার্থী মো. রেদোয়ান জাগো নিউজকে বলেন, ‘দুপুরে হলের প্রভোস্ট কাজী মাহফুজুল হক তাদের ডেকে বলেন, এই রুমে দুইপাশ মিলিয়ে তো ছয়জন থাকা যাবে না। তোমরা নিশ্চয়ই অবৈধ!’
প্রভোস্ট তাদের বলেন, ‘৩১৮ নম্বর রুমটি ভিপি-জিএসের রুম হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। যদিও এটি কোনো লিখিত নিয়ম নয়, তবে এটি হলের ‘প্রথা’ এবং তোমরা যদি রুম না ছাড়ো তাহলে লিখিতভাবে আবেদন দিয়ে যাও যে তোমরা রুম ছাড়বে না।’
রেদোয়ান বলেন, ‘আমরা অবৈধ কীভাবে? আমাদের সবার নামই ডাটাবেজে আছে। যে জিনিসটা গত ৩৫ বছরে হয়নি, সেটা কীভাবে প্রথা হয়? ২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচনের পরও ৩১৮ নম্বর রুমে ছাত্রলীগ নেতা সাদ্দাম থাকতেন, যিনি হল সংসদের ভিপি বা জিএস ছিলেন না।’
রেদোয়ান অভিযোগ করেন, ‘ভিপি-জিএস-এজিএসের কেউ কেউ সিঙ্গেল রুমের জন্য প্রশাসনের ওপর চাপ দিচ্ছেন।’
স্যার এ এফ রহমান হল সংসদের ভিপি রফিক বলেন, ‘আমরা আটজনের রুমে থাকি। সেক্ষেত্রে বিভিন্ন জন বিভিন্ন বিষয় নিয়ে রুমে আসেন, ফলে অন্য রুমমেটদের সমস্যা হয়। যেহেতু আমাদের হলে ছোট ছোট দুটি রুম আছে, যেগুলোর ব্যাপারে ওই সময়কার শিক্ষার্থীরাও (অ্যালামনাই) বলেছেন যে, রুমগুলো ভিপি, জিএসদের জন্যই তৈরি করা।’
রফিক বলেন, ‘আমরা প্রভোস্ট স্যারকে জানালাম যে, এখন যেহেতু ওই রুমগুলোতে ২/৩ জন থাকেন, তাই তাদের সঙ্গে কথা বলে তারা যদি রাজি হন তাহলে আমরা রুমগুলোতে আরেকজন নিয়ে উঠে যাবো। সিঙ্গেল রুমে থাকতে চাওয়ার ব্যাপারটাই অবান্তর। আমাদের কঠোর দাবি থাকলে তো আমরা ইলেকশনের পরপরই ওই রুমগুলোতে ওঠার দাবি জানাতাম। বর্তমানে দুজন করেই যেহেতু থাকেন, আমরা ও দুজন করেই থাকার ব্যাপারে জানিয়েছি। তাও আবার তাদের সঙ্গে কথা বলে, যদি তারা রাজি হন তারপর চেঞ্জ করতে বলা হয়েছে। আর প্রভোস্ট স্যার কোন ভিত্তিতে তাদের অবৈধ বলেছেন সেটা উনি বলতে পারবেন। উনি হলে অ্যালোটেড থাকা শিক্ষার্থীদের অবৈধ বলার এখতিয়ার রাখেন না।’
শিক্ষার্থীদের অবৈধ বলার বিষয়ে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক কাজী মাহফুজুল হক জাগো নিউজকে বলেন, ‘৩১৮ নম্বর রুমে সিট অনুযায়ী চারজন থাকার কথা। আমি তাদের অফিসে ডেকে জিজ্ঞাসা করেছি তোমরা কয়জন থাকো। তখন ছয়জন বলায় আমি বলেছি চারজনের রুমে ছয়জন কেন? বাকিরা কি অবৈধ নাকি? আমার মনে হচ্ছে তারা এটাকে মিসইন্টারপ্রিয়েট করেছে।’
হল সংসদের ভিপি, জিএস সিঙ্গেল রুমের জন্য আপনাকে চাপ দিচ্ছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এমন কোনো চাপ ভিপি-জিএস থেকে আসেনি। তবে তারা আমাকে প্রথম কার্যনির্বাহী সভায় তাদের রুমে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সময় আসা-যাওয়া করায় বাকিদের ডিস্টার্ব হয় বলে তাদের রুম পরিবর্তন করে দিতে বলে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কোনো বৈধ শিক্ষার্থীকে রুম পরিবর্তন করার এখতিয়ার হল প্রসাশনের নেই, যদি না সেই শিক্ষার্থী নিজে রুম পরিবর্তনের আবেদন করে। তাই আজ আমি তাদের সঙ্গে কথা বলে আবেদনের কথা জানাই যে তারা রুম পরিবর্তন করবে কি করবে না।’
এফএআর/ইএ/জিকেএস

7 hours ago
8









English (US) ·