হঠাৎ যেসব কারণে গাড়ি স্টার্ট নিতে সমস্যা হয়

3 hours ago 3

গাড়ি একেবারে ঠিকঠাক চললেও কোনো একদিন হঠাৎ স্টার্ট না নেওয়ার ঘটনা বেশ বিরক্তিকর এবং অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করে। সাধারণত স্টার্টিং সমস্যার পেছনে কিছু নির্দিষ্ট কারণ থাকে, যেগুলো আগে থেকে জানা থাকলে এমন বিপাকে পড়তে হয় না।

আসুন স্টার্টিং সমস্যার সবচেয়ে সাধারণ কারণগুলো জেনে নেওয়া যাক-

১. ব্যাটারি দুর্বল বা ডেড
গাড়ি স্টার্ট না নেওয়ার সবচেয়ে বেশি দেখা যায় ব্যাটারি সমস্যায়। ব্যাটারি দুর্বল বা ডেড হয়ে গেলে স্টার্টার মোটর ঘুরলেও প্রয়োজনীয় পাওয়ার পায় না, ফলে ইঞ্জিন চালু হয় না। অনেক সময় চাবি ঘুরালে শুধু ‘টিক-টিক’ শব্দ হয় বা হেডলাইট কম আলো দেয়। ড্যাশবোর্ড লাইটও ঠিকভাবে জ্বলে না। এমন হলে জাম্প স্টার্ট চেষ্টা করা যেতে পারে, আর ব্যাটারি পুরোনো হলে পরিবর্তনই একমাত্র সমাধান।

২. স্টার্টার মোটরের সমস্যা
ব্যাটারি ঠিক থাকলেও স্টার্টার মোটরের ত্রুটির কারণে গাড়ি স্টার্ট নাও নিতে পারে। মোটরের ভেতরের সোলেনয়েড বা গিয়ার আটকে গেলে ইঞ্জিন ঘোরে না। সাধারণত চাবি ঘোরানোর সময় ‘টিক-টিক’ বা ভারী শব্দ শোনা যায়, কিন্তু ইঞ্জিন চালু হয় না। অনেক সময় মোটর কখনো কাজ করে, কখনো করে না-এটাই এর প্রধান লক্ষণ।

৩. ফুয়েল পাম্প বা ফুয়েল সিস্টেমে ত্রুটি
ইঞ্জিনে জ্বালানি না পৌঁছালে কম্বাশন হবে না, অর্থাৎ ইঞ্জিন চালু হবে না। ফুয়েল পাম্প দুর্বল হয়ে গেলে বা ফুয়েল ফিল্টার ব্লক হলে জ্বালানি সঠিকভাবে পিস্টনে পৌঁছে না। আবার ট্যাঙ্কে ফুয়েল খুব কম থাকলেও একই সমস্যা হয়। এ ক্ষেত্রে স্টার্ট নেওয়ার পর ইঞ্জিন আবার বন্ধ হয়ে যায় বা অ্যাক্সিলারেটর চাপলেও শক্তি পাওয়া যায় না।

৪. স্পার্ক প্লাগ বা ইগনিশন সিস্টেমের সমস্যা
বিশেষ করে পেট্রোল চালিত গাড়িতে স্পার্ক প্লাগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। প্লাগ নোংরা বা পোড়া হলে সঠিক স্পার্ক তৈরি হয় না, ফলে ইঞ্জিন স্টার্ট নিতে চায় না। একইভাবে ইগনিশন কয়েল দুর্বল হলে বারবার ক্র্যাঙ্ক হয় কিন্তু গাড়ি স্টার্ট হয় না। কখনো স্টার্ট নিলেও ইঞ্জিন কাঁপতে থাকে বা মসৃণভাবে চলে না।

৫. ইমোবিলাইজার বা কী সেন্সর কাজ না করা
আধুনিক গাড়িতে নিরাপত্তার অংশ হিসেবে ইমোবিলাইজার ও কী সেন্সর ব্যবহৃত হয়। কী ঠিকমতো শনাক্ত না হলে গাড়ি স্টার্ট নিতে দেয় না। ড্যাশবোর্ডে কী-শেপ লাইট বা সিকিউরিটি সিম্বল জ্বলে ওঠা এর সাধারণ লক্ষণ। অনেক সময় কী ব্যাটারি দুর্বল থাকলেও একই ঘটনা ঘটে।

৬. ইঞ্জিন অতিরিক্ত গরম হওয়া বা কুল্যান্ট কম থাকা
ইঞ্জিন ওভারহিট হয়ে গেলে গাড়ির সেফটি সিস্টেম অনেক সময় স্টার্ট ব্লক করে দেয়, যাতে যান্ত্রিক ক্ষতি না হয়। কুল্যান্ট কম থাকা, রেডিয়েটরের লিক বা ওয়াটার পাম্পের সমস্যা থাকলেও একই অবস্থা হতে পারে। এ ক্ষেত্রে ইঞ্জিন কিছুক্ষণ ঠান্ডা হতে দেওয়া এবং কুল্যান্ট চেক করা জরুরি।

৭. তার বা ফিউজ পুড়ে যাওয়া
অনেক সময় একটি ছোট ফিউজ পুড়ে যাওয়ার কারণেও পুরো স্টার্টিং সিস্টেম বন্ধ হয়ে যায়। লুজ কানেকশন, শর্ট সার্কিট বা ইলেকট্রিক লাইনের সমস্যা থেকেও এমন হতে পারে। এই ক্ষেত্রে ড্যাশবোর্ড বা অন্যান্য ইলেকট্রনিক অংশ কাজ করলেও গাড়ি স্টার্ট নেয় না।

৮. অটোমেটিক গাড়িতে গিয়ার সঠিক অবস্থায় না থাকা
অনেকেই তাড়াহুড়ায় গিয়ার ‘P’ বা ‘N’ না রেখে গাড়ি বন্ধ করেন। ফলে পরেরবার স্টার্ট দেওয়ার সময় গাড়ি সাড়া দেয় না। ব্রেক সুইচ কাজ না করলেও একই সমস্যা দেখা যায়।

আরও পড়ুন
পুরোনো গাড়ি কিনে জিততে চাইলে খেয়াল রাখুন ৩ বিষয়
কতদিন পর পর গাড়ি পরিষ্কার করানো ভালো

কেএসকে/জেআইএম

Read Entire Article