লিবিয়া উপকূলে নৌকাডুবিতে নিখোঁজ ৪২ অভিবাসনপ্রত্যাশী

7 hours ago 5

লিবিয়া উপকূলে নৌকাডুবিতে নিখোঁজ রয়েছেন ৪২ অভিবাসনপ্রত্যাশী। তাদের সবার মৃত্যু হয়েছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)। নিখোঁজদের মধ্যে ২৯ জন সুদান, আটজন সোমালিয়া, তিনজন ক্যামেরুন ও দুজন নাইজেরিয়ার নাগরিক।

আইওএম জানায়, রাবারের তৈরি নৌকাটিতে মোট ৪৯ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী ছিলেন। গত ৩ নভেম্বর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর জুয়ারা থেকে যাত্রা শুরু করার প্রায় ছয় ঘণ্টা পর নৌকাটি ভূমধ্যসাগরে ডুবে যায়।

সংস্থাটি জানিয়েছে, ছয়দিন সাগরে ভেসে থাকার পর গত ৮ নভেম্বর সাতজনকে উদ্ধার করে লিবিয়ার উদ্ধারকারী দল।

আরও পড়ুন>>
ভূমধ্যসাগরে নৌকা ডুবে ৩ অভিবাসনপ্রত্যাশী নিহত, নিখোঁজ বহু
ভূমধ্যসাগর থেকে নারী-শিশুসহ ৮৫ অভিবাসনপ্রত্যাশী উদ্ধার
ভূমধ্যসাগর থেকে ৩০ বাংলাদেশিসহ উদ্ধার ৫১, নিহত ১০

আইওএম বলছে, এ দুর্ঘটনা চলতি বছর ভূমধ্যসাগরের মধ্যাঞ্চলীয় রুটে প্রাণঘাতী অভিবাসনযাত্রার সর্বশেষ নজির। শুধু এ বছরই ইউরোপে পৌঁছানোর চেষ্টায় এক হাজারেরও বেশি মানুষ সাগরে প্রাণ হারিয়েছেন।

সংস্থাটি এক বিবৃতিতে জানায়, এই দুর্ঘটনা আবারও প্রমাণ করলো, নিরাপদ ও নিয়মিত অভিবাসনপথ প্রসারিত করা, আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদার করা এবং কার্যকর অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান নিশ্চিত করার জরুরি প্রয়োজন রয়েছে।

এ ঘটনার মধ্যে দিয়ে লিবিয়ার কোস্টগার্ড ও কর্তৃপক্ষের আচরণ নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। দীর্ঘদিন ধরে তারা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ও নির্যাতনের অভিযোগের মুখে রয়েছে।

মানবাধিকার সংস্থা সি-ওয়াচের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৬ থেকে ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত লিবিয়ার কোস্টগার্ড অন্তত ৬০টি সহিংস নৌ-ঘটনায় জড়িত ছিল। এসব ঘটনায় তারা শরণার্থী বহনকারী নৌকায় গুলি চালিয়েছে, উদ্ধারকাজে বাধা দিয়েছে এবং সাগরে মানুষ ফেলে রেখে গেছে।

সম্প্রতি ইউরোপের ১৩টি উদ্ধার সংস্থা লিবিয়ার সামুদ্রিক উদ্ধার সমন্বয় কেন্দ্রের সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত করেছে। তারা অভিযোগ করেছে, লিবিয়ার কোস্টগার্ড আসলে ‘ইইউ-অর্থায়িত সশস্ত্র মিলিশিয়া নেটওয়ার্ক’, যারা অভিবাসীদের ওপর হামলা চালায়।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের সীমান্ত সংস্থা ফ্রনটেক্সের তথ্যমতে, জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত চলতি বছর ভূমধ্যসাগরের মধ্যাঞ্চলীয় রুট দিয়ে ৫৮ হাজারেরও বেশি মানুষ ইউরোপে যাওয়ার চেষ্টা করেছে।

জাতিসংঘ বলেছে, বর্তমানে লিবিয়ায় আশ্রয়প্রার্থী ও শরণার্থীর সংখ্যা প্রায় ৮ লাখ ৬৭ হাজার। দেশটি এখন ইউরোপমুখী অভিবাসনপ্রত্যাশীদের প্রধান ট্রানজিট রুটে পরিণত হয়েছে।

অধিকারকর্মীরা জানিয়েছেন, লিবিয়ার অভ্যন্তরে অভিবাসী ও অভিবাসনপ্রত্যাশীরা নিয়মিতভাবে নির্যাতন, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন।

সূত্র: আল-জাজিরা
কেএএ/

Read Entire Article