মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত চার মূলনীতি সমুন্নত রাখতে হবে

1 day ago 6

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি কমরেড কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত চার মূলনীতি সমুন্নত রাখতে হবে। শোষণ ও বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে বেগবান করতে শ্রমিক, কৃষক, যুব ও নারী সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নামতে হবে।

শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) মিরপুর ঈদগাহ মাঠ সংলগ্ন সেনপাড়ায় বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ঢাকা মহানগর উত্তরের উদ্যোগে এক জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে কমরেড সাজ্জাদ জহির চন্দন এমন মন্তব্য করেন।

সভায় সভাপতিত্ব করেন সিপিবি ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি হাসান হাফিজুর রহমান সোহেল। বক্তব্য রাখেন সিপিবি সভাপতি কমরেড কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও মহানগর উত্তরের সাবেক সভাপতি কমরেড ডা. আহাম্মদ সাজেদুল হক রুবেল, সিপিবি ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক লূনা নূর, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মোতালেব হোসেন, এবং ঢাকা মহানগর কমিটির সদস্য রিয়াজ উদ্দিন।

সভা পরিচালনা করেন সিপিবির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য কমরেড ফেরদৌস আহমেদ উজ্জ্বল।

সিপিবি সভাপতি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত চার মূলনীতি সমুন্নত রাখতে হবে। শোষণ ও বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে বেগবান করতে শ্রমিক, কৃষক, যুব ও নারীসমাজকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নামতে হবে। বামপন্থিদের সরকার গঠন করতে সব দেশিপ্রেমিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তাদের নেতৃত্বেই আগামী দিনের ক্ষমতার লড়াইকে অগ্রসর করতে হবে।

সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক কমরেড রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে যাদের অবস্থান ছিল, আজ তারাই রাষ্ট্র ও সমাজের বিভিন্ন স্তরে পৃষ্ঠপোষকতা পাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে কেবল ক্ষমতার পরিবর্তন নয়, ব্যবস্থার পরিবর্তনই সময়ের দাবি। কমিউনিস্টরা সেই ব্যবস্থা পরিবর্তনের সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, গণতন্ত্রের প্রথম শর্ত হলো নিরপেক্ষ ও সময়োপযোগী নির্বাচন। আগামীকাল থেকেই আমরা জাতীয় নির্বাচনের কাউন্টডাউন দেখতে চাই। সরকারকে দ্রুত নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করতে হবে। কমিউনিস্টরা ক্ষমতায় গিয়ে দুর্নীতি, লুটপাট ও শোষণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা বদলের সংগ্রামকে জনগণের আন্দোলনে রূপ দেবে। কমিউনিস্টরা বিশ্বাস করে, মুক্তির একমাত্র পথ সমাজতন্ত্র। নির্বাচনকে সামনে রেখে জনগণের প্রতি আহ্বান, ব্যবস্থা বদলের লড়াইয়ে কমিউনিস্টদের নির্বাচিত করুন। ডা. সাজেদুল হক এই অঞ্চলে সিপিবির লড়াকু প্রতিনিধি; তাকে সামনে রেখেই মিরপুর ও কাফরুলের প্রতিটি ঘরে সিপিবির বার্তা পৌঁছে যাবে।

সিপিবির ঢাকা মহানগর উত্তরের সাবেক সভাপতি ও সিপিবি ১৫ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী কমরেড ডা. আহাম্মদ সাজেদুল হক রুবেল এ সময় বলেন, বাংলাদেশের জনগণ এখনও অনিশ্চিত যে ফেব্রুয়ারিতে রাজনৈতিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে কি না। কারণ বর্তমান সরকার এখনও সুনির্দিষ্টভাবে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেনি। জনগণ আজ অর্থনৈতিক সংকট, বৈষম্য ও দুর্নীতির শিকার।একদিকে জনগণের ঘাম ঝরানো টাকায় দেশ চলছে, অন্যদিকে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও তাদের দোসররা দেশের সম্পদ লুট করছে।সমুদ্রবন্দর, গ্যাস, বিদ্যুৎ, টেলিযোগাযোগসহ জাতীয় সম্পদ বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে। এটি দেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত। প্রতিটি শ্রমিক, কৃষক, ছাত্র, নারী ও মধ্যবিত্ত নাগরিককে একত্রিত হয়ে সাম্রাজ্যবাদবিরোধী ও পুঁজিবাদবিরোধী আন্দোলনকে জোরদার করতে হবে। এই সনদে সিপিবি ও বামপন্থিরা স্বাক্ষর করেনি, কারণ এতে মুক্তিযুদ্ধের চার মূলনীতি বাতিল করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের মূলনীতিকে মুছে দিয়ে তৈরি এই সনদে সিপিবি স্বাক্ষর করেনি, সামনেও করবে না।

সিপিবি ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক কমরেড লূনা নূর বলেন, বর্তমান সমাজব্যবস্থায় ক্রমবর্ধমান বৈষম্য, বেকারত্ব, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও দমননীতি জনগণকে চরম দুরবস্থায় ফেলেছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন জনগণের মালিকানাভিত্তিক রাষ্ট্র ও অর্থনীতি।

সভায় বিপুলসংখ্যক শ্রমিক, নারী, যুব ও সাধারণ মানুষ অংশ নেন।

এএমএ/এএসএম

Read Entire Article