উত্তর কোরিয়ায় কি আসলেই আত্মহত্যা নিষিদ্ধ?

2 weeks ago 15

উত্তর কোরিয়ায় আত্মহত্যা নিষিদ্ধ করেছেন দেশটির নেতা কিম জং উন, এমনকি আত্মহত্যার চেষ্টা করলে তার সাজা মৃত্যুদণ্ডের বিধান করেছেন তিনি- সম্প্রতি এমন দাবি করা কিছু পোস্ট ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ফলে অনেকের মনেই প্রশ্ন আসছে- উত্তর কোরিয়ায় কি আসলেই আত্মহত্যা নিষিদ্ধ?

মার্কিন বার্তা সংস্থা রেডিও ফ্রি এশিয়ার (আরএফএ) খবরে জানা যায়, ২০২৩ সালে উত্তর কোরিয়ায় আত্মহত্যার হার হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার পর সত্যিই আত্মহত্যা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিলেন কিম কিম জং উন। কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে আরএফএ জানায়, এ বিষয়ে স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে গোপন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।

আরও পড়ুন>>
কিমের মেয়ের নামে কেউ নাম রাখতে পারবে না
১১ দিন হাসতে নিষেধ উত্তর কোরিয়ায়
নারীরা সন্তান নিচ্ছেন না, কাঁদলেন কিম জং উন

তবে আত্মহত্যার চেষ্টার সাজা মৃত্যুদণ্ড কি না, সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।

উত্তর কোরিয়ায় আত্মহত্যার সঠিক সংখ্যা জানা কঠিন, কারণ দেশটি সাধারণত নিজেদের অভ্যন্তরীণ সমস্যা গোপন রাখে। তবে দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ২০২৩ সালের মে মাসে জানিয়েছিল, আগের বছরের তুলনায় উত্তর কোরিয়ায় আত্মহত্যার হার প্রায় ৪০ শতাংশ বেড়েছে।

রেডিও ফ্রি এশিয়ার তথ্যমতে, কিম জং উন আত্মহত্যাকে ‘সমাজতন্ত্রের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা’ হিসেবে অভিহিত করেন। তার নির্দেশনায় বলা হয়, স্থানীয় কর্মকর্তারা যদি তাদের এলাকায় আত্মহত্যা রোধে ব্যর্থ হন, তবে তারাও দায়ী থাকবেন।

উত্তর হামগিয়ং প্রদেশের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, ওই সময় (২০২৩ সালের জুনে) এক জরুরি বৈঠকে আত্মহত্যার সংখ্যা ও কিছু ভয়াবহ উদাহরণ তুলে ধরা হয়—যেখানে পুরো পরিবার একসঙ্গে আত্মহত্যা করেছে। উপস্থিত কর্মকর্তারা আত্মহত্যাকারীদের রেখে যাওয়া চিঠি পড়ে বিস্মিত হন। কারণ অনেক চিঠিতেই দেশটির সামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থার কঠোর সমালোচনা করা হয়েছিল।

পাশের রিয়াংগ্যাং প্রদেশের আরেক কর্মকর্তা বলেন, আমাদের সমাজে এখন ক্ষুধার চেয়েও ভয়াবহ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে আত্মহত্যা। তিনি আরও জানান, আত্মহত্যা-প্রতিরোধ নীতি জারি করা হলেও, দারিদ্র্য ও অনাহারের কারণে কার্যকর কোনো সমাধান পাওয়া যাচ্ছে না।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০১৯ সালের তথ্য অনুযায়ী, উত্তর কোরিয়ায় প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে ৮ দশমিক ২ জন আত্মহত্যা করে। আত্মহত্যার হার অনুযায়ী দেশটি বিশ্বে ৪৫তম স্থানে রয়েছে।

সূত্র: রেডিও ফ্রি এশিয়া, বিজনেস ইনসাইডার
কেএএ/

Read Entire Article