ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি গত ১১ মে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে শান্তি আলোচনার জন্য সরাসরি দেখা করার আহ্বান জানিয়েছেন। যদিও এর জন্য শর্ত দিয়েছেন যুদ্ধবিরতির, যা পুতিন এখনো মানেননি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জেলেনস্কি লিখেছেন, ‘আমি বৃহস্পতিবার তুরস্কে পুতিনের জন্য অপেক্ষা করবো। আশা করি, রাশিয়া এবার কোনো অজুহাত দাঁড় করাবে না।’ যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এটি ছিল সবচেয়ে আশাব্যঞ্জক পদক্ষেপগুলোর একটি, যদিও এর চারপাশে অনিশ্চয়তা ঘনিয়ে আছে।
আরও পড়ুন>>
- ইউক্রেনের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার প্রস্তাব পুতিনের
- জেলেনস্কিকে অবিলম্বে পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে বসতে বললেন ট্রাম্প
- যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে খনিজ চুক্তি থেকে কী পেলো ইউক্রেন?
এর আগে, গত ১০ মে কিয়েভ সফর করেন ইউরোপের চার শীর্ষ নেতা। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ইউক্রেনের একতরফা ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবকে শান্তির পথ তৈরির সর্বোত্তম সুযোগ হিসেবে উল্লেখ করেন। এর মাধ্যমে ইউক্রেন দেখাতে চায়, যুদ্ধ চালিয়ে যেতে চায় রাশিয়া। পাশাপাশি, এটি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর চাপ বাড়ানোরও কৌশল।
তবে পুতিন ১১ মে ভোরে টেলিভিশনে ভাষণ দিয়ে আলোচনার সম্ভাবনাকে জটিল করে তোলেন। তিনি সরাসরি যুদ্ধবিরতির বিষয়ে কিছু না বলেই আলোচনার প্রস্তাব দেন, যা ছিল শর্তযুক্ত ও রাশিয়ার সুবিধা অনুযায়ী সাজানো। এরপর ট্রাম্পের সামাজিক মাধ্যমে দেওয়া বক্তব্য, যেখানে তিনি এটিকে ‘সম্ভাব্য চমৎকার দিন’ বলে আখ্যা দেন, তা ইউরোপীয় নেতাদের দাবির বিপরীতে যায়। তারা বলেছিলেন, শুরু থেকেই ট্রাম্প তাদের সঙ্গে ছিলেন।
ইউক্রেনের একতরফা যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব ছিল বড় ধরনের ছাড়। এর জবাবে পুতিন ১৫ মে ইস্তাম্বুলে আলোচনা করতে চান, তবে তার পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ জানিয়ে দেন, আলোচনা হবে ২০২২ সালের বসন্তের আলোচনার ধারাবাহিকতা—যেখানে ইউক্রেনের সেনা শক্তি ব্যাপকভাবে কমিয়ে আনার প্রস্তাব ছিল। সেই আলোচনা ফের শুরু করা মানে হবে, ইউক্রেন এতগুলো জীবন অহেতুক হারিয়েছে।
ট্রাম্পের চাপের মুখে জেলেনস্কির সামনে বিকল্প কমই ছিল। ট্রাম্প সরাসরি লিখেছিলেন, ‘তৎক্ষণাৎ রাজি হও।’ তার যুক্তি ছিল, অন্তত বোঝা যাবে আদৌ কোনো চুক্তির সম্ভাবনা আছে কি না। আশাবাদী বিশ্লেষণে মনে করা হচ্ছে, ট্রাম্প আসলে পুতিনের ওপর কড়া অবস্থান নেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে প্রস্তুত করছেন।
একজন ইউক্রেনীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তা গত ১১ মে বলেছেন, ইউক্রেন ১২ মে থেকে স্থল, সমুদ্র ও আকাশপথে পূর্ণ যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে চায়। এরপর সেটি মেনে চলবে কি না, সেটাই পরীক্ষা হবে রাশিয়ার। যদিও আলোচনার আগেই যুদ্ধবিরতি হওয়া উচিত—এমনটি বলেছেন ট্রাম্পের প্রতিনিধি জেনারেল কিথ কেলগ।
সব মিলিয়ে কূটনৈতিক তৎপরতা ইঙ্গিত দেয়, পর্দার অন্তরালে গুরুতর আলোচনা চলছে। কিন্তু এখানে কেন্দ্রে আছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প—সবার ভাষা, কৌশল, এমনকি কূটনীতি তাকে ঘিরেই আবর্তিত হচ্ছে। কিন্তু পুতিনও চাল চেলে যাচ্ছেন দৃঢ় ও কঠোরভাবে।
কেএএ/

5 months ago
89









English (US) ·