শেরপুরে দিন দিন বাড়ছে পানিফল চাষ। জলাবদ্ধ ও পতিত জমিতে চাষ করা যায় বলে কম সময়ে বেশি লাভবান হচ্ছেন কৃষকেরা। কম খরচে অল্প সময়ে চাষাবাদে ভালো লাভ হওয়ায় আগ্রহী হচ্ছেন তারা। এমনকি বাণিজ্যিকভাবেও চাষে ঝুঁকছেন শেরপুরের কৃষকেরা।
চাষিরা জানান, পানিফলের ফলন আসে প্রায় ৩ মাস বয়সে। এরপর আরও ৩ মাস ধরে ফলন পাওয়া যায়। মোট ৬ মাসে বিঘাপ্রতি ১০-১২ হাজার টাকা খরচ হয়। এতে ৫০ হাজার টাকার মতো ফল বিক্রি করা যায়। তাছাড়া ডোবা, বদ্ধ জলাশয় বা মাছের ঘেরেও ফলটি চাষ করা যায়। পানিফল কচি অবস্থায় লাল রঙের হয়। পরে সবুজ ও পরিপক্ব হলে কালো রং ধারণ করে।
শেরপুর সদর উপজেলার চরশেরপুরের বামনের চর বিল, রামকৃষ্ণপুর, পৌরসভার ইসলি বিল, রৌহা বিল, শ্রীবরদী উপজেলার খড়িয়া কাজির চর, বৈশা বিল, কাকিলাকুড়া, ভায়াডাঙা, বকচর, বারারচর, গড়জরিপা, ঝিনাইগাতী উপজেলার ধলী বিল, কালিনগর, নালিতাবাড়ীর রাজনগর, নামা বড়ডুবি, নকলা উপজেলার পাঠাকাটা, চরঅষ্টধর, চন্দ্রকোনা, উরফা, গণপদ্দী ও বানেশ্বরদী ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে বাণিজ্যিকভাবে পানিফল চাষ করা হয়। তবে পাঠাকাটা ইউনিয়নের কৈয়াকুড়ি, পলাশকান্দি, দশকাহনিয়া ও নামা কৈয়াকুড়ি এলাকায় বেশি চাষ করা হয়।

পানি যত বেশি হয়; ফলন তত ভালো হয় বলে জানান চাষিরা। চরশেরপুরের চাষি সদাগর মিয়া বলেন, ‘আমাদের এখানে ইটভাটায় মাটি বিক্রি করা জমিতে আবাদ হয় না। আবার মাছও চাষ করার উপযোগী না। সেই জমিতে আমি পানিফল চাষ করে বেশ লাভবান হয়েছি।’
নালিতাবাড়ীর রাজনগরের চাষি সুলতান আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি কয়েক বছর ধরে পানিফল চাষ করে আসছি। এতে খরচ একেবারেই নেই বললেই চলে।’
আরও পড়ুন
ঝালকাঠিতে সুপারির ভালো ফলনেও দামে আশাহত চাষিরা
পাহাড়ের জাম্বুরার কদর বাড়ছে সারাদেশে
নকলা উপজেলার নামা কৈয়াকুড়ি গ্রামের ছালাম মিয়া বলেন, ‘আমি মাছের ঘেরে পানিফল চাষ করেছি। ৩০ টাকা কেজি ধরে পাইকারি বিক্রি শুরু করেছি। গত বছর আমার ৫ কাঠা জমিতে ৪০ হাজার টাকা লাভ হয়েছে।’

শেরপুরের নিউমার্কেটে ভ্যানে করে পানিফল বিক্রি করছেন শরাফত আলী। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে ফলটি বিক্রি করি। প্রতিদিন সবমিলিয়ে প্রায় ১ মণ বিক্রি হয়।’
শেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘পানিফল স্বল্পমেয়াদি অর্থকরী ফসল। ফলটি চাষে পোকার আক্রমণ কম। তাই রাসায়নিক সার ও কীটনাশক মুক্ত হওয়ায় এটি নিরাপদ।’
তিনি বলেন, ‘জলাবদ্ধ যেসব জমিতে আমন ধান বা অন্য ফসল করা সম্ভব নয়; সেসব জমিতে পানিফল চাষ করে প্রান্তিক কৃষকেরা লাভবান হতে পারেন। তবে কী পরিমাণ চাষ হয়েছে, তার নির্দিষ্ট তথ্য নেই। আগামী মৌসুমে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে নানা রকম পরামর্শ দেওয়া হবে।’
মো. নাঈম ইসলাম/এসইউ/জেআইএম

15 hours ago
5









English (US) ·