শেরপুর সদরের শেরপুর সদর উপজেলার কামারেরচর ইউনিয়নের চরের সড়কের নির্মাণকাজ দেড় বছর ধরে বন্ধ। এতে চরম দুর্ভোগে চরাঞ্চলের ২৫ হাজারেরও বেশি মানুষ।
এলজিইডি কর্তৃপক্ষ জানায়, জুলাই অভ্যুত্থানের পর ঠিকাদার পালিয়ে যাওয়ায় এ ভোগান্তি। আর দ্রুত সড়কের নির্মাণকাজ শেষ করার দাবি জানান স্থানীয়রা।
সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রত্যন্ত গ্রাম ৭ নম্বর চর। দশানী নদীর তীরের এ গ্রামে দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চারটি মাদরাসা, মসজিদ ও একটি বড় বাজার থাকলেও যাতায়াতের একমাত্র পথে দীর্ঘদিনেও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। বেশ কয়েক বছর আগে চৌধুরী বাড়ি মোড় থেকে সাহাব্দীরচর পর্যন্ত পৌনে এক কিলোমিটার রাস্তা পাকা হলেও পরের ৪ কিলোমিটার কাঁচা সড়ক থাকায় যাতায়াতে গ্রামবাসীকে পোহাতে হয় চরম দুর্ভোগ। বর্ষায় হাঁটু সমান কাদা মাড়িয়ে যেতে হয় জেলা সদরসহ বিভিন্ন জায়গায়। এখানকার বেশিরভাগ মানুষ কৃষিতে জড়িত। জমিতে উৎপাদিত কৃষিপণ্য হাট-বাজারে নিতে নানাভাবে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে তাদের। বেহাল সড়কে ভোগান্তি পোহাতে হয় রোগী ও শিক্ষার্থীদের।
এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, এলজিইডির অধীনে ২০২৩ সালে সড়কটি সংস্কারে ৩ কোটি ৪৭ লাখ ৬০ হাজার টাকার বরাদ্দ আসে। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে দরপত্রের মাধ্যমে কাজ শুরু করে ভাটি বাংলা এন্টারপ্রাইজ এবং বরেন্দ্র এন্টারপ্রাইজ নামে দুই ঠিকাদার। এরপর গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর কাজ অসম্পূর্ণ রেখে পালিয়ে যায় ঠিকাদার। এরপর হতে ভোগান্তিতে পড়েছে চরাঞ্চলের প্রায় ২৫ হাজার মানুষ।
৭ নম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হাসান মিয়া বলেন, ভাঙা রাস্তার কারণে সামান্য বৃষ্টি হলেও আমাদের যাতায়াতে অনেক কষ্ট হয়। আবার শীতকালেও ধুলোবালিতে চলাচল করা খুব মুশকিল।
৭ নম্বর চর বাজারের ব্যবসায়ী হুরমুজ আলী বলেন, আমি ঘুরে ঘুরে সবজি কিনে বাজারে বিক্রি করি। কিন্তু এই ভাঙা রাস্তার কারণে মালামাল নিয়ে ঠিকমতো বাজারে যাওয়া যায় না।
স্থানীয় বাসিন্দা রুহুল আমিন বলেন, এই বেহাল সড়কের কারণে গ্রামের রোগীদের, বিশেষ করে গর্ভবতী মায়েদের শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া কতটা দুরূহ, তা বলে বুঝানো যাবে না। আমাদের চরাঞ্চলের প্রায় ২৫ হাজার নাগরিক এ সড়কে ভোগান্তি পোহাচ্ছে। আমরাও এ দেশের নাগরিক, ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থা আমাদের অধিকার। পলাতক সেই ঠিকাদারকে আইনের আওতায় আনার এবং সড়কটি দ্রুত মেরামতের দাবি জানাচ্ছি।
স্থানীয় মেম্বার রফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের এ এলাকা উন্নয়ন বঞ্চিত। না আছে রাস্তাঘাট, না আছে কোনো আধুনিক সুযোগ-সুবিধা। স্বাধীনতার এতোবছর পরও আমরা অনেক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। দ্রুত এ সড়ক মেরামতের দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমান জাগো নিউজকে জানান, এটি একটি প্রত্যন্ত এলাকা। ভাঙা রাস্তায় স্থানীয়দের খুব কষ্ট হচ্ছে, আমি সরেজমিনে গিয়েছিলাম। আর ঠিকাদার বারবার চিঠি দিয়েও সাড়া দেয়নি। তাই নতুন করে দরপত্র আহ্বানের প্রস্তুতি চলছে। আশাকরি, খুব দ্রুত রাস্তাটির কাজ শুরু করা যাবে।
জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, জনগণের দুর্ভোগ কমাতে বিষয়টি দ্রুত সংশ্লিষ্ট দফতর ও ঊর্ধ্বতন মহলে জানানো হবে।
মো. নাঈম ইসলাম/এনএইচআর/এমএস

2 hours ago
1









English (US) ·