রংপুরে মোটরসাইকেল চোর সন্দেহে যুবককে পিটিয়ে হত্যা

8 hours ago 6

রংপুরের মিঠাপুকুরে মোটরসাইকেল চোর সন্দেহে সোহেল মিয়া (২৭) নামে এক যুবককে দুদিন আটকে রেখে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।

এর আগে বুধবার (২৯ অক্টোবর) রাতে জিম্মিদশা থেকে উদ্ধারের পরপরই তার মৃত্যু হয়। নিহত সোহেল মিয়ার দুটি শিশু সন্তান (এক ও তিন বছর বয়সি) রয়েছে।

সোহেল উপজেলার বড়বালা ইউনিয়নের পূর্ব বড়বালা (ভোলার পাতার) গ্রামের আজাদুল হক ওরফে ক্যাতা মিয়ার ছোট ছেলে।

পরিবারের লোকজন জানান, গত সোমবার (২৭ অক্টোবর) বিকেলে বড়বালা ইউনিয়ন পরিষদের গ্রামপুলিশ সদস্য মনারুল ইসলাম বাড়ি থেকে সোহেলকে ডেকে স্থানীয় বালুয়া বাজারে নিয়ে যান। সেখানে কয়েকজন যুবক তাকে মারধর করে জোরপূর্বক মোটরসাইকেলে তুলে মিলনপুর গ্রামের ইউপি সদস্য আশরাফুল ইসলামের বাড়িতে নিয়ে যায়। এরপর আশরাফুল তার ভাতিজি জামাতার মোটরসাইকেল চুরির ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সোহেলকে নিজের বাড়িতে দুদিন আটকে রেখে নির্যাতন চালান।

একপর্যায়ে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে বুধবার রাত ১০টার দিকে স্থানীয় হাবিবুর রহমানের মাধ্যমে সোহেলের বাবা-মাকে ডেকে পাঠানো হয়। তখন সাদা স্ট্যাম্পে জোরপূর্বক মুচলেকা নিয়ে সোহেলকে হস্তান্তর করা হয়। এর কিছুক্ষণ সোহেল তিনি মারা যান।

নিহতের বাবা আজাদুল হক (ক্যাতা মিয়া) বলেন, আমার ছেলেকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করা হয়েছে। তাকে এমনভাবে পিটিয়েছে যাতে মৃত্যু হয়। যারা এটা করেছে, তারা সবাই প্রভাবশালী।

আজাদুল আরও বলেন, একদিকে আশরাফুল মেম্বার ছেলেকে নির্যাতন করেছে, অন্যদিকে গ্রামপুলিশ আর হাবিবুর নামে এক যুবক ছেলেকে ছাড়ানোর নামে টাকাও দাবি করেছিল। আমার ছেলে যদি অপরাধী হতো, তাহলে পুলিশে দিত। আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই।

অভিযুক্ত ইউপি সদস্য আশরাফুল ইসলাম বলেন, আমার জামাইয়ের মোটরসাইকেল চুরির ঘটনায় সোহেলকে ধরে আনতে বলেছি, এটা সত্য। তবে সে কীভাবে মারা গেলো জানি না। আমরা শুধু হালকা শাসন করেছি। তার পরিবারের জিম্মানামাও আমাদের কাছে আছে।

মিঠাপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরে আলম সিদ্দিকী বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠায়। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করেছে। জড়িতদের গ্রেফতারে চেষ্টা অব্যাহত আছে।

জিতু কবীর/এমএন/এমএস

Read Entire Article