পারমাণবিক সুপার টর্পেডোর পরীক্ষা চালালো রাশিয়া

1 day ago 7

এবার পারমাণবিক সুপার টর্পেডোর পরীক্ষা চালালো রাশিয়া। ‘পোসেইডন’নামে এই স্বয়ংক্রিয় সুপার টর্পেডোর সফল পরীক্ষার কথা প্রকাশ্যে জানান দেশেটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

বুধবার (২৯ অক্টোবর) পুতিন বলেন, রাশিয়া একটি পারমাণবিক শক্তিসম্পন্ন স্বয়ংক্রিয় পোসেইডন সুপার টর্পেডোর সফল পরীক্ষা চালিয়েছে। এটি একটি অসাধারণ সাফল্য।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাশিয়ার এই অস্ত্র নিয়ে নির্ভরযোগ্য তথ্য খুব একটা পাওয়া যায় না। তবে এটি একটি স্বয়ংক্রিয় পারমাণবিক টর্পেডো, যা তেজস্ক্রিয় সুনামি বা বিশাল ঢেউ সৃষ্টি করে উপকূলীয় শহরগুলোকে বসবাসের অযোগ্য করে তুলতে পারে।

ইউক্রেন যুদ্ধে আহত রুশ সেনাদের সঙ্গে মস্কোর একটি হাসপাতালে চা পান করার সময় পুতিন জানান, মঙ্গলবার এই পরীক্ষাটি সম্পন্ন হয়েছে।

তিনি বলেন, প্রথমবারের মতো আমরা শুধু বাহক সাবমেরিন থেকে পোসেইডন উৎক্ষেপণ করতেই সক্ষম হইনি, বরং এর পারমাণবিক শক্তিসম্পন্ন ইউনিটও সক্রিয় করতে পেরেছি; যা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত কার্যকর ছিল। পৃথিবীতে আমাদের এই অস্ত্রের মতো আর কিছু নেই।

পুতিন আরও বলেন, এটি বিশাল এক সাফল্য। পোসেইডনের শক্তি আমাদের সারমাত আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রের (স্যাটান টু) শক্তিকেও ছাড়িয়ে গেছে।

তিনি যোগ করেন, পোসেইডনের ক্ষমতা এমনকি আমাদের সবচেয়ে উন্নত সারমাত ক্ষেপণাস্ত্রের চেয়েও অনেকাংশে বেশি।

এর মাত্র এক সপ্তাহ আগে রাশিয়া পারমাণবিক শক্তিচালিত ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ‘বুরেভেস্তনিক’-এর সফল পরীক্ষা চালানোর দাবি করেছিল। সেই ক্ষেপণাস্ত্র বিশ্বের যেকোনও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ফাঁকি দিয়ে নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম বলে দাবি করেন পুতিন। তিনি জানান, দেশটি এখন এই অস্ত্র মোতায়েনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে প্রথমবারের মতো পুতিন প্রকাশ্যে ঘোষণা দেন ‘পোসেইডন’ ও ‘বুরেভেস্তনিক’ নামের দুটি পারমাণবিক অস্ত্র প্রকল্পের বিষয়ে। তিনি জানান, এসব অস্ত্রের উন্নয়ন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি, ২০০১ সালে ওয়াশিংটনের অ্যান্টি-ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র চুক্তি থেকে একতরফা সরে আসা এবং ন্যাটো সম্প্রসারণের প্রতিক্রিয়াস্বরূপ।

এর আগে, গত বুধবার পুতিন স্থল, সমুদ্র ও আকাশপথে রাশিয়ার কৌশলগত পারমাণবিক বাহিনীর মহড়া তত্ত্বাবধান করেন। সেসময় তিনি বলেন, আমাদের পারমাণবিক প্রতিরোধ শক্তির আধুনিকায়ন এখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে, যা অন্য যেকোনও পারমাণবিক শক্তিধর দেশের তুলনায় উন্নত।

বর্তমানে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র মিলে বিশ্বের মোট পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডারের প্রায় ৮৭ শতাংশের মালিক। দুই দেশের হাতে থাকা এই বিপুল অস্ত্রভাণ্ডার পৃথিবীকে একাধিকবার ধ্বংস করার মতো সক্ষমতা রাখে।

ফেডারেশন অব আমেরিকান সায়েন্টিস্টসের (এফএএস) তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে রাশিয়ার হাতে রয়েছে ৫ হাজার ৪৫৯টি পারমাণবিক ওয়ারহেড, আর যুক্তরাষ্ট্রের হাতে রয়েছে ৫ হাজার ১৭৭টি।

সূত্র: এএফপি, রয়টার্স

এসএএইচ

Read Entire Article