বিমানে নামাজ আদায়ের নিয়ম

1 hour ago 5

অন্যান্য সময়ের মতো বিমানে ভ্রমণের সময়ও পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময় হলে নামাজ আদায় করা ফরজ। বিমানে ওঠার আগে বা বিমান অবতরণের পর নামাজ আদায় করা সম্ভব হলে আগে বা পরে নামাজ পড়ে নেওয়া যেতে পারে। কিন্তু যদি নামাজের ওয়াক্তের পুরোটাই বিমানে অতিবাহিত হয়, তাহলে বিমানেই নামাজ আদায় করবেন।

বিমানে যদি নামাজের জায়গা থাকে এবং কিবলামুখী হয়ে, দাঁড়িয়ে, রুকু ও সিজদা করে নামাজ আদায় করা সম্ভব হয়, তাহলে অন্য সময়ের মতই কিবলামুখী হয়ে দাঁড়িয়ে, রুকু ও সিজদা করে নামাজ আদায় করতে হবে।

বিমানে যদি দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করা সম্ভব না হয়, তাহলে বসে রুকু-সিজদাসহ নামাজ আদায় করবেন। বিমানে কিবলামুখী হয়ে দাঁড়িয়ে বা বসে রুকু-সিজদাসহ নামাজ আদায় করলে পরবর্তী সময়ে তা পুনরায় পড়তে হবে না।

বিমানে যদি কেবলামুখী হওয়া এবং রুকু ও সিজদা করাও সম্ভব না হয়, তাহলে যেভাবে সম্ভব বসে বা ইশারায় নামাজ আদায় করে নেবেন। এ ক্ষেত্রে বিমান থেকে অবতরণের পর সতর্কতামূলক ওই ফরজ নামাজ আবার পড়ে নেবেন।

বিমানে কিবলার দিক নির্ণয়ের জন্য বিমানের তথ্য পরিষেবা বা কম্পাস ব্যবহার করবেন। কাবার বরাবর ওপরের দিকে পুরো বায়ুমণ্ডলই কেবলা। তাই মাটিতে যেভাবে কাবার দিকে ফিরে কিবলামুখী হন, বিমানেও সেভাবেই কাবার দিকে ফিরে কিবলামুখী হবেন, আলাদা কোনো নিয়ম নেই।

বিমানে কি নামাজ কসর করতে হবে?

বিমানে চড়ে আপনি যে দেশে বা শহরে যাবেন তা যদি আপনার আবাস থেকে ৪৮ মাইল বা ৭৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত হয়, তাহলে বিমানে ভ্রমণের সময় আপনি মুসাফির গণ্য হবেন এবং নামাজ কসর করবেন। ৪৮ মাইল দূরে যাওয়ার নিয়ত করে নিজের শহর থেকে বের হলেই শরিয়তের পরিভাষায় তাকে মুসাফির বলা হয়। মুসাফির গণ্য হওয়ার জন্য সফর পরিমাণ দূরত্ব অতিক্রম করা জরুরি নয়। সফরের নিয়তে নিজের শহর থেকে বের হয়ে এক মাইল অতিক্রম করলেও সে মুসাফির গণ্য হয়।

মুসাফির ব্যক্তির জন্য জোহর, আসর ও ইশার ফরজ নামাজ কসর করা অর্থাৎ চার রাকাতের জায়গা দুই রাকাত পড়া ওয়াজিব। অনেকে মনে করেন কসর করা ঐচ্ছিক—এই ধারণা ঠিক নয়। সফর অবস্থায় ইচ্ছাকৃত কসর না করা গুনাহের কাজ। তাই ইচ্ছাকৃত কসর বাদ দিয়ে পূর্ণ নামাজ পড়া যাবে না।

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, আল্লাহ তাআলা আপনাদের নবির (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জবানে মুকিম অবস্থায় চার রাকাত ও সফর অবস্থায় দুই রাকাত নামাজ ফরজ করেছেন। (সহিহ মুসলিম: ৬৮৭)

মুসাফির ব্যক্তি যদি ভুল করে চার রাকাত বিশিষ্ট কোনো ফরজ নামাজ কসর না করে চার রাকাতই পড়ে নেয়, তাহলে দেখতে হবে সে দুই রাকাতের পর বৈঠক করেছে কি না, যদি করে থাকে তাহলে তার ওই ফরজ নামায আদায় হয়ে যাবে। এ ক্ষেত্রে প্রথম দুরাকাত ফরজ এবং শেষ দুই রাকাত নফল হবে। নামাজের ভেতরেই যদি এ ভুলের কথা মনে পড়ে, তাহলে নামাজ শেষে সাহু সিজদা দিতে হবে। হাসান বসরি (রহ.) বলেন, কোনো মুসাফির ভুলে জোহরের নামাজ চার রাকাত পড়ে ফেললে সাহু সিজদা করবেন। (মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক: ২/৫৪১)

নামাজের ভেতরে মনে না পড়লে এবং সাহু সিজদা না দিলেও নামাজ হয়ে যাবে। আবার পড়তে হবে না।

আর যদি চার রাকাত বিশিষ্ট কোনো ফরজ নামাজ চার রাকাত পড়ে এবং মাঝের বৈঠকও করতে ভুলে যায়, তাহলে তার ফরজ বাতিল হয়ে ওই নামাজ নফল হয়ে যাবে। তাকে পুনরায় ওই ফরজ নামাজ পড়ে নিতে হবে। (আদ-দুররুল মুখতার: ২/১২৮)

ওএফএফ

Read Entire Article