মালয়েশিয়ায় প্রবাসীদের কল্যাণে দূতাবাসের কার্যক্রম আরও সহজ, দ্রুত ও জনবান্ধব করা হবে বলে জানিয়েছেন সেখানে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মঞ্জুরুল করিম খান চৌধুরী।
কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশনের হলরুমে প্রবাসী সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় হাইকমিশনার মঞ্জুরুল এ কথা বলেন। বিভিন্ন জাতীয় ও প্রবাসভিত্তিক গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা বুধবার (২৯ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত এ সভায় অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে হাইকমিশনার মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত বাংলাদেশিদের কল্যাণ, সমস্যা সমাধান, বৈধকরণ কার্যক্রম, শ্রমবাজার, বাণিজ্য সম্প্রসারণ, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক বিনিময়সহ নানা বিষয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, সাংবাদিকরা প্রবাসী সমাজের চোখ ও কান। তাদের দায়িত্বশীল সংবাদ উপস্থাপন প্রবাসীদের বাস্তব চিত্র ও ইতিবাচক ভাবমূর্তি তুলে ধরতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
এসময় সাংবাদিকরা প্রবাসী বাংলাদেশিদের নানা সমস্যা তুলে ধরেন। এর মধ্যে ছিল পাসপোর্ট নবায়নে বিলম্ব, শ্রমিক নিয়োগ প্রক্রিয়ার জটিলতা, কনস্যুলার সেবার সীমাবদ্ধতা, দূতাবাস থেকে তথ্যপ্রবাহের ঘাটতি ইত্যাদি। জবাবে হাইকমিশনার জানান, এসব বিষয়ে দূতাবাসের কার্যক্রম আরও সহজ, দ্রুত ও জনবান্ধব করা হবে।
মঞ্জুরুল করিম বলেন, ‘আমরা চাই প্রত্যেক প্রবাসী নাগরিক যেন হয়রানি ছাড়াই সেবা পান। সেবা কার্যক্রমের মান বাড়াতে এরই মধ্যে বেশকিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এবং তা আরও বিস্তৃত করা হবে।’
হাইকমিশনার আরও বলেন, ‘মালয়েশিয়া বাংলাদেশের অন্যতম বড় শ্রমবাজার। আমরা চাই বৈধ উপায়ে শ্রমিক পাঠানোর প্রক্রিয়াটি আরও স্বচ্ছ ও টেকসই হোক, যাতে প্রবাসীরা নিরাপদে কাজ করতে পারেন এবং দুই দেশের অর্থনীতিই উপকৃত হয়।’
তিনি জানান, প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগের মাধ্যমে শ্রমিকদের বৈধকরণ কার্যক্রমের অগ্রগতি এবং নতুনদের নিয়োগের পথ আরও মসৃণ করতে কাজ চলছে।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক জোট আসিয়ানের সদস্যপদ পেতে বাংলাদেশ কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে কি না-জানতে চাইলে হাইকমিশনার বলেন, আসিয়ান সদস্যপদ একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। বাংলাদেশ এই অঞ্চলের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে কাজ করছে, যা ভবিষ্যতে আরও বিস্তৃত হতে পারে। বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও আঞ্চলিক সহযোগিতার আগ্রহ ভবিষ্যতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলবে।
সাংবাদিকদের উদ্দেশে হাইকমিশনার বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশিদের অর্জন, সফলতা ও ইতিবাচক গল্পগুলো বেশি করে প্রচার করতে হবে। অনেক প্রবাসী নিজ প্রচেষ্টায় ব্যবসা, শিক্ষা ও প্রযুক্তিতে সফল হয়েছেন। এই গল্পগুলো বিশ্বে তুলে ধরলে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে।
মঞ্জুরুল করিম বলেন, ‘দেশের বাইরে থেকে আমরা সবাই বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করছি। আমাদের আচরণ, কাজ ও সংবাদ- সবকিছু মিলেই গড়ে ওঠে দেশের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি।’
হাইকমিশনার সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, প্রবাসীদের কল্যাণে সাংবাদিকদের গঠনমূলক ভূমিকা অমূল্য। তিনি ভবিষ্যতে নিয়মিত এমন মতবিনিময় আয়োজনের আশাবাদ ব্যক্ত করেন, যাতে তথ্য আদান-প্রদান আরও কার্যকর এবং প্রবাসীদের সমস্যার দ্রুত সমাধান সম্ভব হয়।
সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে হাইকমিশনার সৌজন্য বিনিময় করেন এবং সম্মিলিতভাবে প্রবাসী সমাজের উন্নয়ন ও দেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি তুলে ধরার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
এসময় ডেপুটি হাইকমিশনার মোসাম্মাত শাহানারা মনিকাসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আহমাদুল কবির/একিউএফ/এএসএম

1 day ago
8









English (US) ·