বাড়ির সবচেয়ে প্রয়োজনীয় ইলেকট্রনিক ডিভাইসগুলোর একটি হলো ওয়াশিং মেশিন। প্রতিদিনের কাপড় পরিষ্কারের ঝামেলা কমিয়ে আনে, সময় বাঁচায় এবং কাপড়কে রাখে পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত। কিন্তু ভুল ব্যবহার, অযত্ন, বা নিয়ম না মানলে এই মেশিন খুব দ্রুত নষ্ট হয়ে যেতে পারে। শুধু সার্ভিসিং খরচই নয়, কখনো কখনো পুরো মেশিনটাই অচল হয়ে পড়তে পারে।
তাই কোন কোন ভুলে ওয়াশিং মেশিন দ্রুত নষ্ট হয় জেনে রাখাই ভালো। আসুন জেনে নেই-
১. অতিরিক্ত কাপড় ভরে দেওয়া
অনেকেই মনে করেন, ড্রামের জায়গা আছে যতটা, সব একসঙ্গে ধুলে পানি, বিদ্যুৎ ও সময় বাঁচবে। কিন্তু এতে মোটরের ওপর অস্বাভাবিক চাপ পড়ে। ড্রামের ব্যালান্স নষ্ট হয়, বিয়ারিং ও মোটর দ্রুত নষ্ট হয়, মেশিন অস্বাভাবিক শব্দ করে। তাই সর্বোচ্চ ৭০–৮০শতাংশ পর্যন্ত কাপড় দেওয়া নিরাপদ।
২. ভুল ডিটারজেন্ট ব্যবহার
ওয়াশিং মেশিনে সাধারণ সাবান বা হাতে কাপড় ধোয়ার পাউডার ব্যবহার করলে অতিরিক্ত ফেনা তৈরি হয়। সেন্সর কাজ করা বন্ধ করে, পাইপ ও ফিল্টারে ব্লক হয়, মোটরের ক্ষতি হয়। তাই হাই এফেসিয়েন্সি বা মেশিন-উপযোগী লো ফোম ডিটারজেন্ট ব্যবহার জরুরি।
৩. পানি কমানো বা ট্যাংকের চাপ কম থাকা
অনেক সময় পানি কম থাকলে মেশিন ঠিকমতো রিন্স করতে পারে না। বারবার একই কাপড় ঘুরতে থাকে এবং মোটর ও ড্রামে চাপ পড়ে। পানি কম হলে মেশিন বেশি সময় চলে, মোটরে অতিরিক্ত লোড পড়ে। তাই পানি অল্প হলে ওয়াশিং সাইকেল শুরু না করাই ভালো।
৪. নিয়মিত ফিল্টার পরিষ্কার না করা
ওয়াশিং মেশিনে লিন্ট ফিল্টার থাকে যেখানে সুতা, চুল, ধুলো জমে। ব্লক হলে পানি নিস্কাশনে সমস্যা হতে পারে এবং ড্রেন পাম্পে চাপ পড়ে। তাই সপ্তাহে অন্তত ১বার ফিল্টার পরিষ্কার করার অভ্যাস করুন।
৫. পাওয়ার স্ট্যাবিলাইজার বা সার্কিট ব্রেকার ব্যবহার না করা
বারবার ভোল্টেজ ওঠানামা হলে পিসিবি বোর্ড, মোটর বা সেন্সর পুড়ে যেতে পারে। যা সারাই খরচ অনেক বেশি। তাই ওপার-লোয়ার ভোল্টেজ সমস্যা থাকলে সার্কিট ব্রেকার/স্ট্যাবিলাইজার ব্যবহার জরুরি।
৬. ভেজা জায়গায় মেশিন রাখা
বাথরুমে বা ভেজা জায়গায় মেশিন রাখলে রস্ট ধরে, ইলেকট্রিক্যাল শর্ট সার্কিটের ঝুঁকি, বডি দ্রুত নষ্ট হতে পারে। তাই শুকনো, সমতল ও বায়ু চলাচল আছে এমন জায়গায় রাখাই নিরাপদ।
৭. ঢাকনা খোলা রাখা না
ওয়াশিং শেষে অনেকেই সঙ্গে সঙ্গে ঢাকনা বন্ধ করে রাখেন। এতে ভেতরে আর্দ্রতা জমে ছত্রাক তৈরি হয়। খারাপ গন্ধ, কাপড়েও দুর্গন্ধ লাগে। তাই ব্যবহারের পর অন্তত ৩০ মিনিট ঢাকনা খুলে রাখুন।
৮. ড্রামের ভারসাম্য ঠিক না রাখা
এক পাশে বেশি কাপড় জমে থাকলে ড্রাম অসমভাবে ঘোরে, শক অ্যাবজর্বর নষ্ট হয়, মেশিন লাফাতে পারে। তাই কাপড়গুলো সমানভাবে ছড়িয়ে দিন।
৯. ট্যাপের নোংরা পানি ব্যবহার করা
মাটিযুক্ত বা নোংরা পানি ফিল্টার ব্লক করে। ড্রেন ব্লক করে, এমনকি ইনলেট ভালভ নষ্ট করে দেয়। তাই পানির সোর্সে ফিল্টার বা সেডিমেন্ট ফিল্টার ব্যবহার করুন।
১০. সার্ভিসিং বা ডিপ ক্লিনিং না করা
ওয়াশিং মেশিন বাইরে পরিষ্কার মনে হলেও ভেতরের ড্রাম, রাবার সিল, হিটার ও পাইপে ডিটারজেন্ট ও ময়লা জমে। কাপড় পরিষ্কার হয় না, খারাপ গন্ধ হতে পারে, পার্টস নষ্ট হওয়ারও ঝুঁকি থাকে। তাই ৬ মাস কিংবা বছরে একবার পেশাদার সার্ভিসিং জরুরি।
আরও পড়ুন
গিজার নাকি হিটিং রড কোনটিতে বিদ্যুৎ খরচ বেশি?
মানুষের জন্য ‘হিউম্যান ওয়াশিং মেশিন’ কীভাবে কাজ করবে?
কেএসকে/এমএস

20 hours ago
5









English (US) ·