অজু করার সময় মারাত্মক এই ৭ ভুল হচ্ছে না তো? জেনে নিন এখনই

4 hours ago 3

ইসলামে অজু শুধু নামাজের প্রস্তুতি নয়, এটা আসলে এক বিরাট নিয়ামত। হাদিসে এসেছে, অজুর পানির ফোঁটা ঝরার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের ছোট ছোট গোনাহও ঝরে যায় (মুসলিম : ২৪৪)। তাই অজুকে বলা হয় পবিত্রতার চাবি। আবার হাদিসে আছে, অজু ছাড়া নামাজ হয় না, আর নামাজ হচ্ছে জান্নাতের চাবি। অর্থাৎ, অজু এমন এক ইবাদত যার মাধ্যমে মানুষ আল্লাহর কাছে দাঁড়ানোর যোগ্য হয়ে যায়।

আমরা প্রতিদিন কতবার অজু করি— নামাজের সময়, কোরআন তেলাওয়াতের আগে কিংবা পবিত্র হওয়ার জন্য। আমাদের অবহেলা কিংবা অজান্তেই অজুতে এমন কিছু ভুল হয়ে থাকে, যে কারণে আমাদের অজু বিশুদ্ধ হয় না। আর অজু যদি বিশুদ্ধ না হয়, তবে অনেকক্ষেত্রে আমলগুলোও আদায় হয় না। এ প্রসঙ্গে সতর্কতার জন্য প্রখ্যাত ইসলামি স্কলার শায়খ আহমাদুল্লাহ তার ভেরিফায়েড ইউটিউব চ্যানেলে অজুর সাধারণ সাতটি ভুল তুলে ধরেছেন, যা প্রায় সব মানুষেরই হয়ে থাকে। চলুন জেনে নিই সেই ভুলগুলো কী কী—

১. বিসমিল্লাহ পাঠ না করা

অজুর শুরুতে ‘বিসমিল্লাহ’ বলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আমাদের অনেকে অজুখানায় গল্প গল্প করতে অজু শুরু করেন, যে কারণে তারা বিসমিল্লাহ পাঠ ভুলে যান। অথচ অনেক আলেমের মতে অজুর শুরুতে বিসমিল্লাহ পাঠ না করলে অজু হবে না। যদিও অধিকাংশ উলামায়ে কেরাম ভিন্নমত পেশ করেছেন। তারা বলেন, অজুর শুরুতে বিসমিল্লাহ পাঠ করা সুন্নত। আপনি যদি বিসমিল্লাহ বলে অজু শুরু করেন, তবে অজুর মধ্যে পূর্ণতা আসবে।

২. মেসওয়াক না করা

নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আমার উম্মতের জন্য কষ্টকর না হলে, আমি প্রতিটি অজুর সময় মেসওয়াক করা ফরজ করে দিতাম।’ (সহিহ বুখারি) 

এটি হাদিস থেকে বোঝা যায়, অজুর সময় মেসওয়াক করা নবীজির (সা.) কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কাজেই আমাদের সবার উচিত অজুর শুরুতে মিসওয়াক করা। 

৩. ভুলভাবে কুলি করা

অজুর সময় সঠিকভাবে কুলি করা জরুরি। অনেকেই মুখে পানি নিয়ে সরাসরি ফেলে দেন, কিন্তু এটি সঠিক পদ্ধতি নয়। হাদিসে বলা হয়েছে, পানিকে মুখে নিয়ে কিছুক্ষণ নাড়িয়ে কুলকুচি করা উচিত। 

৪. নাকে পানি দেওয়ার ভুল পদ্ধতি

হাদিসে এসেছে, অজুর সময় নাকে পানি টেনে নেওয়া ও পরিষ্কার করা আবশ্যক। অনেকে শুধু পানি ছিটিয়ে দেন, যা যথেষ্ট নয়। এতে নাক পরিপূর্ণভাবে পরিষ্কার হয় না। তাই নাকে পানি নিয়ে হালকা টান দিতে হবে। যদি কেউ সেটা করতে না পারেন, তবে নাককে পানির মধ্যে ১-২ সেকেন্ড চুবিয়ে রাখবেন। এতে নাকের মধ্যে পানি পৌঁছে যাবে।

৫. নাক ঝাড়া

অজু করার সময় নাকে পানি টানার মতোই গুরুত্বপূর্ণ আরেকটি আমল হলো নাক ঝাড়া। আমরা বেশিভাগই অবহেলা ও তাড়াহুড়ো করে অজু করার সময় নাকে পানি দিয়ে শেষ করে নিই। নাক ঝাড়তে একদম ভুলে যাই। অথচ বিশুদ্ধ অজুর জন্য এটা গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা।

৬. আঙুল খিলাল না করা

অজুর সময় হাত ও পায়ের আঙুল খেলাল করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আমাদের অনেকেই সেটা করেন না। যে কারণে তাদের আঙুলের ফাঁকগুলোতে পানি পৌঁছায় না। এতে অজু বিশুদ্ধ হয় না।   নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘অজুর সময় হাত ও পায়ের আঙুলগুলো ভালোভাবে ধুয়ে নাও।’এজন্য এক হাতের আঙ্গুল দিয়ে অন্য হাতের ও পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে পানি পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতে হবে।

৭. শরীরের কোনো অংশ শুকনো থাকা

অজুতে আরেকটি বড় ভুল হলো কোনো অংশ শুকনো থাকা।  অনেক সময় অনেকের কানের লতি, হাতের আংটি পরা অংশ, কপালের কিছু অংশ শুকনো থেকে যায়। এতে তাদের অজু হয় না। এক ব্যক্তি অজু করে আসার পর নবীজি (সা.) দেখলেন তার কোনো অংশ শুকনো রয়েছে, তখন তিনি (সা.) তাকে বললেন, তোমার অজু হয়নি। তুমি আবার অজু করে আসো। কাজেই  অজুর সময় নির্ধারিত অংশের সবখানে পানি পৌঁছানো নিশ্চিত করতে হবে।

Read Entire Article