উপজেলা ঘোষণার এক দশকেও গুইমারায় গড়ে ওঠেনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ফায়ার সার্ভিস স্টেশন। খাগড়াছড়ির নবম এ উপজেলার জনগণকে স্বাস্থ্যসেবার জন্য ছুটতে হয় পাশের মাটিরাঙ্গা-মানিকছড়ি উপজেলা কিংবা চট্টগ্রামে। ১১৫ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এ উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন না থাকায় অগ্নিকাণ্ড নিয়ন্ত্রণেও তাকিয়ে থাকতে হয় অন্য উপজেলার দিকে।
এদিকে গুইমারায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপনের দাবিতে সোমবার (৩ নভেম্বর) দুপুরের দিকে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক (উপসচিব) নাজমুন আরা সুলতারা ও খাগড়াছড়ির সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ সাবেরের কাছে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দেন জেলার বাসিন্দারা। এর আগে গত ৩১ অক্টোবর একই দাবিতে মানববন্ধন করেন তারা।
স্মারকলিপি প্রদানকালে খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক এম এন আবছার, সহ-সভাপতি ক্ষেত্র মোহন রোয়াজা, গুইমারা উপজেলার সমাজসেবক ও উদ্যোক্তা মো. ইউচুপ, শিক্ষক বাবলু হোসেন, স্থানীয় প্রতিনিধি অংগ্য মগ, মাহবুব আলী, গুইমারা প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. আব্দুল আলী, দিদারুল আলম বাবুল ও জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:
মমেক হাসপাতালে পদে পদে ভোগান্তি
ঠান্ডা-জ্বরে আক্রান্ত শিশুতে ঠাসা চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতাল
গুইমারা উপজেলার সমাজসেবক ও উদ্যোক্তা মো. ইউচুপ বলেন, গুইমারা উপজেলা একটি জনবহুল, গুরুত্বপূর্ণ ও দুর্গম এলাকা। এ উপজেলার অধিকাংশ মানুষ পাহাড়ি ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাস করেন। দুঃখজনকভাবে এখানে কোনো পূর্ণাঙ্গ সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গড়ে না ওঠায় সাধারণ জনগণকে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্যও দূরবর্তী উপজেলা, জেলা সদর বা চট্টগ্রাম যেতে হয়। যার ফলে অনেক রোগী সময়মতো চিকিৎসা না পেয়ে মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়েন, অনেকে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করছেন।
তিনি আরও বলেন, এছাড়া প্রায়ই এখানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলেও ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। অন্যদিকে গুইমারায় থাকা ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে জনবল ও ডাক্তার কোনটিই নেই। এ উপজেলার ৫৫ হাজার জনগণ স্থানীয় ওষুধ ব্যবসায়ীর কাছে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাই দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স স্থাপনের দাবি উপজেলাবাসীর।
আরও পড়ুন:
‘ডাক্তার হঠাৎ এলেও দালাল আসে নিয়মিত’
চার ডাক্তার দিয়ে চলছে ২ লাখ মানুষের হাসপাতাল!
এদিকে গুইমারা উপজেলায় সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বাজার, আবাসিক এলাকা ও বিভিন্ন দপ্তরের পরিধি ক্রমাগতভাবে বাড়লেও উপজেলায় নেই অগ্নিনির্বাপণের জন্য ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন। ফলে গুইমারা উপজেলায় কোনো দুর্ঘটনা বা অগ্নিকাণ্ড ঘটলে অন্য উপজেলা বা জেলা সদরের ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন থেকে সহায়তা নিতে হয়। বড় ধরনের কয়েকটি অগ্নিকাণ্ডে সর্বশান্ত হয়েছেন গুইমারা উপজেলার অসংখ্য মানুষ।
এর আগে ২০১৪ সালের ৬ জুন প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির (নিকার) ১০৯তম সভায় গুইমারাকে খাগড়াছড়ির নবম উপজেলা হিসেবে অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০১৫ সালের ৩০ নভেম্বরে গুইমারা সদর ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সে উপজেলা পরিষদের প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু করে।
এমএন/এএসএম

17 hours ago
5









English (US) ·