কাজের চাপে হয়তো রাতটা একটু দেরিতে ঘুমিয়েছেন। ভোরে ঘুম থেকে উঠে দেখলেন নাক বন্ধ, ঠিকমতো শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। তেমন ঠান্ডা লাগেনি, জ্বরও নেই। তবুও সকালবেলায় নাক বন্ধ থাকার কারণে প্রচণ্ড অস্বস্তি অনুভব করতে হয়।
দিনভর এই সমস্যা ততটা অনুভূত হয় না, কিন্তু ঘুম থেকে ওঠার পর নাক বন্ধ থাকা অনেকেরই পরিচিত অভিজ্ঞতা। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, সাধারণ সর্দি-ঠান্ডা থেকেও এমন সমস্যা হতে পারে, তবে তা সাধারণত কয়েক দিনের মধ্যেই সেরে যায়।
কিন্তু শীত, গ্রীষ্ম বা বর্ষা-ঋতু বদল হোক বা না হোক, সব সময় একই সমস্যায় ভোগেন? তাহলে এটি সাধারণ ঠান্ডা নয় বরং অ্যালার্জিক রাইনাইটিসের লক্ষণ হতে পারে। এমন অবস্থায় নিয়মিত পরিচর্যা এবং সঠিক চিকিৎসা জরুরি, না হলে দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা তৈরি হতে পারে।
সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরই অস্বস্তির কী কারণ
সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর নাকবন্ধ থাকার পেছনে মূলত সাইনাসের প্রদাহ দায়ী। রাতে ঘুমের মধ্যে নাকে জমে থাকা মিউকাস বাড়তে থাকে, সাইনাস গহ্বরে তা জমে নাসারন্ধ্র ফুলে যায়। একই সঙ্গে নাক ও তার আশপাশের অংশে রক্ত চলাচলে পরিবর্তন আসে। ফলে ঘুম থেকে উঠেই নাক বন্ধ, ভারী লাগা বা শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া খুবই স্বাভাবিক ঘটনা।
চিকিৎসকদের মতে, এর সঙ্গে ঠান্ডা লাগারও সম্পর্ক রয়েছে। মূলত দুই ধরনের কারণে এই সমস্যা বেশি প্রকট হয়ে ওঠে-
১. অ্যালার্জিক রাইনাইটিস
যখন ঘরের ধুলাবালি, বিছানার ধুলা, পোষা প্রাণীর লোম বা ছত্রাকের মতো জিনিসে অ্যালার্জি হয়। যাদের অ্যালার্জি আছে, তাদের সকালে নাকবন্ধ হওয়া খুব স্বাভাবিক।
২. নন-অ্যালার্জিক রাইনাইটিস
যা ঠান্ডা-গরমের হঠাৎ পরিবর্তন, আর্দ্রতার ওঠানামা, তীব্র গন্ধ, ধোঁয়া বা দূষণের কারণে হয়। তখন নাকে রক্ত চলাচলের ধরন বদলে যায় এবং নাক বন্ধ হয়ে যায়।
সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে যা করবেন-
১. পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন
ঘরের বালিশ, চাদর, কম্বল, গদি নিয়মিত ধুয়ে পরিষ্কার রাখুন। ধুলামুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করুন। পোষা প্রাণীর লোমে অ্যালার্জি হলে তাদের থেকে দূরত্ব রাখুন।
২. স্যালাইনের পানি দিয়ে নাক পরিষ্কার করুন
ঘুম থেকে ওঠার পর ও ঘুমানোর আগে স্যালাইনের পানি দিয়ে নাসাপথ ধুয়ে নিন। এতে ধুলা, জীবাণু ও জমে থাকা মিউকাস পরিষ্কার হয়।
৩. স্টেরয়েড নেজাল ড্রপ ব্যবহার করুন
নাকের প্রদাহ ও ফোলাভাব কমাতে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী স্টেরয়েডযুক্ত নেজাল স্প্রে বা ড্রপ ব্যবহার করতে পারেন।
৪. অ্যান্টিহিস্টামিন সেবন করুন
অ্যালার্জি যদি মূল কারণ হয়, তবে চিকিৎসকের নির্দেশে অ্যান্টিহিস্টামিন জাতীয় ওষুধ খেতে হবে। এতে উপসর্গ নিয়ন্ত্রণে আসে।
সূত্র: হেলথ লাইন, মায়ো ক্লিনিক, হিন্দুস্তান টাইমস
আরও পড়ুন:
ডায়াবেটিস রোগীর সকালের রুটিন কেমন হওয়া উচিত
দুপুর হলেই ঘুম পাওয়ার আসল কারণ মিলল গবেষণায়
এসএকেওয়াই/এমএস

2 days ago
4








English (US) ·