ক্যানসার স্ক্রিনিং বাধ্যতামূলক করার দাবি বিশেষজ্ঞদের

9 hours ago 6
রাজধানীতে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক ক্যানসার কংগ্রেসে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, দেশে ক্যানসার রোগ দ্রুত বাড়ছে। সময়মতো পরীক্ষা ও সঠিক চিকিৎসা না পেলে আগামী দিনে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে। তাই কিছু ক্ষেত্রে ক্যানসার স্ক্রিনিং বাধ্যতামূলক করা এবং চিকিৎসা ব্যবস্থায় আধুনিক প্রযুক্তি যুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন তারা। ৩১ অক্টোবর ২০২৫, শুক্রবার রাজধানীর রেডিসন ব্লু হোটেলে অনুষ্ঠিত দুই দিনব্যাপী বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল ক্যানসার কংগ্রেসের সমাপনী দিনে এসব কথা বলেন বক্তারা। অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে অনকোলজি ক্লাব বাংলাদেশ। দ্বিতীয় দিনের এক মতবিনিময় সভায় ক্যানসার বিশেষজ্ঞ ডা. এএফএম কামাল উদ্দিন একটি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তার গবেষণায় উঠে আসে বিশ্বের ক্যানসার পরিস্থিতির পাশাপাশি বাংলাদেশের ক্যানসার চিকিৎসায় নানা সীমাবদ্ধতার চিত্র। তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘এখনই ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে ক্যানসার ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।’ ডা. কামাল উদ্দিন জানান, বর্তমানে দেশে ক্যানসার রোগীর তুলনায় রেডিওথেরাপি মেশিনের সংখ্যা অত্যন্ত কম। এক লাখ ৮৪ হাজার রোগীর চিকিৎসার জন্য দরকার কমপক্ষে ২০৯টি মেশিন, কিন্তু দেশে রয়েছে মাত্র ২৯টি। ফলে অনেক রোগী যথাযথ চিকিৎসা পান না, আর মৃত্যুর হারও বাড়ছে। তিনি চট্টগ্রাম ও সিলেটসহ বিভাগীয় শহরগুলোতে দ্রুত নতুন মেশিন স্থাপনের আহ্বান জানান। অন্যদিকে, ক্যানসার বিশেষজ্ঞ ডা. এম. সাইফুল হক বলেন, ‘ক্যানসার মোকাবিলায় সরকারের সঠিক নীতি ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা অত্যন্ত জরুরি। প্রাথমিক বিনিয়োগের চেয়ে ফল আসবে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা থেকে।’ তিনি আরও যোগ করেন, জনসচেতনতা তৈরি করাই ক্যানসার প্রতিরোধের প্রথম ধাপ। অনুষ্ঠানে আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব ডা. মোস্তফা আজিজ সুমন বলেন, ‘ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়াই একার পক্ষে সম্ভব নয়। সবাইকে একসঙ্গে এগিয়ে আসতে হবে— বিশেষ করে সাংবাদিকদের।’ অনকোলজি ক্লাব বাংলাদেশ ও ক্যানসার কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. এমএ হাই বলেন, ‘বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশে ক্যানসার রোগীর সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। এর বেশিরভাগই এখনো চিকিৎসার আওতার বাইরে।’ তিনি জানান, দক্ষ জনবল তৈরি ও আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি উন্নয়নই তাদের মূল লক্ষ্য। এ বছর কংগ্রেসে একাডেমিক পার্টনার হিসেবে অংশ নেয় ইতালির বলোনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, সিংহেলথ সিঙ্গাপুর এবং গ্লোবাল হেলথ ক্যাটালিস্ট। এছাড়াও যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের নামকরা ক্যানসার হাসপাতালের চিকিৎসক ও গবেষকরা অংশ নেন। অনুষ্ঠানে বিশ্বের ১৬টি দেশের ৩১ জন খ্যাতনামা ক্যানসার বিশেষজ্ঞসহ মোট ১,২০০ জন চিকিৎসক, গবেষক ও পেশাজীবী অংশগ্রহণ করেন।
Read Entire Article