পাবনার ৬টি নদীর অংশকে বদ্ধ জলাভূমি দেখিয়ে ইজারা আহ্বান করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে জেলা প্রশাসন। একে স্পষ্ট আইন লঙ্ঘন উল্লেখ করে ইজারা কার্যক্রম স্থগিতে আইনি নোটিশ দিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইবিদ এ্যাসোসিয়েশন (বেলা)।
নোটিশ প্রেরণের আগামী ৭ দিনের মধ্যে ইজারা কার্যক্রম স্থগিত নাহলে জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানিয়েছে বেলা।
বেলার আইনজীবী ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের এড. এস হাসানুল বান্নার সই করা এ নোটিশ রোববার (৯ নভেম্বর) ডাকযোগে পাঠানো হয়েছে।
একইসঙ্গে নোটিশের অনুলিপি ভূমি মন্ত্রণালয়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার বিভাগ মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া নদীরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যানসহ কয়েকটি দপ্তরের মোট ১৩ জন কর্মকর্তার কাছে এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়েছে, ১৯৯৫ সালের নংভূম/১১/৯৫/৫৭৬ স্মারকের মাধ্যমে দরিদ্র জেলে সম্প্রদায়ের স্বার্থ সংরক্ষণার্থে ও তাদের জীবিকার পথ সুগম করতে নদী, খাল ও উন্মুক্ত জলমহাল ইজারা প্রথা বিলুপ্ত করা হয়। ২০১৯ সালে আদালত দেশের সব নদীকে আইনি ব্যক্তি বা আইনি সত্ত্বা অথবা জীবন্ত সত্ত্বা ঘোষণা করে জনগণের ন্যস্ত সম্পত্তি উল্লেখ করেন।
এছাড়া দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী নদী বা খালকে রূপান্তর বা বদ্ধ জলমহাল হিসেবে ব্যবহারের সুযোগ নেই। অথচ চলতি বছরের ১৩ অক্টোবর পাবনা জেলার ২৬টি জলমহাল ব্যক্তির নিকট ইজারা দেওয়ার লক্ষ্যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। এর মধ্যে ৬টি নদী ও কয়েকটি খাল রয়েছে। যেটি প্রচলিত আইন ও আদালতের আদেশ পরিপন্থি। এক্ষেত্রে নোটিশ প্রেরণের আগামী ৭ দিনের মধ্যে নদী ইজারা কার্যক্রম স্থগিত করে বেলাকে না জানানো হলে জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে নোটিশে।
পাবনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ইয়াসমিন মনিরা বলেন, এখন পর্যন্ত কোনো নোটিশ পাইনি। পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ১৪ জানুয়ারি ৬৩টি জলাশয় ইজারা দেওয়ার আরেকটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পাবনা জেলা প্রশাসন। এর মধ্যে ৩১টি ছিল বিভিন্ন নদীর অংশ। গণমাধ্যমে এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হলে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) আইনি নোটিশ পাঠানোর জেরে প্রশাসন নদীর অংশ ইজারা দেওয়া বন্ধ করে।
এরপর চলতি বছরের ১৩ অক্টোবর জেলা প্রশাসন ৮টি উপজেলার ২৬টি জলাশয় ছয় বছরের জন্য ইজারা দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এসব জলাশয়ের মধ্যে চারটিই নদীর অংশ। যার মধ্যে জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত ইছামতি ও পদ্মা নদীর অংশ রয়েছে।
এ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, পাবনা সদর উপজেলার পদ্মার কোল (পদ্মা নদীর একটি শাখা) এর ২১ একর এলাকা এবং সাঁথিয়া উপজেলার তিনটি স্থানে ইছামতি নদীর ১০৭ একর এলাকা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
আলমগীর হোসাইন নাবিল/এনএইচআর/জিকেএস

2 hours ago
5









English (US) ·