বয়স কত হলো ঐশ্বরিয়ার

19 hours ago 6

সৌন্দর্যের সংজ্ঞা সময়ের সঙ্গে বদলায়, কিন্তু কিছু নাম সময়কেও হার মানায়-তেমনই এক নাম ‘ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন’। বলিউডে যিনি পরিচিত শুধু অভিনেত্রী হিসেবে নন, বরং এক অনন্য সৌন্দর্যের প্রতীক হিসেবে। আজ (১ নভেম্বর) তার জন্মদিন। এ অভিনেত্রীর বয়স হলো ৫১ বছর, ৫২ বছরে পা দিয়েছেন তিনি। কিন্তু তাকে দেখে তা বোঝার উপায় নেই! সৌন্দর্য, মাধুর্য আর আত্মবিশ্বাস-সব মিলিয়ে এখনো যেন নব্বই দশকের সেই তরুণী ঐশ্বরিয়া।

কর্ণাটকের মঙ্গলুরুতে জন্ম ঐশ্বরিয়ার। ছোটবেলায় স্বপ্ন ছিল স্থপতি হওয়ার, কিন্তু ভাগ্য লিখেছিল অন্য গল্প। নব্বই দশকের শুরুতে বিজ্ঞাপনচিত্র আর মডেলিং দিয়ে যাত্রা শুরু তার। ১৯৯৪ সালে মিস ওয়ার্ল্ড খেতাব জয় করে রাতারাতি আলোচনায় আসেন তিনি। সেই থেকেই শুরু হয় তারকাখ্যাতির পথচলা।

১৯৯৭ সালে তামিল নির্মাতা মনিরত্নমের ‘ইরুভার’ সিনেমায়তে অভিনয়ের মাধ্যমে বড়পর্দায় অভিষেক। একই বছর বলিউডে আত্মপ্রকাশ ‘ঔর পেয়ার হো গয়া’ সিনেমায়। শুরুটা ছিল খানিক মৃদু, কিন্তু ১৯৯৯ সালে ‘হাম দিল দে চুকে সনম’ তাকে পৌঁছে দেয় বলিউডের প্রথম সারিতে।

এরপর ‘তাল’, ‘দেবদাস’, ‘জোধা আকবর’, ‘গুরু’, ‘ধূম ২’, ‘রেইনকোট’- প্রতিটি সিনেমায় অভিনয়ের নৈপুণ্যে প্রমাণ করেছেন, তিনি কেবল রূপের নয়, প্রতিভারও প্রতীক। বিশেষ করে ‘দেবদাস’-এ পারো চরিত্রে তার অনবদ্য অভিনয় আজও দর্শকদের মনে অমলিন।

ঐশ্বরিয়া বলিউডের সীমা ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন। ‘ব্রাইড অ্যান্ড প্রেজুডিস’, ‘দ্য পিঙ্ক প্যান্থার ২’র মতো হলিউড প্রজেক্টে কাজ করেছেন তিনি। কানের চলচ্চিত্র উৎসবে তিনি দীর্ঘদিন ধরে ভারতের মুখ হয়ে উঠেছেন। তার রেড কার্পেট উপস্থিতি এখন এক ঐতিহ্য।

ঐশ্বরিয়া লরিয়েল প্যারিসের গ্লোবাল অ্যাম্বাসেডর হিসেবেও পরিচিত। পাশাপাশি মানবিক কর্মকাণ্ডেও সক্রিয়। তার প্রতিষ্ঠিত ‘ঐশ্বরিয়া রাই ফাউন্ডেশন’ দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ও অসহায় শিশুদের নিয়ে কাজ করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে।

২০০৭ সালে ঐশ্বরিয়া বিয়ে করেন বলিউড তারকা অভিষেক বচ্চনকে। কিংবদন্তি অমিতাভ বচ্চনের পুত্রবধূ হিসেবে তিনি যোগ দেন বলিউডের সবচেয়ে সম্মানজনক পরিবারগুলোর একটিতে। ২০১১ সালে জন্ম নেয় তাদের কন্যা আরাধ্যা বচ্চন। সংসার, মাতৃত্ব ও ক্যারিয়ার-সবকিছুই তিনি সামলাচ্ছেন সমান দক্ষতায়।

মাতৃত্বের পর কিছুদিন বিরতি নিলেও ঐশ্বরিয়া ফিরে এসেছেন আরও উজ্জ্বল রূপে। ‘জজবা’, ‘সর্বজিত’, ‘অ্যায় দিল হ্যায় মুশকিল’, এবং সাম্প্রতিক ‘পোন্নিয়িন সেলভান’ সিরিজে তার পর্দা-উপস্থিতি দর্শকদের মুগ্ধ করেছে। মণিরত্নমের এই দক্ষিণী কাহিনিতে নন্দিনী চরিত্রে তার উজ্জ্বল উপস্থিতি প্রমাণ করেছে—অভিনয়ে তিনি আগের মতোই অনবদ্য।

ঐশ্বরিয়া শুধু সুন্দর মুখ নয়, বরং এক অনুপ্রেরণার নাম। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, “সৌন্দর্য মানে নিখুঁত হওয়া নয়, বরং নিজের অসম্পূর্ণতাকেও ভালোবাসা।” এই দৃষ্টিভঙ্গিই তাকে আলাদা করে তোলে। তার চোখে মুগ্ধতা, কথায় সংযম, আর আচরণে অনুগ্রহ-সব মিলিয়ে তিনি সৌন্দর্যের এক জীবন্ত প্রতিমূর্তি।

আরও পড়ুন:
ফার্স্ট লেডি ঐশ্বরিয়া রাই!
ঘনিষ্ঠ দৃশ্য করতে গিয়ে কেন চিৎকার করে ওঠেন ঐশ্বরিয়া, আজও রহস্য

ঐশ্বরিয়া এ বছর একান্নতে পা দিয়েছেন, কিন্তু সময় যেন তাকে স্পর্শই করতে পারেনি। সৌন্দর্য ও আত্মবিশ্বাসে তিনি এখনো নতুন প্রজন্মের অনুপ্রেরণা। জন্মদিনে সোশ্যাল মিডিয়ায় শুভেচ্ছার বন্যা বইছে, ভক্তরা বলছেন- “ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন, সময় তোমার কাছে হার মানে।”

বয়স বাড়ছে, কিন্তু দীপ্তি কমছে না-ঐশ্বরিয়া প্রমাণ করেছেন, সত্যিকারের সৌন্দর্য কখনো ম্লান হয় না; তা থেকে যায় চোখে, মননে আর অনুপ্রেরণায়।

এমএমএফ/এমএস

Read Entire Article