রপ্তানির তুলনায় আমদানি বেশি হওয়ায় বাড়ছে বাণিজ্য ঘাটতি

4 hours ago 6

রপ্তানির তুলনায় দ্রুতগতিতে আমদানি ব্যয় বাড়ায় দেশের বাণিজ্য ঘাটতি আরও বিস্তৃত হয়েছে। এর প্রভাবে বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবও ঋণাত্মক অবস্থায় পড়েছে। খাত সংশ্লিষ্টদের মতে, এই ধারা অব্যাহত থাকলে টাকার মান ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে চাপ সৃষ্টি হতে পারে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের চলতি হিসাবের ভারসাম্য (ব্যালান্স অব পেমেন্ট) সংক্রান্ত সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ থেকে এক হাজার ১০৮ কোটি ৭০ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। একই সময়ে আমদানি ব্যয় দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৬৮০ কোটি ডলার, ফলে বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৫৭১ কোটি ২০ লাখ ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে এই ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৪৬৪ কোটি ডলার।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে চলতি হিসাব উদ্বৃত্ত থাকলেও চলতি অর্থবছরে তা ৪ কোটি ৮০ লাখ ডলারের ঘাটতিতে পরিণত হয়েছে। তবে সামগ্রিক লেনদেন ভারসাম্যে (ওভারঅল ব্যালান্স) কিছুটা উন্নতি দেখা গেছে। গত বছরের একই সময়ে যেখানে ১৪৮ কোটি ডলারের ঘাটতি ছিল, সেখানে এ বছর জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে ৮৫ কোটি ৩০ লাখ ডলারের উদ্বৃত্ত রেকর্ড হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, ‘রমজান সামনে রেখে ভোগ্যপণ্য আমদানি বেড়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসের দ্বিতীয়ার্ধে রমজান শুরু হওয়ায় আগে থেকেই এলসি খোলা হয়েছে। ফলে রপ্তানির তুলনায় আমদানি বেশি হওয়ায় চলতি হিসাব ও বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েছে।’

তিনি আরও জানান, সব ধরনের আমদানি নেতিবাচক নয়—উৎপাদনমুখী কাঁচামালও আমদানি হয়েছে, যা পরে রপ্তানি বা দেশীয় বাজারে বিক্রির মাধ্যমে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স প্রবাহে ইতিবাচক প্রবণতা দেখা গেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) প্রবাসীরা ৭ দশমিক ৫৯ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৫ দশমিক ৯ শতাংশ বেশি। গত বছর একই সময়ে রেমিট্যান্স ছিল ৬ দশমিক ৫৪ বিলিয়ন ডলার।

এদিকে, প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগ (এফডিআই) বাড়লেও শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে এফডিআই এসেছে ৩১ কোটি ৮০ লাখ ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১১ কোটি ৪০ লাখ ডলার। তবে শেয়ারবাজারে বিদেশি পোর্টফোলিও বিনিয়োগ ঋণাত্মক অবস্থায় আছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে ৫০ লাখ ডলারের বিনিয়োগ এলেও চলতি সময়ে নিট বিনিয়োগ ঋণাত্মক হয়ে দাঁড়িয়েছে ৪ কোটি ২০ লাখ ডলারে।

ইএআর/এমএমকে

Read Entire Article