শ্রমজীবীদের প্রত্যাশিত দেশ গঠনে জামায়াত বদ্ধপরিকর

13 hours ago 5

শ্রমজীবী মানুষ এদেশের সামাজিক রাষ্ট্রীয় শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছে। তাদের ওপর চলা জুলুম নির্যাতন অবসান করে একটি শোষণমুক্ত দেশ গঠনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বদ্ধপরিকর। এমন মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত চট্টগ্রাম-১০ আসনের প্রার্থী ও মহানগর জামায়াতের সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক কাউন্সিলর অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান হেলালী।

শনিবার (১ নভেম্বর) রাতে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন খুলশী থানার সেগুনবাগান হালকা মোটরযান সেক্টরের উদ্যোগে নির্বাচনী শ্রমিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সেক্টর সভাপতি নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক ও নগর সভাপতি এস এম লুৎফর রহমান।

অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান হেলালী বলেন, শ্রমিকের দুঃখ-দুর্দশা দূরীকরণের জন্য প্রচলিত শ্রমনীতি পরিবর্তন করতে হবে। অবিলম্বে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ইসলামি শ্রমনীতি বাস্তবায়ন করতে হবে। ইসলামি শ্রমনীতি বাস্তবায়িত হলে শ্রমজীবী মানুষের ভাগ্যের চাকা স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিবর্তিত হয়ে যাবে। ইসলাম একটি আদর্শিক জীবন ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থায় সমাজের সব শ্রেণি-পেশার মানুষের প্রতি সুবিচার করা হয়েছে। কারও প্রতি জুলুম নির্যাতন বা অন্যায় চাপিয়ে দেওয়া হয়নি। সুতরাং ইসলামি শ্রমনীতি বাস্তবায়িত হলে মালিক বা অন্য কোনো পক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে না বরং সবাই লাভবান হবে।

তিনি বলেন, শ্রমিকরা এদেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি। ঠিক একইভাবে তাদের ভোটে দেশের রাষ্ট্রক্ষমতা নির্ধারিত হয়। শ্রমজীবী মানুষরা যদি তাদের রায় সৎ ও যোগ্য মানুষের পক্ষে দেন তাহলে এদেশে এক নতুন বিপ্লবের সূচনা ঘটবে। আমরা প্রত্যাশা করছি এবারের বিপ্লব হবে শ্রমিকদের প্রত্যাশিত বিপ্লব। শ্রমিকরা তাদের সুচিন্তিত রায় মার্কা দেখে নয়, প্রার্থী দেখে দেবেন। ইনশাআল্লাহ শ্রমিকদের রায় নিয়েই বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আগামীর রাষ্ট্র গঠনে এগিয়ে যাবে।

এস এম লুৎফর রহমান বলেন, শ্রমিকদের মজুরি ও অধিকার হারিয়ে যায় দুর্নীতি ও লুটপাটের কারণে। সীমাহীন অবাধ দুর্নীতি শুধু দেশকে ডোবায় না, বরং কোটি কোটি শ্রমিক জনতাকে অনাহার, অর্ধাহারের দিকে ঠেলে দেয়। শ্রমিকদের জীবনে সুখ শান্তি কেড়ে নেয়। শ্রমিকরা বঞ্চিত হয় তাদের নাগরিক ও মৌলিক অধিকার থেকে। কিন্তু এখন সময় এসেছে সব ধরনের অন্যায়, দুর্নীতি ও লুটপাট রুখে দেওয়ার। আজকে শ্রমিকদের কণ্ঠস্বর উঁচু করতে হবে সব ধরনের টেম্পু ও বাসস্ট্যান্ড দখলের বিরুদ্ধে। কথা বলতে হবে পথে-ঘাটে অবৈধ চাঁদার বিরুদ্ধে। যারা চাঁদাবাজি করে, টেন্ডারবাজি করে তাদের জোরালোভাবে প্রত্যাখ্যান করতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠন করা। সমৃদ্ধ দেশ গঠনের পূর্বশর্ত হচ্ছে দুর্নীতি ও লুটপাট বন্ধ করা। যাদের জীবনের সকাল শুরু হয় চাঁদাবাজি করে তাদের দিয়ে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে দুর্নীতি বন্ধ করা সম্ভব না। এক্ষেত্রে আমাদের সেসব প্রার্থীদের বিজয়ী করতে হবে যারা ব্যক্তিগত জীবনে সৎ ও পরিচ্ছন্ন ব্যক্তিত্বের অধিকারী। যারা তাদের সততা ও যোগ্যতার পরিচয় দিয়ে এরইমধ্যে সমাজ ও রাষ্ট্রে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন তাদেরকে বিজয়ী করতে হবে। ইনশাআল্লাহ আগামী নির্বাচনে কোনো পেশীশক্তি অথবা দুষ্কৃতিকারীরা যোগ্য প্রার্থীদের বিজয় ঠেকাতে পারবে না। শ্রমজীবী মানুষরা প্রতিটা ভোটকেন্দ্রে প্রহরীর ভূমিকা পালন করে যোগ্য প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত করবে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন চট্টগ্রাম মহানগরীর সহ-সভাপতি মকবুল আহমদ ভুঁইয়া, বাংলাদেশ রেলওয়ে এমপ্লয়িজ লিগের কার্যকরী সভাপতি সেলিম পাটোয়ারী, ফেডারেশন মহানগর ট্রেড ইউনিয়ন সম্পাদক মাওলানা জাহাঙ্গীর আলম, হালকা মোটরযান সেক্টরের সভাপতি কামাল উদ্দিন, সিএনজি সেক্টর উত্তরের সভাপতি মো. বশির, শ্রমিক নেতা জাহাঙ্গীর, মাসুদ রানা, রতন মিয়া প্রমুখ।

এমআরএএইচ/এএমএ/জেআইএম

Read Entire Article