কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকেও ১০ বছর ধরে বেতন তুলছেন মাদরাসা শিক্ষক

6 hours ago 5

বগুড়ার ধুনটের ইসলামপুর দাখিল মাদরাসার শরীর চর্চা শিক্ষক সাইদুর রহমান প্রায় দশ বছর ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত। তবে তিনি প্রতি মাসে নিয়মিতই তুলছেন বেতন-ভাতা।

অভিযোগ রয়েছে, তিনি মাসে মাত্র একদিন কর্মস্থলে এসে হাজিরা খাতায় পুরো মাসের সই করে ইএফটির (ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার) মাধ্যমে ব্যাংক থেকে বেতনের টাকা তুলছেন।

মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) সকাল ১১টায় সরেজমিন ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক সাইদুর রহমানকে উপস্থিত পাওয়া যায়নি। এ সময় শিক্ষকদের হাজিরা খাতা পর্যবেক্ষণে তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের প্রমাণ মিলেছে।

হাজিরা খাতা অনুযায়ী, তিনি অক্টোবর মাসে ১০ দিন অনুপস্থিত ছিলেন এবং ৪ নভেম্বর পর্যন্ত একদিনও কর্মস্থলে উপস্থিত হননি। তবে এ বিষয়ে ওই মাদরাসার সুপার লিখিতভাবে বারবার সতর্ক করলেও ওই শিক্ষক কর্মস্থলে উপস্থিত হচ্ছেন না। সর্বশেষ ৩০ অক্টোবর তাকে সতর্ককরণ নোটিশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি।

মাদাসারা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার এলাঙ্গী ইউনিয়নের রাঙামাটি গ্রামের আবু বক্কারের ছেলে সাইদুর রহমান ২০১৪ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ইসলামপুর (ঈশ্বরঘাট) দাখিল মাদরাসায় শরীর চর্চা শিক্ষক পদে যোগদান করেন। তিনি স্থানীয় এক প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা নিকট আত্মীয়। এ কারণে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকেও প্রতিমাসে নিয়মিতভাবে বেতন-ভাতা উত্তোলন করেন। কিন্ত অদৃশ্য কারণে মাদরাসার সুপার তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। তবে ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর প্রেক্ষাপটের পরিবর্তন হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন ওই শিক্ষক। মাদরাসার সুপার বারবার তাকে সতর্ক নোটিশ দিচ্ছেন।

এ বিষয়ে শরীর চর্চা শিক্ষক সাইদুর রহমান বলেন, পারিবারিক ও আর্থিক সমস্যার কারণে কর্মস্থলে উপস্থিত হতে পারছি না। তবে অল্পদিনের মধ্যেই সমস্যা-সংকট কাটিয়ে নিয়মিতভাবে দায়িত্ব পালন করবো। এখানে আমার রুজি-রুটির ব্যাপার রয়েছে, তাই এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ।

অভিযোগের বিষয়ে মাদরাসার সুপার ছদরুল আনাম বলেন, মানবিক দিক বিবেচনা করে তার বিরুদ্ধে আগে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বর্তমানে মাদরাসায় উপস্থিত হওয়ার জন্য তাকে বারবার সতর্ক নোটিশ করেও কোনো কাজ হচ্ছে না। এ বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানানো হবে।

ধুনট উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) প্রীতিলতা বর্মন বলেন, এ বিষয়টি খতিয়ে দেখে বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এল.বি/কেএইচকে/এমএস

Read Entire Article