জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ৮ দলের কর্মসূচি নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন। বুধবার (১২ নভেম্বর) রাতে তিনি এ পোস্ট দেন।
পোস্টের শুরুতে নাসীরুদ্দীন বলেন, ‘এনসিপি জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি তৈরির মাধ্যমে বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে আসছে ঐকমত্য কমিশনের আলোচনার সময় থেকেই। তবে সরকার যখন সনদ বাস্তবায়নের রূপরেখা না দিয়ে স্বাক্ষর অনুষ্ঠান আয়োজন করতে যাচ্ছিল, তখন এনসিপি জানায় যে সনদ বাস্তবায়নে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট রূপরেখা আসলেই স্বাক্ষর করবে।’
‘এমতাবস্থায় ঐকমত্য কমিশন যখন বাস্তবায়নের রূপরেখা প্রস্তাব করেছে এবং সনদ বাস্তবায়নের মুখ দেখতে যাচ্ছিল তখন একটি দল এ প্রক্রিয়া ভণ্ডুল করতে উঠে পড়ে লাগে। ওনাদের স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন “জুলাই সনদ দেশের জনগণের প্রয়োজন নেই।”
‘অপরদিকে অন্য একটি দল জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আমাদের দাবি সাপোর্ট করলেও তারা কিছু দাবি জুড়ে দেয় যা রাজনীতির মাঠ ঘোলাটে করছে। যেমন নিম্ন কক্ষে পিআর এবং নভেম্বরেই গণভোট দেওয়ার দাবিতে রাজপথে অনড় অবস্থান।’
‘এনসিপি সংস্কারের বিষয়ে সবসময় দায়িত্বশীল আচরণ করছে এবং দলের স্বার্থের চেয়ে দেশের স্বার্থ ও জনগণের চাওয়াকে গুরুত্ব দিয়ে আসছে। আমরা বলেছি, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোট লাগবে। গণভোট নির্বাচনের আগে নাকি নির্বাচনের দিন হবে সেটা মুখ্য নয়। আর পিআর প্রশ্নে আমরা বলেছি, নিম্ন কক্ষে নয়, শুধু উচ্চ কক্ষে পিআর প্রয়োজন। কারণ নিম্ন কক্ষে পিআর দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে। আর অন্যদিকে উচ্চ কক্ষে পিআর একচেটিয়া সংবিধান সংশোধনের সুযোগ বন্ধ করে দেয়।’
‘আমরা আরও বলেছি যে, গণভোটের প্রশ্নে যেন নোট অব ডিসেন্ট না থাকে, কারণ তা থাকলে রাজনৈতিক দল গণভোটে দেওয়া রায়কে অগ্রাহ্য করার সুযোগ পাবে।’
‘আজ ৮টি দল জুলাই সনদের দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে পল্টনে সমাবেশ শুরু করেছে, আমরা তাদের সঙ্গে সংহতি জানাতে বলেছি “তাদের দাবি ন্যায্য ও যৌক্তিক। আমরা তাদের সঙ্গে আছি। তারা যেন এটা বাস্তবায়ন করে ঘরে ফেরে।”
‘এই সংহতি কোনো নির্দিষ্ট দলের রাজনৈতিক অবস্থানের প্রতি সমর্থন নয়। বরং জুলাই সনদের বাস্তবায়নের প্রতি আমাদের ধারাবাহিক অঙ্গীকারেরই অংশ। আমরা কোনোভাবেই চাই না- সংস্কারের যে ঐতিহাসিক সুযোগ এসেছে তা ব্যর্থ হোক।’
‘সমাবেশকারী দলগুলো পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করেছে। এর মধ্যে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি, উচ্চকক্ষে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতি চালু, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা, পূর্ববর্তী সরকারের ‘জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার’ দৃশ্যমান করা, এবং ‘স্বৈরাচারের দোসর’ জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণার মতো দাবিগুলো ন্যায়সঙ্গত ও প্রয়োজনীয় বলে আমরা মনে করি। তবে নভেম্বরের মধ্যেই গণভোট আয়োজন এবং নিম্ন কক্ষে পিআর পদ্ধতি প্রবর্তনের প্রস্তাব দুটি আমরা সমর্থন করি না।’
পোস্টের শেষে তিনি বলেন, ‘যারা বলছেন যে গণভোটের চেয়ে আলুর ন্যায্যমূল্য গুরুত্বপূর্ণ, তাদেরকে আমরা বলব- যে জনগণকে ছোট করে কথা বলবেন না। জনগণের কাছে জীবিকা ও গণতন্ত্র একে অপরের বিকল্প নয়, বরং পরিপূরক। গণভোটের ফলাফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা এমন একটি রাষ্ট্র কাঠামো গড়ে তুলব যেখানে আলুর ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত হবে।’

2 hours ago
6









English (US) ·