উম্মে মা’বাদের তাঁবুতে মহানবী (সা.)

2 hours ago 5

মক্কা থেকে মদিনায় হিজরতের পথে একদিন দুপুর বেলা মহানবী (সা.) ও তার সঙ্গীরা যাত্রাবিরতি করেন খোজাআ গোত্রের অতিথিপরায়ণ নারী উম্মে মা’বাদের তাঁবুর পাশে। মহানবী (সা.) উম্মে মা’বাদকে জিজ্ঞাসা করেন, তার কাছে খাওয়ার মতো কিছু আছে কি না?

উম্মে মা’বাদ সাধারণত তাঁবুর বাইরে বসে থাকতেন মেহমানের অপেক্ষায়। মেহমান পেলে তাকে কিছু না খাইয়ে ছাড়তেন না। কিন্তু এইদিন তার বাড়িতে খাওয়ার মত কিছুই ছিল না। ওই সময়টা ছিল ব্যাপক খাদ্যসংকটের সময়। উম্মে মা’বাদের বকরিগুলো তার স্বামী মাঠে নিয়ে গিয়েছিলেন। শুধু একটা কৃশকায় দুর্বল বকরি উম্মে মা’বাদের তাঁবুর এক কোণে বাঁধা ছিল যে বকরিটি মাঠে যাওয়ার মত শক্তিও হারিয়ে ফেলেছিল।

উম্মে মা’বাদের কাছে কোনো খাবার নেই শুনে মহানবী (সা.) তার বকরিটি দোহন করার অনুমতি চান। উম্মে মা‘বাদ বলেন, ওর ওলানে দুধ থাকলে তো আমিই আপনাদের দোহন করে দিতাম। ওর ওলানে কিছু নেই।

কিন্তু মহানবী (সা.) ওই কৃশকায় দুর্বল বকরিটির বাঁটে ‘বিসমিল্লাহ’ বলে হাত রাখেন ও বরকতের দোয়া করেন। সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহর ইচ্ছায় বকরিটির ওলান দুধে পূর্ণ হয়ে যায়। তারপর তিনি দুধ দোহন করতে থাকেন। প্রথমে মহানবী (সা.) উম্মে মা‘বাদকে দুধ পান করান। তারপর নিজের সঙ্গীদের এবং সবশেষে তিনি নিজে পান করেন। তারপর এক পাত্র দুধ উম্মে মা‘বাদের কাছে রেখে তারা পুনরায় যাত্রা করেন।

উম্মে মা’বাদ পুরো ঘটনা দেখে অত্যন্ত বিস্মিত হন। তার যে বকরির মাঠে যাওয়ার শক্তিও ছিল না, ওই বকরি এত ‍দুধ দিলো যে কয়েকজন তৃপ্ত হয়ে খাওয়ার পরও দুধ রয়ে গেল! তিনি মহানবীকে (সা.) চিনতেন না। তিনি বুঝতেও পারেননি তার তাঁবুতে কে অতিথি হয়েছিলেন। কিছুক্ষণ পর উম্মে মা’বাদের স্বামী বাড়ীতে ফিরে সব ঘটনা শুনে বলেন, আল্লাহর কসম! ইনিই কোরায়শের সেই আলোচিত ব্যক্তি। আমারও ইচ্ছা আছে তার ওপর ইমান আনার, তার অনুসরণ করার, সুযোগ পেলে আমি তার দলভুক্ত হবো।

এই ঘটনার প্রায় আট বছর পর উম্মে মা’বাদ ও তার স্বামী ইসলাম গ্রহণ করে সাহাবায়ে কেরামের সম্মানিত কাফেলায় শামিল হন।

ওএফএফ

Read Entire Article