বিসিবির সিইওকে দেওয়া ১৩ পাতার চিঠিতে জাহানারার যত অভিযোগ
পেসার জাহানারা আলম ইস্যুতে তোলপাড় দেশের ক্রীড়াঙ্গন। লম্বা সময় ধরে তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনা ক্রিকেটাঙ্গনকে নাড়িয়ে দিয়েছে। প্রায় ৪ বছর আগে নিজের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো নিয়ে ১৩ পৃষ্ঠার একটি চিঠি বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরীকে দিয়েছিলেন জাহানারা। সেখানে ম্যানেজার ও নির্বাচক মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু, নারী বিভাগের প্রয়াত ইনচার্জ তৌহিদ মাহমুদ থেকে শুরু করে কোচদের বিরুদ্ধে তার সঙ্গে ঘটা বঞ্চনার বর্ণনা দেন তিনি। কালবেলার হাতে এসেছে সেই চিঠিটা। পাঠকদের জন্য তা তুলে ধরা হলো।
চিঠির শুরুতেই জাহানারার সঙ্গে তখনকার কো-অরডিনেটর সরফরাজ বাবুর সঙ্গে কী কথা হয়েছিল তা তুলে ধরেন জাহানারা। সেখানে স্পষ্টভাষায় দলের মধ্যকার নানা সমস্যা সমাধান করতে অভিজ্ঞ জাহানারাদের অনুরোধ করেন তিনি। চিঠিতে দুজনের কথোপকথন তুলে ধরে তিনি লিখেন, ‘বাবু ভাই বলেন, দেখেন আপা সামনে অনেক বড় টুর্নামেন্ট আমাদের, এক হয়ে খেলতে হবে। টিমে কোনো ঝামেলা থাকলে নিজেরা ঠিক করে ফেলেন। তৌহিদ ভাই অনেক চেষ্টা করেছেন। তৌহিদ ভাই নিজেও খুব চাপে আছে। হয়তো উনি চাকরিও ছেড়ে দিতে পারেন। দলে যদি কোনো ফাটল থাকে তো সিমেন্ট লাগানোর দায়িত্ব আপনাদের সিনিয়রদের। আপনি এটা আবার কারোর সঙ্গে শেয়ার করেন না।’ প্রতিউত্তরে জাহানারা বলেছিলেন, ‘তৌহিদ ভাই তো খুব চেষ্টা করেছেন। ভালো মন্দ যাই ফল হোক, উনি কেন চাকরি ছাড়বেন। উনি তো চেষ্টা করছেন। আর দলের মধ্যে সব সমস্যা সম্পর্কে উনি অবগত। সুতরাং উনি চাইলেই নিজেই সব ঠিক করতে পারবেন।’
সে ঘটনার পরই টিম ম্যানেজার ও নির্বাচক মঞ্জু জাহানারার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার শুরু করেন বলে অভিযোগ দেন জাহানারা। দ্বিতীয় পৃষ্ঠায় বিষয়টি তুলে ধরে তিনি লিখেছেন, ‘মঞ্জু ভাই মাঠে আমার সঙ্গে অকারণে খারাপ ব্যবহার শুরু করেন। খুব চিৎকার এং রূঢ়ভাবে কথা বলেন। আমি হতচকিত, বুঝলাম না আমার দোষটা কোথায়! পরদিন তৌহিদ ভাইকে ফোন করলাম ইন্টার্ভিউর অনুমতির জন্য। ফোন না ধরায় এসএমএস করলাম, রিপ্লাই পেলাম না। এভাবে চলত থাকল।’
তৃতীয় পৃষ্ঠায় বাংলাদেশ গেমসের দল গঠন থেকে শুরু করে দলের মধ্যে গ্রুপিং বিষয় তুলে ধরেন জাহানারা। তিনি লিখেছেন, ‘রুমানা তখনো ওয়ানডে দলের নিয়মিত অধিনায়ক। বাংলাদেশ গেমসের তিন দলের একটা সালমা আপু, একটা জ্যোতি ও অন্যটায় অধিনায়ক করা হয় শারমিনকে। সেখানে শারমিন কখনো কোনো ঘরোয়া লিগেও অধিনায়কত্ব করেনি। রুমানা এত মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে যে ওই টুর্নামেন্টে সে পারফরম্যান্স করতে পারেনি। ওই টুর্নামেন্ট থেকে আমার, সালমা আপুর ও রুমানার সঙ্গে টেকনিক্যালি খারাপ ব্যবহার শুরু হয় এবং সব জায়গায় জ্যোতির প্রধান্য বাড়তে থাকে।’
অনুশীলন ম্যাচে নির্বাচক মঞ্জুর নির্দেশনা অমান্য করায় বোলিং করতে দেওয়া হয়নি জানিয়ে তিনি লিখেন, ‘আমাদের অনুশীলন ম্যাচে মঞ্জু ভাই ওয়াকিটকিতে বলেন জাহানারাকে ইয়র্কার বল করতে বলো। আমি ইয়র্কার চেষ্টা করে লেগ মিডলে পড়ল। পরের বল গুড লেন্সে হল কেন, উনার কথা শুনিনি তাই আবার ওয়াকিটকিতে অসম্ভব জোরে চিৎকার করে বললেন, ‘খবরদার জাহানারাকে আর যেন বল না দেওয়া হয়। অন্য যে কেউ করবে জাহানারা নয়! সালমা দেখ ব্যাপারটা।’ মাঠে আম্পায়ারসহ সবাই থ হয়ে যায়। ১৩ পৃষ্ঠার পুরো চিঠিতে এভাবে দলের মধ্যকার গ্রুপিং, নিজের সঙ্গে ঘটা বঞ্চনার কথাগুলো তুলে ধরেন তিনি।

4 hours ago
5









English (US) ·