রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনের আইনের অনুমোদন দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মো. সাহাবুদ্দিন। মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব নাঈমা খন্দকারের সই করা প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এদিকে প্রজ্ঞাপনের খবরে শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, ছাত্র সংসদ নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা। সেই জায়গায় আগামী নভেম্বর মাসের মধ্যে সুষ্ঠু নির্বাচন চাই।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি ও আচার্য কর্তৃক বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ ও হল শিক্ষার্থী সংসদগুলোর গঠন ও পরিচালনা বিধিমালা ২০২৫ অনুমোদিত হয়েছে।
নীতিমালা অনুমোদনের বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানানোর জন্য আজ বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভাকক্ষে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় সাংবাদিক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শওকাত আলী।
তিনি বলেন, বেরোবি ছাত্র সংসদের নীতিমালায় রাষ্ট্রপতি অনুমোদন দিয়েছেন। আমি শিক্ষার্থীদের আশ্বাস দিয়েছিলাম ৩১ অক্টোবরের মধ্যেই আমাদের নীতিমালা পাস হবে। সেটি নির্ধারিত সময়ের আগেই পাশ হয়েছে। আমরা এখন সুষ্ঠু একটি নির্বাচন উপহার দিতে চাই।
এক প্রশ্নের উত্তরে উপাচার্য জানান, খুব দ্রুতই সবার সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচন আয়োজনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা হবে। কমিশন গঠনসহ বিভিন্ন কারিগরি প্রস্তুতি নিতে হবে। তবে চলতি বছরের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
শিক্ষার্থীরা জানান, গত ১৭ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে আমরণ অনশনে বসেন ১০ শিক্ষার্থী। তখন তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন সংশোধন করে একটি সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করে দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানান। কর্মসূচির তৃতীয় দিনে উপাচার্য বিষয়টি মেনে নিয়ে শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙেন।
ছাত্র সংসদ নির্বাচন সংক্রান্ত এ সিদ্ধান্তে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের অনশনকারী শিক্ষার্থী খোকন ইসলাম বলেন, ছাত্র সংসদ নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা আছে। কিন্তু অন্য ক্যাম্পাসে ভোট সুষ্ঠু হয়েছে কিনা, তা নিয়ে আশঙ্কার কথা উঠে এসেছে। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের পরে এই দ্বিধাগুলো কেন আসবে? সেই জায়গায় আগামী নভেম্বর মাসের মধ্যে সুষ্ঠু নির্বাচন চাই।
জাতীয় ছাত্রশক্তির রংপুর মহানগর কমিটির সদস্যসচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হাজিম উল হকও দ্রুত ছাত্র সংসদ নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানান।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আল আমিন বলেন, ছাত্র সংসদ নির্বাচন শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি ছিল। আমরা ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পক্ষে ও আন্দোলনগুলোতে আমাদের সমর্থন ছিল। তবে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখেছি, ছাত্র সংসদ নির্বাচনের প্রক্রিয়া নিয়ে বিতর্ক হয়েছে। আমরা চাই, আমাদের এখানে বিতর্কগুলো না হোক। এ জন্য তাড়াহুড়া না করে যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিরপেক্ষতা ও স্বচ্ছতা বজায় রেখে ছাত্র সংসদ নির্বাচন দিতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র শিবিরের সাধারণ সম্পাদক রাকিব মুরাদ বলেন, শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের প্লাটফর্ম ছাত্রসংসদ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে সংযুক্ত হয়েছে। ছাত্র সংসদ নির্বাচন কেবল একটি ভোটের প্রতিযোগিতা নয় এটি শিক্ষার্থীদের মতামত প্রকাশের মঞ্চ, নেতৃত্বের অনুশীলন ক্ষেত্র এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সেতুবন্ধন। একটি সক্রিয় ছাত্র সংসদ মানে হলো- শিক্ষার্থীদের সমস্যা, দাবি ও স্বপ্নগুলো প্রশাসনের দরজায় পৌঁছে দেওয়ার শক্তিশালী মাধ্যম। এখানে গড়ে ওঠে নেতৃত্ব, দায়িত্ববোধ, সহমর্মিতা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবি থাকবে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট প্রসেসগুলো যথাযথভাবে মেইনটেইন করা, অযথা সময়ক্ষেপন না করে দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে।
ফারহান সাদিক সাজু/এনএইচআর/এএসএম

4 days ago
5









English (US) ·