২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক রক্তক্ষয়ী দিন। বিএনপি ঘোষিত ‘স্বৈরাচার পতনের এক দফা’ আন্দোলনের দিন ঢাকার রাজপথ পরিণত হয়েছিল রণক্ষেত্রে। চারদিক জুড়ে টিয়ার গ্যাসের শেল, কাঁদানে গ্যাস আর গুলির শব্দে ভরে উঠেছিল রাজধানী।
সেই ভয়াল দিনে পুলিশের গুলিতে এক চোখ হারান পটুয়াখালীর মহিপুরের লতাচাপলী ইউনিয়নের স্বেচ্ছাসেবক দল কর্মী সোহেল মুন্সী। আজও সেই বেদনা বয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি।
সোহেল জানান, যাত্রাবাড়ীতে আন্দোলনে অংশ নেওয়ার সময় হঠাৎ পুলিশের গুলি এসে লাগে তার ডান চোখে। তিনি বলেন, স্বৈরাচার পতনের এক দফা আন্দোলনে গিয়ে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছি, বলেন তিনি। ‘আহত হওয়ার পর সঠিক চিকিৎসা না পাওয়ায় চোখটি নষ্ট হয়ে যায়। হাসপাতালে ভর্তি থাকাকালীন ডিবি সদস্যরা আমাকে তুলে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন করে।’
তার অভিযোগ, আমার ভাইকে ভয় দেখিয়ে জোর করে ৩ লাখ টাকা ও কয়েকটি চেকে সই করানো হয়। চোখের চিকিৎসায় প্রায় ৯ লাখ টাকা ব্যয় করেছি; কিন্তু কোনো নেতাকর্মী পাশে পাইনি। উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতে যেতে চেয়েছিলাম, কিন্তু অর্থের অভাবে পারিনি।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে সোহেল বলেন, ‘যখন গুলিবিদ্ধ হই, মনে হয়েছিল দুই চোখই হারিয়ে ফেলেছি। পাশে কেউ ছিল না, কয়েকজন দলীয় কর্মী আমাকে টিনশেড ঘরে আশ্রয় দিয়েছিলেন। পরে ডিবি পুলিশ আমাকে তুলে নিয়ে ১৭ দিন আটক রাখে। সময়মতো চিকিৎসা না পাওয়ায় চোখটি চিরতরে নষ্ট হয়ে যায়।’
বর্তমানে অসুস্থ চোখ নিয়ে কোনো কাজ করতে পারেন না সোহেল। রোদে নামলেই অসহ্য যন্ত্রণায় ভোগেন। বেড়িবাঁধের বাইরে একটি জরাজীর্ণ ঘরে স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তিনি।
চোখে ব্যথা আর বুকভরা কষ্ট নিয়েও তার একটাই আকুতি, ‘আমার ভালো চোখটি দিয়ে শুধু একবার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেখতে চাই।’

 3 days ago
                        12
                        3 days ago
                        12
                    








 English (US)  ·
                        English (US)  ·