একটি স্বাস্থ্যকর অভ্যাস আপনার পুরো জীবনযাপন ও শারীরিক অবস্থায় পরিবর্তন আনতে পারে। সুস্থ থাকতে অনেকে সুষম খাবার খান, নিয়মিত ব্যায়াম করেন, আবার কেউ কেউ প্রতিদিন ১০ হাজার পা হাঁটার লক্ষ্য রাখেন। তবে জানলে অবাক হবেন, একটি সহজ অভ্যাসই পারে আপনার শরীর ও মানসিক স্বাস্থ্য আরও ভালো রাখতে।
আমাদের গ্রীষ্মপ্রধান দেশে গরমের সময়ে অনেকেই দিনের বড় অংশ ঘরের ভেতর কাটান, কেউবা সারাদিন এয়ার কন্ডিশনারের ভেতরে থাকেন। ফলে শরীর পর্যাপ্ত রোদ পায় না। অথচ চিকিৎসকদের মতে, সূর্যের আলো শরীরের জন্য এক প্রাকৃতিক ওষুধের মতো। প্রতিদিন সকালে ৫ থেকে ১০ মিনিট সূর্যের আলোতে থাকলে শরীর সুস্থ থাকে ও মনকে সতেজ হয়।
সকালের রোদ শরীরে ভিটামিন ডি তৈরি করে, যা হাড়ের দৃঢ়তা বৃদ্ধি করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিন সকালে কিছুটা সময় রোদে থাকা জরুরি।
আসুন জেনে নেওয়া যাক সকালের রোদ শরীরের কী কী উপকার করে
১. কর্টিসলের মাত্রা বৃদ্ধি করে
সকালের সূর্যের আলো শরীরে কর্টিসলের মাত্রা প্রাকৃতিকভাবে বাড়িয়ে তোলে। ফলে দিনের শুরুতে সতেজ ও মনোযোগী হতে সাহায্য করে। কর্টিসল একটি গুরুত্বপূর্ণ হরমোন, যা শরীরের শক্তি উৎপাদন বাড়ায় এবং মস্তিষ্ককে সক্রিয় রাখে। কর্টিসল বাড়াতে সারাদিন কাজের প্রতি একাগ্রতা বৃদ্ধি পায়, মনোযোগ ধরে রাখা সহজ হয়।
২. সেরোটোনিন নিঃসরণ বৃদ্ধি করে
সকালের সূর্যের আলো মস্তিষ্কে সেরোটোনিন নামক হরমোনের নিঃসরণ বাড়ায়, যা মনের ভালো থাকার সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত। পর্যাপ্ত সেরোটোনিন আপনাকে সারাদিন আরও প্রফুল্ল, শান্ত ও ইতিবাচক রাখে। এটি মুড সুইং কমায়, মনোযোগ বাড়ায় এবং মানসিক ক্লান্তি বা হতাশার অনুভূতি দূর করতে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিন সকালে কয়েক মিনিট রোদে থাকা মনের জন্য এক প্রাকৃতিক থেরাপির মতো কাজ করে।
৩. মেলাটোনিন নিঃসরণে সাহায্য করে
সকালে সূর্যের আলো শরীরের সার্কাডিয়ান সাইকেল (দেহের নিজস্ব ঘড়ি) ঠিক রাখতে সাহায্য করে। নিয়মিত সূর্য রোদের সংস্পর্শে থাকা ঘুমের চক্রকে সঠিক রাখে এবং রাতে ঘুমানোর আগে মেলাটোনিন হরমোনের নিঃসরণকে উৎসাহিত করে। এর ফলে ঘুম হয় আরও গভীর ও শান্ত, যা সারাদিনের সতেজতা ও কর্মক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
প্রতিদিন সকালে ১০ মিনিট রোদে থাকলে আপনার শরীর ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য যথেষ্ট। মাত্র ৫ থেকে ১০ মিনিটের সংক্ষিপ্ত এই সময়ও শরীরে ভিটামিন ডি উৎপাদন, কর্টিসল হরমোনের সঠিক মাত্রা, সেরোটোনিন এবং মেলাটোনিন নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। নিয়মিত এই অভ্যাস আপনাকে রাখে সতেজ, মনোযোগী।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস
আরও পড়ুন
ঘুমানোর আগে ধূমপানে বাড়ছে অনিদ্রা ও হৃদরোগের ঝুঁকি
ডেঙ্গু নাকি চিকুনগুনিয়া, কীভাবে বুঝবেন
এসএকেওয়াই/জিকেএস

1 week ago
13









English (US) ·