বিশ্বকাপের প্রথম টিকিট দান করে দিবেন মেক্সিকো প্রেসিডেন্ট

3 hours ago 4

ফুটবল কেবল খেলাই নয়, এটি স্বপ্ন দেখার ভাষা—আর সেই স্বপ্নকে আরও বড় করতে ব্যতিক্রমী এক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউডিয়া শেইনবাম। ২০২৬ বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচের জন্য পাওয়া নিজের প্রথম টিকিটটি (নম্বর ০০০০১) তিনি দান করবেন এমন এক তরুণীকে, যিনি ফুটবল ভালোবাসেন কিন্তু টিকিট কেনার সামর্থ্য রাখেন না।

মেক্সিকোর ইতিহাসে প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট শেইনবাম সোমবার মেক্সিকো সিটিতে বিশ্বকাপ আয়োজন পরিকল্পনা উপস্থাপন অনুষ্ঠানে এই ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, “আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, উদ্বোধনী ম্যাচের টিকিটটি আমি এমন এক কিশোরী বা তরুণীকে দেব, যে ফুটবল ভালোবাসে কিন্তু কোনোদিন ভাবেনি এমন আসর দেখতে পারবে।”

বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১১ জুন মেক্সিকো সিটির আজতেকা স্টেডিয়ামে, যার ধারণক্ষমতা ৮৩ হাজার দর্শকের। এটি হবে ঐতিহাসিক তৃতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ উদ্বোধনী ম্যাচ আয়োজনের মুহূর্ত, এর আগে ১৯৭০ ও ১৯৮৬ সালে একই ভেন্যু এই গৌরব অর্জন করেছিল।

আগস্টে ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর সফরের সময় থেকেই শেইনবাম ঘোষণা দিয়েছিলেন, তিনি নিজের প্রিমিয়াম আসন ছেড়ে দেবেন। সোমবার সংবাদ সম্মেলনে সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবে রূপ দিলেন তিনি। প্রেসিডেন্ট জানান, কাকে টিকিটটি দেওয়া হবে তা এখনও নির্ধারণ হয়নি, তবে “এটি এমন এক মেয়েকেই দেওয়া হবে, যে ফুটবল স্বপ্ন দেখতে চায়, যাতে সে বিশ্বাস করতে পারে—খেলার মাঠে মেয়েরাও বদলে দিতে পারে ইতিহাস।”

২০২৬ সালের এই বিশ্বকাপ আয়োজনে মেক্সিকো যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার সঙ্গে যৌথভাবে দায়িত্ব পালন করছে। ১৩টি ম্যাচ আয়োজন করবে মেক্সিকো, যার মধ্যে পাঁচটি হবে মেক্সিকো সিটিতে এবং বাকি আটটি গুয়াদালাহারা ও মনতেরে শহরে। উদ্বোধনী ম্যাচ ছাড়াও মেক্সিকো দল নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলবে ১৮ জুন গুয়াদালাহারায় এবং তৃতীয় ম্যাচ ২১ জুন আজতেকায়।

শেইনবাম আরও জানান, বিশ্বকাপের আগেই দেশের সব অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প সম্পন্ন হবে। এর মধ্যে রয়েছে মেক্সিকো সিটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দুই টার্মিনাল সংস্কার—যার জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৪৮৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, এবং রাজধানী থেকে ফেলিপে অ্যাঞ্জেলেস বিমানবন্দর পর্যন্ত ৩০ মাইল দীর্ঘ রেললাইন নির্মাণ।

প্রেসিডেন্ট বলেন, “বিশ্বকাপ শুধু খেলাই নয়, এটি হবে আমাদের দেশের জন্য অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক এক উৎসব। আর আমি চাই, সেই উৎসবের প্রথম হাসিটা ফুটে উঠুক এক তরুণীর চোখে।”

ফুটবলের প্রতি ভালোবাসা ও নারী ক্ষমতায়নের এই প্রতীকী উদ্যোগে ইতিমধ্যে মেক্সিকো জুড়ে প্রশংসার ঢেউ উঠেছে। ২০২৬ বিশ্বকাপের সূচনা ম্যাচের সেই টিকিট—যেটি হয়তো নতুন প্রজন্মের মেয়েদের অনুপ্রেরণার গল্প হয়ে থাকবে আগামী দিনগুলিতে।

Read Entire Article