সুদানের মাটিতে গণহত্যার চিহ্ন, আকাশ থেকে দেখা যায় রক্তের দাগ। স্যাটেলাইটের ছবি, ভিডিও ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্যে এমন নির্মম হত্যাযজ্ঞের প্রমাণ মিলেছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যানিটারিয়ান রিসার্চ ল্যাব (এইচআরএল)।
ভিত্তিতে বিশ্লেষকেরা বলছেন, সুদানের দারফুর অঞ্চলে পরিকল্পিতভাবে গণহত্যা চালাচ্ছে প্যারামিলিটারি বাহিনী । সাম্প্রতিক চিত্রে এমন অনেক জায়গায় রক্ত ও মরদেহের উপস্থিতি ধরা পড়েছে, যা ‘মহাকাশ থেকেও দৃশ্যমান’।
এইচআরএল জানিয়েছে, তারা সুদানের দারফুর অঞ্চলে এমন বহু জায়গা শনাক্ত করেছে, যেখানে মাটির রং লালচে হয়ে গেছে, যা রক্ত ও মরদেহের উপস্থিতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এসব স্থান দেখা গেছে হাসপাতাল, আবাসিক এলাকা, শহরের উপকণ্ঠ এবং সুদানের সরকারি সেনাবাহিনী (এসএএফ)-এর ঘাঁটির আশপাশে।
আরও পড়ুন>>
সুদানে ‘গণহত্যা’: ৩ দিনে আরএসএফের হাতে নিহত দেড় হাজার মানুষ
সুদানে গণহত্যার অভিযোগে আরএসএফের কয়েক সদস্য গ্রেফতার
বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক সংকটে সুদান
এইচআরএলের মানবাধিকার গবেষক ন্যাথানিয়েল রেমন্ড এবিসি নিউজকে বলেন, র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) শহরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার মাত্র ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আমরা দেহের মতো হাজার হাজার বস্তু দেখতে পাই, যেগুলোর দৈর্ঘ্য, আকৃতি ও বর্ণ মিলে গেছে মাটিতে পড়ে থাকা মরদেহের সঙ্গে।
রেমন্ডের কথায়, দারজা উলা নামে এক এলাকায় আরএসএফ বাহিনী বাড়ি বাড়ি গিয়ে পুরুষদের আলাদা করে হত্যা করেছে। আমরা এমন দৃশ্য দেখেছি, যেখানে প্রথম দিন আটক ব্যক্তিদের সারি দেখা গেছে, আর পরদিন একই স্থানে রক্তমাখা মরদেহের স্তূপ।
এইচআরএল বলছে, আল-ফাশের শহরের বিভিন্ন জায়গায়, বিশেষ করে হাসপাতাল ও সামরিক স্থাপনার কাছে অন্তত কয়েক ডজন এমন ‘ক্লাস্টার’ দেখা গেছে, যেখানে রক্তের দাগসহ মরদেহ ছড়িয়ে আছে।
স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেছে, আরএসএফ ঘাঁটির আশপাশের সব যানবাহন একসঙ্গে স্থান ত্যাগ করেছে। বিশ্লেষকদের মতে, এটি একটি ‘সমঝোতার’ ইঙ্গিত দেয়, যেখানে সরকারি বাহিনী পালিয়ে গেলেও সাধারণ মানুষকে মৃত্যুর মুখে ফেলে রাখা হয়েছে।
জাতিসংঘ আল-ফাশেরকে ‘দুঃসহ কষ্টের কেন্দ্রবিন্দু’ বলে উল্লেখ করেছে। শহরটি গত ১৮ মাস ধরে অবরুদ্ধ ছিল। আর এখন আরএসএফ বাহিনী পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ায় পালানোর সুযোগ আর নেই।
এ বছরের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর ঘোষণা করেছিল, আরএসএফ বাহিনী দারফুরে গণহত্যা চালিয়েছে। ইয়েলের গবেষক রেমন্ড বলেন, দুই দশক আগে শুরু হওয়া দারফুর গণহত্যার চূড়ান্ত পর্ব আমরা এখন প্রত্যক্ষ করছি।
তিনি সতর্ক করে বলেন, এখনও হত্যাযজ্ঞের গতি শীর্ষে পৌঁছায়নি। যারা পালাতে পারেনি—বিশেষ করে নারী ও শিশু—তারাই এখন পরবর্তী লক্ষ্য।
সূত্র: এবিসি নিউজ
কেএএ/

22 hours ago
6









English (US) ·