ভোটের পরিবেশ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর শঙ্কা প্রকাশ

1 hour ago 8

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে কয়েকটি রাজনৈতিক দল। বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়ে তারা এ শঙ্কার কথা জানায়।

জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, ‘সবার সহযোগিতা ছাড়া সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। আমরা কোনো সংঘর্ষ চাই না।’

সংলাপে অংশ নেয় বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কংগ্রেস ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি)। এসময় ইসি সচিব আখতার আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

সংলাপে এলডিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী বলেন, ‘আমরা মনে করি এখন পর্যন্ত যথেষ্ট নিরাপত্তা-সংকট বিরাজ করছে। তা শুধু প্রত্যন্ত অঞ্চলে নয়, বাংলাদেশের শহর, বন্দর ও নগরীতেও। কোনো কোনো দল তাদের কর্তৃত্ব এবং বর্তমান অস্তিত্ব প্রমাণ করার জন্য ডাকাত থেকে শুরু করে চিহ্নিত সন্ত্রাসী পর্যন্ত ব্যবহার করছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা নির্বাচন সঠিক সময়ে চাই। তবে ভোটারের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। তাই তফসিল ঘোষণার আগে একটা নিরাপত্তা অপারেশন করা উচিত।’

বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব ইউসুফ সাদেক হক্কানী বলেন, ‘অতীতের নির্বাচনে দেখা গেছে, কালো টাকার প্রভাব বিস্তার এবং হুমকি-ধমকির মাধ্যমে ভোটারদের প্রভাবিত করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে যদি এগুলোর প্রতি সুদৃষ্টি রাখা হয় এবং আগে থেকেই প্রতিহিত করার জন্য প্রোগ্রাম করা হয় তাহলে আমাদের দেশে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন আমরা পেয়ে যাবো। আর যারা দেশের শত্রু তারা যাতে নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতে না পারে সেজন্য আপনাদের সুদৃষ্টি কামনা করছি।’

আরও পড়ুন
সরকার থেকে আনুষ্ঠানিক নির্দেশনা এলেই গণভোটের সিদ্ধান্ত: সিইসি
আট বিভাগে আটদিনে ভোটগ্রহণের প্রস্তাব ইসিতে
আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ আস্থাহীনতা: ইসি আনোয়ারুল

দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান মহিউদ্দিন বলেন, ‘রাজনৈতিক দলের একটা শর্ত নির্বাচন অফিসে আছে, সেটা হচ্ছে ৩৩ ভাগ নারী সদস্য বাধ্যতামূলক। আমরা আগেও দাবি জানিয়েছি, আজকেও দাবি জানাচ্ছি- এটা বিশেষ করে ইসলামি দলগুলোর জন্য কঠিন হয়ে যায়। ৩৩ শতাংশ নারী সদস্য কমিটিতে রাখার এ বিষয়টি আপনারা বিবেচনায় রাখবেন।’

বাংলাদেশ মুসলিম লীগের উপদেষ্টা জহিরুদ্দিন মোহাম্মদ বাবু বলেন, ‘আমরা সঠিক সময়ে নির্বাচন চাই এবং নির্বাচনের পরিবেশ যাতে উন্নত হয় সে ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের যথাসাধ্য চেষ্টা থাকতে হবে।’

এনপিপির চেয়ারম্যান শেখ সালাউদ্দিন সালু বলেন, ‘জামানতের টাকা ৫০ হাজার করা হয়েছে। এটা বুর্জোয়া দলগুলোর পক্ষে দেওয়া সম্ভব। কিন্তু আমাদের মতো দলের পক্ষে কঠিন হয়ে যাচ্ছে। আগে যে ২০ হাজার টাকা ছিল, আমি দাবি করবো জামানত সেই ২০ হাজার টাকাই যেন রাখা হয়।’

বাংলাদেশ কংগ্রেসের চেয়ারম্যান কাজী রেজাউল হোসেন বলেন, ‘বড় দলগুলো নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে। এখনো বিশাল বিশাল মহড়া চলছে। ইসি এগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।’

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুর রব ইউসুফী বলেন, ‘কোনো কমিশনই বলে না তারা নিরপেক্ষতা হারাবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসে তারা আর নিরপেক্ষ থাকে না। এটা আমাদের অতীত ইতিহাস। তবে এ কমিশনের কাছে মানুষের প্রত্যাশা অনেক।’

বর্তমান ইসি ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি না করে নতুন ইতিহাস তৈরি করবে- এমন প্রত্যাশার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটের মতো আরেকটি নির্বাচন চাপিয়ে দিলে তা কমিশনের জন্য কঠিন হয়ে যাবে।

এমওএস/একিউএফ

Read Entire Article