বিহারের নির্বাচনে বড় পরীক্ষার মুখে বিজেপি

1 day ago 6

ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য বিহারে শুরু হয়েছে বিধানসভা নির্বাচন। রাজ্যটিতে এবারের নির্বাচন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দল বিজেপির জন্য একটি বড় পরীক্ষা হিসেবে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি, এই ভোট আসন্ন আরও কয়েকটি রাজ্য নির্বাচনের দিকনির্দেশক হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে।

দুই দফায় অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে রাজ্যের মোট ২৪৩ আসনের জন্য ভোট গ্রহণ চলছে। ভোট গণনা হবে আগামী ১৪ নভেম্বর।

বিতর্কিত ভোটার তালিকা পুনর্গঠনের পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে এই নির্বাচন। বিরোধীরা অভিযোগ তুলেছে, প্রকৃত ভোটারদের বাদ দিয়ে বিজেপিকে সুবিধা দিতে তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তবে বিজেপি ও ভারতের নির্বাচন কমিশন এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

আরও পড়ুন>>
বিহারে ‘মৃত ভোটারদের’ সঙ্গে চায়ের আড্ডায় রাহুল গান্ধী
বিহার বিধানসভা/ ১৫ আসন না দিলে নির্বাচন করবো না, বিজেপি মিত্রের হুঁশিয়ারি
নির্বাচনের আগে পশ্চিমবঙ্গেও চালু হতে পারে বিতর্কিত এসআইআর
ভোট চুরির অভিযোগ/ মোদীর পদত্যাগের দাবি জোরালো হচ্ছে ভারতে

ভারতের সবচেয়ে দরিদ্র ও জনবহুল রাজ্যগুলোর একটি বিহার। সেখানে কর্মসংস্থানের জন্য লাখ লাখ মানুষ অন্য রাজ্যে পাড়ি জমায়। এখন পর্যন্ত মোদীর দল সেখানে এককভাবে সরকার গঠন করতে পারেনি।

বর্তমান সরকার বিজেপি ও জনতা দল (ইউনাইটেড) বা জেডিইউ–এর জোটে গঠিত। এ নির্বাচনে তারা আবারও একসঙ্গে লড়ছে। অন্যদিকে, বিরোধী কংগ্রেস দল আঞ্চলিক শক্তি রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) ও আরও কয়েকটি ছোট দলের সঙ্গে জোট বেঁধেছে।

নির্বাচনে নতুন মাত্রা যোগ করেছে রাজনৈতিক কৌশলবিদ প্রশান্ত কিশোরের দল। তিনি অতীতে বিজেপি ও কংগ্রেস উভয়ের জন্যই কাজ করেছেন।

এ নির্বাচনে নজর রয়েছে দুই প্রবীণ নেতা জেডিইউ প্রধান নীতীশ কুমার ও আরজেডি নেতা লালু প্রসাদ যাদবের দিকে। বিগত চার দশক ধরে রাজ্যের রাজনীতিতে প্রভাব রাখা এই দুই প্রতিদ্বন্দ্বী এখন অসুস্থ। তবে অতীতে তারা ক্ষমতায় থাকতে একাধিকবার হাত মিলিয়েছেন।

বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার গত দুই দশকের বেশিরভাগ সময় রাজ্য পরিচালনা করেছেন এবং মোদীর দলের গুরুত্বপূর্ণ মিত্র হিসেবে কেন্দ্রীয় সরকার গঠনে ভূমিকা রেখেছেন।

অন্যদিকে, ১৯৯০ থেকে ১৯৯৭ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন লালু প্রসাদ যাদব। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি হিসেবে তার উত্থান বিহারের রাজনৈতিক চিত্র পাল্টে দেয়। তবে তার আমল দুর্নীতি ও শাসনব্যর্থতার অভিযোগে কলঙ্কিত হয়। বর্তমানে তিনি দুর্নীতির মামলায় জামিনে মুক্ত আছেন।

বিরোধী জোটের তরফে মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে লালু যাদবের ছেলে তেজস্বী যাদবকে সামনে আনা হয়েছে।

নির্বাচন কমিশন গত সেপ্টেম্বর মাসে নতুন ভোটার তালিকা প্রকাশ করে। এতে মোট ৭ কোটি ৪২ লাখ ভোটারের নাম রয়েছে। এর আগে ৪৭ লাখ ভোটারকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে সমালোচনায় পড়ে কমিশন।

বিরোধীরা অভিযোগ করেছে, মুসলিম ভোটারদের বাদ দিয়ে বিজেপির ভোট বাড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছে। তবে বিজেপি ও কমিশন তা অস্বীকার করেছে।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, এবার নারী ভোটাররাই হতে পারেন নির্বাচনের মোড় ঘোরানো শক্তি। রাজ্যের মোট ভোটারের প্রায় অর্ধেকই নারী এবং সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাদের উপস্থিতি বেড়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষক সন্তোষ সিং বলেন, বিহারে নারীরা সাধারণত বিষয়ভিত্তিক ভোট দেন, তাই সব দলই তাদের আকৃষ্ট করতে নানা কল্যাণমূলক প্রকল্পের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে।

স্থানীয় ভোটকর্মী খুশবু দেবী বলেন, আমি চেষ্টা করছি সবাইকে ভোট দিতে উদ্বুদ্ধ করতে, বিশেষ করে নারীদের। কারণ বিহারে যেখানেই ভোটের হার বেশি, দেখা যায় সেখানে নারীরাই বেশি ভোট দিচ্ছেন।

সূত্র: বিবিসি
কেএএ/

Read Entire Article