পটারি পুকুর রক্ষায় ভবন নির্মাণে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ

6 hours ago 3

প্রস্তাবিত ‘রূপায়ন গ্রীন প্যারাডাইজ’ ভবনের অনুকূলে পরিবেশ অধিদপ্তর কতৃর্ক দেওয়া ছাড়পত্র ও এর নবায়নের কার্যকারিতা ৬ মাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। রাজধানীর রায়েরবাজারের সরাই জাফরাবাদ মৌজায় অবস্থিত পুকুর (স্থানীয়ভাবে পটারি পুকুর নামে পরিচিত) ভরাট থেকে রক্ষায় এ আদেশ দিয়েছেন আদালত।

এছাড়া, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের অন্তর্ভুক্ত ওই পুকুর ভরাট থেকে রক্ষায় বিবাদীদের ব্যর্থতা কেন বেআইনি ও অবৈধ ঘোষণা করা হবেনা, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।

একইসঙ্গে, ওই পুকুর চিহ্নিত স্থানে প্রস্তাবিত ‘রূপায়ন গ্রীন প্যারাডাইজ’ ভবনের অনুকূলে পরিবেশ অধিদপ্তর কতৃর্ক অবস্থানগত ছাড়পত্র প্রদান ও তা নবায়ন কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং পুকুর হিসেবে চিহ্নিত স্থানে ‘রূপায়ন গ্রীন প্যারাডাইজ’ নামক ১৪ তলা ভবন নির্মাণের উদ্যোগ সংবিধান ও দেশে প্রচলিত আইনের লঙ্ঘন বিধায় তা কেন আইনবহির্ভূত, আইনগত কর্তৃত্ববিহীন এবং জনস্বার্থের পরিপন্থি ঘোষণা করা হবে না, রুলে তাও জানতে চেয়েছেন আদালত।

পাশাপাশি জারিকৃত এ রুলে পুকুরটি ভরাট থেকে রক্ষার, ভরাটকৃত অংশ পুনরুদ্ধার এবং ‘পুকুর’ হিসেবে সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তাও বিবাদীদের কাছে জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব, ভূমি মন্ত্রণালয় ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক), রাজধানী উন্নয়ন কতৃর্পক্ষের চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও ঢাকা মহানগর কার্যালয়ের পরিচালক (মনিটরিং এন্ড এনফোর্সমেন্ট), ঢাকার জেলা প্রশাসক, ঢাকা মেট্টোপলিটন এরিয়ার পুলিশ কমিশনার ও মোহাম্মদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ এবং রূপায়ন গ্রুপের ব্যবস্থপনা পরিচালেকে এসব রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) কর্তৃক জনস্বার্থে দায়েরকৃত রিটের প্রাথমিক শুনানী নিয়ে রোববার (৯ নভেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি ফাহমিদা কাদের এবং বিচারপতি মো. আসিফ হাসানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।

আদালতে এদিন রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট এস. হাসানুল বান্না। তাকে সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট তৌহিদুল আলম। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ শফিকুর রহমান।

জানা গেছে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের অন্তর্ভুক্ত রায়েরবাজার এলাকার সরাই জাফরাবাদ মৌজায় আর এস জরিপের ১৩৫১ নং দাগে ৬৫ দশমিক ২৮ শতাংশ জায়গা জুড়ে বিসিকের মালিকানাধীন একটি জোড়া পুকুর রয়েছে যা স্থানীয়ভাবে ‘পটারি পুকুর’ নামে পরিচিত।

জনগুরুত্বপূর্ণ এ পুকুরটি ভরাট করে রূপায়ন হাউজিং এস্টেট লিমিটেড নামক একটি হাউজিং কোম্পানি সেখানে ১৪ তলা বিশিষ্ট আবাসিক ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। স্যাটেলাইট ইমেজ থেকে পরিলক্ষিত হয় যে ২০১৩ সালে পুকুরটি দৃশ্যমান ছিল।

পরবর্তীতে ২০১৯ সালে পুকুরটি সম্পূর্ণ ভরাট করা হয়। ২০২২ সালে পুকুরের একাংশ পুনরুদ্ধার করা হয়, যার পরিমাণ প্রায় ৩০ শতাংশ কিন্তু অবশিষ্ট ৩৫ দশমিক ২৮ শতাংশ ভরাট অবস্থায় থেকে যায়। ২০২৫ সালে পুনরুদ্ধারকৃত ৩০ শতাংশে ভরাটের উদ্যোগ নিলে বেলা সম্পূর্ণ পুকুর পুনরায় ভরাট থেকে রক্ষায় এবং অবশিষ্ট ৩৫ দশমিক ২৮ শতাংশ পুনরুদ্ধারে বেলা রিট দায়ের করে।

এফএইচ/এএমএ/এএসএম

Read Entire Article