রাজধানীতে বাংলা এডিশন টিমের ওপর হামলা

2 days ago 2

রাজধানীর বাড্ডায় বাংলা এডিশনের এক সাংবাদিক ও ক্যামেরাপারসনের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (২৫ অক্টোবর) সাঁতারকুলের মগরাদিয়া মাকান হাউজিংয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হন তারা।

ওইদিন ভিডিও ফুটেজ ও তথ্য সংগ্রহের সময় প্রথমে চিত্রসাংবাদিক দেলোয়ার হোসেনকে বেধড়ক মারধর, বুকে লাথি ও কিল-ঘুষি দিয়ে আহত করা হয়। পরে তার ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়ে ভেঙে ফেলা হয়। বর্তমানে তিনি স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

হামলার প্রতিবাদ করায় বাংলা এডিশনের বিশেষ প্রতিনিধি মৃদুল ইসলামের ওপরও হামলা চালানো হয় এবং তাকে চরমভাবে হেনস্তা করা হয়। একপর্যায়ে মৃদুলকেও মারধর করে অবরুদ্ধ করে রাখে হামলাকারীরা।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বাড্ডা থানার পুলিশ। একপর্যায়ে অভিযুক্ত মোশাররফ হোসেনসহ কয়েকজন হামলাকারীকে আটক করা হয় এবং থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তবে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে কয়েকজন হামলাকারী পালিয়ে যায়।

এ ঘটনায় বাংলা এডিশন কর্তৃপক্ষ বাড্ডা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)-এর সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোশাররফ হোসেনসহ অন্তত ৫০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তি।

অভিযোগে বলা হয়, মগরাদিয়া এলাকায় ‘রিয়াজুল জান্নাহ ইসলামিয়া মাদ্রাসা’ প্রতিষ্ঠা করেছেন মোশাররফ হোসেন, যার আড়ালে অন্তত ৪০টি প্লট দখল করে রেখেছেন তিনি। স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, প্রতিবাদ জানালে মোশাররফ প্রশাসনের ভয় দেখিয়ে এবং তার পালিত সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত ভুক্তভোগীরা মোশাররফের অবৈধ দখল ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বর্ণনা দিলে তার পালিত সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়।

চিত্রসাংবাদিক দেলোয়ার হোসেন এবং গাড়িচালক হাসেম এ হামলার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন।

ড. মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি আইডিআরএ’র চেয়ারম্যান থাকাকালে শত কোটি টাকার দুর্নীতি করেছেন। দুদকও তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চালাচ্ছে এবং তার বিপুল অবৈধ সম্পদ অর্জনের উৎস অনুসন্ধান করছে।

এদিকে, মাকান হাউজিং প্রকল্পের আওতায় ‘কোয়ান্টাম প্লাস ফাউন্ডেশন’ নামের প্রতিষ্ঠানটি নিয়ন্ত্রণ করেন মোশাররফ। অভিযোগ রয়েছে, এখানে ৮৬টি প্লটের মালিক তিনি এবং এই ফাউন্ডেশনের নামে চালানো হচ্ছে নানা অনিয়ম।

দুটি প্রতিষ্ঠান জয়েন্ট স্টক থেকে লাইসেন্স নেওয়া হলেও বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করেছেন মোশাররফ নিজে। মাকাম হাউজিংয়ের ভিতরে ‘কোয়ান্টাম স্কুল অ্যান্ড কলেজ’ নামের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি ৫০ বিঘা জমির ওপর গড়ে তোলা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, অনলাইনে কেবল নামের ছাড়পত্র নিয়েই চালানো হচ্ছে ফাউন্ডেশনটি, যা নিবন্ধনের বৈধ প্রমাণ নয়। তার প্রতিষ্ঠিত এসব প্রকল্প তদারকির দায়িত্বে রয়েছেন এলাকার কিছু লোকজন ও তার পালিত সন্ত্রাসীরা।

এছাড়া মোশাররফের বিরুদ্ধে একটি বেসরকারি বিমা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুদক। একই সঙ্গে নামে-বেনামে বিপুল সম্পদ অর্জনের উৎস অনুসন্ধানও চলছে। প্রাথমিক অনুসন্ধানে মোশাররফ হোসেনের বিপুল সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুদক।

Read Entire Article