সিলেট-৪ আসনে নতুন চ্যালেঞ্জে আরিফুল

2 hours ago 5

সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী নানা বিষয় নিয়ে আলোচনায় থাকেন। এবারও বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে তিনি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। সিলেট-১ আসনে মনোনয়ন চেয়েও পাননি। 

পরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বুধবার (৫ নভেম্বর) নিজ বাসায় ডেকে নিয়ে তার অভিমান ভাঙান। ভার্চুয়ালি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান উপস্থিত থেকে তাকে দেওয়া হয় ফাঁকা রাখা সিলেট-৪ আসনটি।

এ নিয়ে বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) বিকেলে কালবেলার সঙ্গে কথা বলেন আরিফুল হক চৌধুরী।

তিনি বলেন, ‘দলের উচ্চপর্যায় থেকে সিলেট-১-এর পরিবর্তে বেশ কয়েকবার সিলেট-৪ আসনে প্রার্থী হওয়ার জন্য বলা হয়েছিল। আমি রাজি হইনি। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আগে থেকেই আমাকে বলেছিলেন। আমিও সামগ্রিক বিষয় পর্যবেক্ষণ করছিলাম। এখন পার্টি নিজস্ব সার্ভে থেকে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমি মনে করি, দলের একটি দৃষ্টিভঙ্গি আছে, একটি প্ল্যান আছে। দলের একজন কর্মী হিসেবে হাইকমান্ডের নির্দেশ পালন করা আমার কর্তব্য। আর দলের চেয়ারপারসনের নির্দেশ আমি কখনোই অমান্য করিনি, করবও না। তাই সিলেট-৪ আসনেই নির্বাচন করব।’

সিলেট-৪ আসনে চ্যালেঞ্জ নিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রতিটি কাজেই চ্যালেঞ্জ থাকবে। চ্যালেঞ্জ না থাকলে কাজে মনোযোগ থাকে না। আমি চ্যালেঞ্জ নিয়েই কাজ করতে ভালোবাসি। চ্যালেঞ্জ থেকে বেরিয়ে আসা আরেকটি চ্যালেঞ্জ।’

সিলেট নগরীর সমর্থকদের বিষয়ে সাবেক এ মেয়র বলেন, ‘নগরবাসী আমাকে ভালোবাসে। তারা আমাকে অনেক দিয়েছে। নগরবাসী আমার প্রাণ। আমি দল করি, আমি যেখানেই থাকি না কেন, সিলেট নগরীর উন্নয়নে আমি বদ্ধপরিকর। যদি আমি পার্লামেন্টে যাই, সিলেট ডিভিশনের প্রতিটি সমস্যা, সম্ভাবনা নিয়ে সংসদে কথা বলব।’

যারা মনোনয়ন চেয়েও পাননি, তাদের উদ্দেশে আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘যারা মনোনয়ন চেয়েছেন, সবাই যোগ্য। আমরা সবাই বিএনপির রাজনীতি করি। আজ আমাকে দেওয়া হয়েছে। কাল যদি বলা হয়, আমি বাদ, অন্যজন, তা আমি মেনে নেব। দল করলে দলের হাইকমান্ডের নির্দেশ মানতে হবে। আমরা বিএনপি করি। আমাদের সবার একটিই লক্ষ্য, আগামী নির্বাচনে ধানের শীষের বিজয়।’ 

সাবেক সিটি মেয়র আরিফ আরও বলেন, ‘দল আর জনগণ আমার সব। দল আমাকে কর্মী হিসেবে কাজ করার সুযোগ দিয়েছে। আর জনগণ আমাকে সমর্থন করে মূল্যায়ন করেছে।’

এদিকে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সিলেট-৪ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেতে দলটির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছিলেন। তিনি এলাকায় একটি শক্ত অবস্থানও সৃষ্টি করেছিলেন। এ ছাড়া এ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে ছিলেন গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হাকিম চৌধুরী, জেলা বিএনপির উপদেষ্টা হেলাল উদ্দিন আহমদ, সাবেক সংসদ সদস্য দিলদার হোসেন সেলিমের স্ত্রী জেবুন্নাহার সেলিম, মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম, কেন্দ্রীয় বিএনপির সাবেক সহস্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক সামসুজ্জামান জামান।

গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ২৫টি ইউনিয়ন নিয়ে সিলেট-৪ আসন গঠিত। প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর বৃহত্তম পাথর কোয়ারি ভোলাগঞ্জ, জাফলং, বিছনাকান্দি ও শ্রীপুর এই আসনে রয়েছে। দেশের অন্যতম স্থলবন্দর তামাবিল এই আসনে অবস্থিত। তাই সব রাজনৈতিক দলের কাছেই আসনটির গুরুত্ব বেশি। জুলাই অভ্যুত্থানের পর বদলে গেছে রাজনীতির মাঠের হালচাল। আওয়ামী লীগ ও তাদের মিত্ররা ভোটের মাঠে নেই। ফলে এবার এই আসনে জয়ের বড় সুযোগ দেখছে বিএনপি ও জামায়াত।

জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে এই আসনে প্রার্থী হয়েছেন দলটির জেলা সেক্রেটারি জয়নাল আবেদীন। এ আসনে জামায়াতের প্রার্থী জয়নালের শক্ত অবস্থান রয়েছে। তিনি এর আগে জৈন্তাপুরের উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন। তাই তাকে টেক্কা দিতে শক্ত প্রার্থী খুঁজছিল বিএনপি। এ কারণে নগর থেকে উড়িয়ে এই সীমান্ত অঞ্চলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে আরিফুল হক চৌধুরীকে— এমনটাই মনে করছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা।

Read Entire Article