ছোটবেলায় একদল ব্যবসায়ী আব্দুল গফুর মল্লিকের বাবাকে পরামর্শ দিয়েছিলেন ছেলেকে কোরআন শেখাতে। দুই সিপারা কোরআন মুখস্থ করে হাত পাতলে ভাতের অভাব হয় না। শিশুমনেই সংকল্প করেন কখনোই হাতপাতা ব্যবসা করবেন না।
জন্মান্ধ ও নিঃসন্তান আব্দুল গফুর মল্লিক, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ট্রেনে ট্রেনে নারকেলের নাড়ু ও বাদাম বিক্রি করে সংসার চালাতেন। এসময় কনটেন্ট ক্রিয়েটর মুন্সী এনায়েতের প্রামাণ্যচিত্রে ফুটে ওঠে তার সংগ্রামের কথা।
রাজবাড়ীর বাসিন্দা আব্দুল গফুর মল্লিক যৌবনে অন্যের বাড়িতে নারকেল গাছে উঠে নারকেল নামিয়ে দিয়ে যা ভাগে পেতেন তাই দিয়েই নাড়ু বানিয়ে বিক্রি করতেন। পাঁচ বছর আগেও এই কাজ করতেন তিনি। আস্তে আস্তে গায়ের শক্তি কমে আসায় গাছে ওঠা বন্ধ করলেও নাড়ু বিক্রি করে যাচ্ছিলেন।

খুব ভোরে ঘুম থেকে খাটের নিচ থেকে শিশুদের মতো নারকেল বের করে আনেন। এরপর নিজ হাতে খোসা ছাড়ান এবং নারকেল ভেঙে কুড়ান। এই ঝুঁকিপূর্ণ কাজে কারও সাহায্য নেন না তিনি।
এরপর নাড়ু বানিয়ে স্থানীয় খানখানাপুর রেলস্টেশন থেকে ট্রেনে চড়ে বিক্রি শুরু করেন তিনি। চোখে না দেখা মানুষটি অনেকবার পড়ে গিয়েছেন ট্রেনে উঠতে গিয়ে ও ভেতরে মালামাল নিয়ে হাঁটার সময়।
তার এমন জীবন সংগ্রামের চিত্র উঠে আসে মুন্সী এনায়েতের প্রামাণ্যচিত্রে। সেই প্রামান্যচিত্রে যুক্ত করা তার মোবাইল ব্যাংকিং নম্বরে টাকা পাঠান অসংখ্য মানুষ।

মুন্সী এনায়েতের ফেসবুক পেজে ভিডিওটি ৪০ মিলিয়ন মানুষ দেখেছেন। এর পাশাপাশি অনেকেই ডাউনলোড দিয়ে আপলোড করলে মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়। প্রতি তিন-চার মাস অন্তর কারও না কারও পেজে ভাইরাল হলেই অনেকেই সহযোগিতার হাত বাড়ান। তারপর থেকে আর ট্রেনে চড়তে হয়নি আব্দুল গফুর মল্লিকের।
সম্প্রতি একটি পত্রিকা তাকে নিয়ে নিউজের জন্য আবারও ট্রেনে নাড়ু বিক্রির চিত্রায়ণ করেন। সেটিও মুহূর্তে ভাইরাল হয় এবং সেটি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নজরে আসে। তা নিয়ে আজ (৩০ অক্টোবর) তিনি গফুর মল্লিকের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলবেন এবং সূত্রমতে নগদ অর্থ প্রদান করবেন।
বিএ/জেআইএম

2 days ago
8









English (US) ·