যতই চালাকি করা হোক না কেন, আগে গণভোট তারপর জাতীয় নির্বাচন: তাহের

13 hours ago 8

যতই চালাকি করে সময় নষ্ট করা হোক না কেন, আগে গণভোট তারপর জাতীয় নির্বাচন হতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।

তিনি বলেন, ‘সময়ক্ষেপণ করে লাভ নাই। গণভোট জাতীয় নির্বাচনের আগেই হতে হবে। যতই চালাকি করে সময় নষ্ট করা হোক না কেন, আগে গণভোট তারপর জাতীয় নির্বাচন হতে হবে। নতুবা জনগণ ঐতিহাসিক জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের চেতনায় আবার রাজপথে নেমে আসবে।’

শুক্রবার (৭ নভেম্বর) জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াত আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আবদুল্লাহ তাহের এসব কথা বলেন। তিনি সংকট সৃষ্টি না করে নভেম্বরের মধ্যে গণভোট সম্পন্ন করে জুলাই সনদের আলোকে ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

জামায়াতের নায়েবে আমির বলেন, ‘যারা জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট চায় না তারা ডাকসু নির্বাচনে ভয় পেয়েছে। ডাকসু নির্বাচনে পরাজয়ের পর তারা জাকসু, চাকুস, রাকসু নির্বাচন বন্ধে কত শত ষড়যন্ত্র করেছে তা শিক্ষার্থীর পাশাপাশি দেশবাসীও দেখেছে। তারা বুঝতে পারছে জাতীয় নির্বাচনের আগে যদি স্থানীয় সরকার নির্বাচন হয় তাহলে পরাজয়ের ভরাডুবি খেতে হবে। সেজন্য তারা জাতীয় নির্বাচনে আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের যেভাবে বিরোধিতা করেছে, একইভাবে গণভোটের বিরোধিতা করছে।’

সিপাহি-জনতার বিপ্লব আর ছাত্র-জনতার বিপ্লব একই সূত্রে গাঁথা উল্লেখ করে আবদুল্লাহ তাহের জানান, সিপাহি-জনতার বিপ্লব পরবর্তী বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে জিয়াউর রহমান নিজের রাজনৈতিক স্বার্থে হলেও জাতীয় ঐক্যের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন।

আরও পড়ুন
মির্জা ফখরুল: ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন হতে হবে, অন্যথায় মানুষ মেনে নেবে না
জুলাই সনদে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ থাকবে না: নাহিদ ইসলাম
জামায়াত নেতা নজরুল: বাংলাদেশপন্থা ও ইসলামপন্থার সম্মিলিত প্রয়াসে নতুন দেশ গড়তে হবে

জামায়াতের এ নেতা বলেন, ‘আমরা বলতে চাই না কিন্তু আমাদের শুনতে হয়, আজকের বিএনপি সেই জিয়াউর রহমানের বিএনপি নয়। জনগণের আস্থাশীল হতে হলে আজকের বিএনপিকে জিয়াউর রহমানের বিএনপি হতে হবে। জিয়াউর রহমানের সময় বিএনপি ছিল বড় দল, আজ সেই জায়গায় অবস্থান করে নিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা জিয়াউর রহমানের অনুসারীরা তার আদর্শ ভুলে গেছে। যার কারণে তারা এখন গণতন্ত্র চর্চা করে না, মানুষের সেন্টিমেন্ট তারা বুঝতে পারছে না, বুঝতে চেষ্টাও করছে না। তারা সংস্কার চায় না। তাদের দলের স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য যিনি সামরিক বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর তিনি বলেছেন সংস্কার তারা চায় না। কিন্তু আপনারা না চাইলেও জনগণ চায়। জনগণের সেন্টিমেন্ট বুঝে রাজনীতি না করলে আওয়ামী লীগের মতোই পরিণতি হতে পারে।’

শেখ মুজিবুর রহমান প্রসঙ্গে আবদুল্লাহ তাহের বলেন, ‘শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার আগে এ দেশের জনগণের কাছে জনপ্রিয় ছিলেন। কিন্তু স্বাধীনতা পরবর্তী তিনি যখন ক্ষমতা গ্রহণ করেন তারপর থেকে তিনি জনপ্রিয়তা হারাতে শুরু করেন। গুড গভর্ন্যান্স দিতে না পারায় ক্ষমতা গ্রহণের দিন থেকেই শেখ মুজিবুর রহমানের জনপ্রিয়তা নষ্ট হতে শুরু করে। শেখ মুজিবুর রহমান গুড ভাষণ দিতে পারলেও গুড শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। তিনি রাষ্ট্র শাসনের পরিবর্তে রাষ্ট্রের জনগণকে শোষণ করেছেন। বাকশাল কায়েম করে রক্ষীবাহিনী দিয়ে জনগণের ওপর জুলুম নির্যাতন চালিয়েছেন।’

শেখ মুজিবের মৃত্যুর পর তার দলীয় নেতারাও আওয়ামী লীগ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন উল্লেখ করে জামায়াতের এ নেতা বলেন, ‘পরবর্তীতে জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতি হয়ে আওয়ামী লীগকে আবারও রাজনীতিতে পুনবার্সনের সুযোগ দেন।

তিনি মসিউর রহমান যাদু মিয়া, শাহ আব্দুল আজিজকেও মন্ত্রিসভায় স্থান দিয়েছেন। একাত্তরে তাদের কী ভূমিকা ছিল দেশবাসী জানে, আমরা বলতে চাই না। তবে জিয়াউর রহমান চেয়েছেন সবাইকে নিয়ে ঐকমত্যের একটি সরকার গঠনের মধ্য দিয়ে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করতে। জিয়াউর রহমানের সেই আদর্শ আজকের বিএনপি চর্চা করে না।’

আরএএস/একিউএফ/এএসএম

Read Entire Article